বিজনেসটুডে২৪ প্রতিনিধি, রামগড়: খাগড়াছড়ির রামগড় সীমান্ত দিয়ে পাঁচজনকে জোরপূর্বক বাংলাদেশে ঠেলে দিয়েছে ভারতীয় সীমান্ত রক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)। পুশ ইন হওয়া এ পাঁচজনের সবাই ভারতের গুজরাট রাজ্যে অবস্থান করছিলেন এবং মুসলিম সম্প্রদায়ের সদস্য বলে জানা গেছে।
বৃহস্পতিবার ২২ মে ভোরে রামগড় পৌরসভার ফেনীরকুল চর এলাকার সীমান্ত দিয়ে এই পুশ ইন কার্যক্রম ঘটে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছে রামগড় উপজেলা প্রশাসন।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ফেনী নদী পার হয়ে সোনাইপুল বাজার সংলগ্ন যাত্রী চাউনিতে অবস্থান করছিলেন ওই পাঁচ ব্যক্তি। সন্দেহভাজন হিসেবে স্থানীয়রা তাদের আটক করে মহামুনি বিজিবি ক্যাম্পে খবর দেন। পরে বিজিবি তাদের হেফাজতে নেয়।
আটক ব্যক্তিরা হলেন: মোঃ উম্মেদ আলী (৪২), তার স্ত্রী সেলিনা বেগম (৩৫), এবং তাদের তিন কন্যা রুমি খাতুন (১৫), রুম্পা খাতুন (১২) ও সুমামিয়া খাতুন (৮)।
মোঃ উম্মেদ আলী জানান, তাদের পরিবার গুজরাটে বসবাস করত। হঠাৎ একদিন তাদেরকে বিমানে করে অন্য রাজ্যে, পরে বাসে করে ত্রিপুরায় নিয়ে যাওয়া হয়। গতরাতে হাত ও চোখ বেঁধে ভারতীয় সীমান্ত রক্ষী বাহিনী বিএসএফ সদস্যরা ফেনী নদীর পাড়ে এনে ছেড়ে দেয়। প্রাণভয়ে সীমান্ত অতিক্রম করে বাংলাদেশে প্রবেশ করেন তারা। উম্মেদ আলীর অভিযোগ, তারা পুনরায় ভারতে প্রবেশের চেষ্টা করলে বিএসএফ তাদের হত্যার হুমকি দেয়।
রামগড় উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ইসমত জাহান তুহিন জানান, “রামগড় সীমান্ত পয়েন্ট দিয়ে অনুপ্রবেশকারী পাঁচজন ভারতীয় নাগরিককে বিজিবি হেফাজতে নিয়েছে। বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় প্রশাসন, পুলিশ ও বিজিবি সমন্বয় করে কাজ করছে।”
খাগড়াছড়ি পুলিশ সুপার মোঃ আরেফিন জুয়েল জানান, আটককৃতদের পরিচয় নিশ্চিত করা হয়েছে। তারা বাংলাদেশের কুড়িগ্রাম জেলার কুড়িগ্রাম সদর থানার চর সুপার কুটি গ্রামের বাসিন্দা। স্থানীয় চেয়ারম্যান ও ইউপি সদস্যদের মাধ্যমে বিষয়টি যাচাই করে দেখা হয়েছে।
তিনি আরও জানান, আইনানুগ প্রক্রিয়া শেষে পুশ ইনকৃত এই বাংলাদেশি নাগরিকদের তাদের পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে।
এ ঘটনায় এলাকায় মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। মানবাধিকার কর্মীরা বলছেন, আন্তর্জাতিক নিয়মবিধি লঙ্ঘন করে একতরফাভাবে কোনো নাগরিককে সীমান্তে ঠেলে দেওয়া একপ্রকার মানবাধিকার লঙ্ঘনের শামিল।
📣 আপনার মতামত দিন:
নিচে কমেন্টে জানিয়ে দিন আপনার মতামত।
আপনার ভাবনা গুরুত্বপূর্ণ। শেয়ার করুন প্রতিবেদনটি।