এভিয়েশন ডেস্ক: লোকসানে জর্জরিত পাকিস্তানের রাষ্ট্রীয় পতাকাবাহী বিমান সংস্থা পিআইএ কিনতে আগ্রহ প্রকাশ করেছে ৫ সংস্থা। এগুলোর মধ্যে রয়েছে সামরিক মালিকানাধীন ফার্টিলাইজার কোম্পানি, এয়ার ব্লু এবং বিদেশি অংশীদারিত্বে আগ্রহী কয়েকটি শিল্পগোষ্ঠী।
বৃহস্পতিবার দেশটির বেসরকারিকরণ মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, দীর্ঘ ২১ বছর পর প্রথমবারের মতো পরিচালন লাভ করলেও, প্রায় এক দশকে পিআইএ-র ক্ষতির পরিমাণ ছাড়িয়েছে ২৫০ কোটি মার্কিন ডলার। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) ৭ বিলিয়ন ডলারের সহায়তা প্যাকেজের শর্ত পূরণ এবং রাষ্ট্রীয় লোকসানি প্রতিষ্ঠানের বোঝা হ্রাস করাই এই বিক্রয় উদ্যোগের মূল লক্ষ্য।
বুধবার ছিল শতভাগ শেয়ার অধিগ্রহণে আগ্রহ জানানো প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য শেষ দিন। মোট আটটি প্রতিষ্ঠান আগ্রহ প্রকাশ করে। তবে, কেবল পাঁচটি প্রতিষ্ঠান যোগ্যতা যাচাই সংক্রান্ত প্রয়োজনীয় কাগজপত্র জমা দিয়েছে।
মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, যোগ্য পাঁচ সংস্থার তালিকায় রয়েছে একটি প্রভাবশালী শিল্প কনসোর্টিয়াম—লাকি সিমেন্ট লিমিটেড, হাব পাওয়ার হোল্ডিংস, কোহাট সিমেন্ট ও মেট্রো ভেঞ্চার্স।
আরেকটি গ্রুপের নেতৃত্বে রয়েছে আরিফ হাবিব করপোরেশন, যার সঙ্গে রয়েছে ফাতিমা ফার্টিলাইজার, প্রাইভেট শিক্ষা প্রতিষ্ঠান দ্য সিটি স্কুল এবং রিয়েল এস্টেট কোম্পানি লেক সিটি হোল্ডিংস।
এছাড়া সামরিক মালিকানাধীন ফৌজি ফার্টিলাইজার কোম্পানি, বেসরকারি বিমান সংস্থা এয়ার ব্লু এবং বাহরিয়া ফাউন্ডেশন, সিরিন এয়ার ও যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক ইকুইটাস ক্যাপিটাল এলএলসি’র কনসোর্টিয়ামও কাগজপত্র জমা দিয়েছে।
সরকার জানিয়েছে, যাচাইকৃত সংস্থাগুলোর হাতে শিগগিরই যাবতীয় তথ্য দেওয়া হবে, যাতে তারা পিআইএর আর্থিক ও পরিচালন কাঠামো বিশ্লেষণ করে দেখতে পারে।
পূর্বের বিক্রির চেষ্টায় ব্লু ওয়ার্ল্ড সিটি মাত্র ৩৬ মিলিয়ন ডলার প্রস্তাব করেছিল, যা সরকার নির্ধারিত ৩০৫ মিলিয়ন ডলারের অনেক নিচে । সেই ব্যর্থতার অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা নিয়ে এবার সরকার সম্পূর্ণ শেয়ার ছাড়ার ঘোষণা দিয়েছে, বিমানে ভাড়ায় নেওয়া উড়োজাহাজের ওপর বিক্রয় কর বাতিল করা হয়েছে এবং সীমিত আইনগত সুরক্ষা দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া পিআইএ-র প্রায় ৮০ শতাংশ ঋণ রাষ্ট্রীয় কোষাগারে স্থানান্তর করা হয়েছে।
বেসরকারিকরণমন্ত্রী মোহাম্মদ আলি জানিয়েছেন, “চলতি বছরে আমরা ৮৬ বিলিয়ন রুপি সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা নিয়েছি। পিআইএ বিক্রিতে সরকার ১৫ শতাংশ অংশ পাবে, বাকি থাকবে কোম্পানির অভ্যন্তরে।”
বিডিং-এর পরবর্তী ধাপ শুরু হবে জুলাই মাসের শুরুতে। এরপর দুই থেকে আড়াই মাস চলবে যাচাই-বাছাই। চূড়ান্ত দরপত্র ও আলোচনা হবে ২০২৫ সালের শেষ প্রান্তিকে।
পিআইএ ছাড়াও সরকার রুজভেল্ট হোটেল ও কয়েকটি বিদ্যুৎ কোম্পানি বিক্রির প্রস্তুতি নিচ্ছে ২০২৬ সালের মধ্যেই। রুজভেল্ট হোটেল বিক্রির প্রাথমিক পর্যায় থেকেই ১০০ মিলিয়ন ডলার পাওয়ার আশা করা হচ্ছে।