জওয়ান পূর্ণম কুমার সাউয়ের দেশে ফেরাকে অনেকেই ভারত-পাকিস্তান সম্পর্কের ‘মৃদু উষ্ণতা’ হিসেবেও দেখছেন। বিশেষ করে যখন দুই দেশের মধ্যে একের পর এক উত্তেজনাকর পরিস্থিতি তৈরি হচ্ছে, তখন একজন সেনাসদস্যের নিরাপদ প্রত্যাবর্তন ভবিষ্যতের জন্য আশার আলো দেখাতে পারে।
বিজনেসটুডে২৪ প্রতিনিধি, কলকাতা:
২২ দিন পর অবশেষে পাকিস্তানের হেফাজত থেকে নিজ দেশে ফিরে এলেন সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) জওয়ান পূর্ণম কুমার সাউ। বুধবার সকালে পাঞ্জাবের অমৃতসরের আটারি-ওয়াঘা সীমান্ত দিয়ে তাঁকে ভারতীয় কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করে পাকিস্তান রেঞ্জার্স। ঘটনাটি শান্তিপূর্ণভাবেই সম্পন্ন হয়।
বিএসএফ এক সরকারি বিবৃতিতে জানিয়েছে, “আজ ১৪ মে ২০২৫ তারিখে সকাল ১০টা ৩০ মিনিটে বিএসএফ জওয়ান পূর্ণম কুমার সাউ-কে পাকিস্তান রেঞ্জার্স আমাদের কাছে হস্তান্তর করেছে। হস্তান্তর প্রক্রিয়া হয়েছে প্রতিষ্ঠিত প্রোটোকল মেনে ও সম্পূর্ণ শান্তিপূর্ণভাবে।”
জানা গেছে, গত ২৩ এপ্রিল পাঞ্জাব সীমান্তে টহল দেওয়ার সময় ভুল করে পাকিস্তান সীমান্তে প্রবেশ করেন পিকে সাউ। সেখানেই তাঁকে পাক রেঞ্জার্স আটক করে। এরই মধ্যে ২২ এপ্রিল জম্মু-কাশ্মীরের পহেলগামে জঙ্গি হামলার জেরে ভারত–পাকিস্তান সম্পর্কে উত্তেজনা দেখা দেয়, যা তাঁর প্রত্যাবর্তন আরও বিলম্বিত করে।
পরিবার ও বিএসএফ সূত্রে জানা যায়, পিকে সাউকে ফিরিয়ে আনার জন্য ভারতের তরফে একাধিকবার ফ্ল্যাগ মিটিং আহ্বান করা হলেও প্রথমদিকে পাকিস্তান রাজি হয়নি। তবে সাম্প্রতিক যুদ্ধবিরতির পর অবশেষে তাঁকে ফিরিয়ে দেয় পাকিস্তান।
এই দীর্ঘ অনিশ্চয়তার সময়ে পিকে সাউয়ের পরিবার গভীর উদ্বেগে দিন কাটিয়েছে। স্ত্রী রজনী সাউ তাঁর স্বামীর নিরাপদ ফেরার জন্য সরকারের বিভিন্ন স্তরে আবেদন জানান। এমনকি তিনি পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করার ইচ্ছাও প্রকাশ করেন।
পিকে সাউয়ের বয়স এখন ৪০ বছর। তাঁর ফিরে আসার খবরে পরিবারের মধ্যে স্বস্তির আবহ তৈরি হয়েছে। বিএসএফ সূত্রে জানানো হয়েছে, ফিরেই তাঁকে একটি পূর্ণাঙ্গ স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য আর্মি হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। পাকিস্তানে থাকাকালীন তার চিকিৎসা বা অবস্থান সংক্রান্ত বিস্তারিত তথ্যও সংগ্রহ করা হচ্ছে।
সম্ভাব্য কূটনৈতিক বার্তা:
এই ঘটনাকে অনেকেই ভারত-পাকিস্তান সম্পর্কের ‘মৃদু উষ্ণতা’ হিসেবেও দেখছেন। বিশেষ করে যখন দুই দেশের মধ্যে একের পর এক উত্তেজনাকর পরিস্থিতি তৈরি হচ্ছে, তখন একজন সেনাসদস্যের নিরাপদ প্রত্যাবর্তন ভবিষ্যতের জন্য আশার আলো দেখাতে পারে।










