বিজনেসটুডে২৪ ডেস্ক:
অবশেষে সাদা ধোঁয়ার পর প্রার্থনারত ক্যাথলিক বিশ্ব পেল তাদের নতুন পোপকে। যুক্তরাষ্ট্রের কার্ডিনাল রবার্ট ফ্রান্সিস প্রেভোস্ট নির্বাচিত হয়েছেন বিশ্বের ২৬৭তম পোপ হিসেবে। তিনি নাম নিয়েছেন পোপ লিও চতুর্দশ। এই প্রথমবারের মতো ক্যাথলিক চার্চের সর্বোচ্চ পদে একজন মার্কিন নাগরিক নির্বাচিত হলেন।
ভ্যাটিকানের সেন্ট পিটার্স স্কোয়ারে সমবেত হাজার হাজার মানুষের উল্লাসে ঘোষণা করেন ফরাসি কার্ডিনাল দোমিনিক মেমবার্তি: “হাবেমুস পাপাম”, “আমাদের পোপ হয়েছেন”। সকাল থেকেই জনতার অপেক্ষার অবসান হয় স্থানীয় সময় বিকেল সাড়ে চারটায় যখন সিসটিন চ্যাপেলের চিমনি থেকে বের হয় সাদা ধোঁয়া। তার এক ঘণ্টা পরেই জনসম্মুখে আসেন নবনির্বাচিত পোপ লিও।

সাদা পোষাকে, লাল আঁচলে, স্বর্ণালংকারে সজ্জিত লিও চতুর্দশ হাতজোড় করে জনতাকে অভিবাদন জানান। ইতালীয় ভাষায় বলেন, “সব মানুষের জন্য, বিশ্বের প্রতিটি প্রান্তে, শান্তি বর্ষিত হোক।” এরপর স্মরণ করেন সদ্যপ্রয়াত পোপ ফ্রান্সিসকে এবং বলেন, “সংলাপের মাধ্যমে আমরা সেতু গড়ি ধন্যবাদ পোপ ফ্রান্সিস।” এরপর স্প্যানিশ ভাষায় কৃতজ্ঞতা জানান পেরুর তার সাবেক ধর্মপ্রদেশের প্রতি, যেখানে তিনি কয়েক দশক ধরে দায়িত্ব পালন করেছেন।
পোপ লিও চতুর্দশের বয়স ৬৯ বছর। যুক্তরাষ্ট্রের শিকাগোতে জন্ম নেওয়া এই যাজক বহু বছর পেরুর চিমবোটে ধর্মীয় কাজ করেছেন, পরে রোমে ভ্যাটিকান প্রশাসনে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে ছিলেন। তাঁর নির্বাচন দ্রুততার সঙ্গে সম্পন্ন হয়, যা বিশ্লেষকরা মনে করছেন কার্ডিনালদের মধ্যে ছিল বিস্তৃত ঐকমত্য।
সিসটিন চ্যাপেলে অনুষ্ঠিত পোপ নির্বাচনের প্রথাগত গোপন ভোটাভুটিতে দ্বিতীয় দিনের তৃতীয় ভোটেই প্রেভোস্ট দুই-তৃতীয়াংশ ভোটের প্রয়োজনীয় সমর্থন অর্জন করেন। এর মাধ্যমে একটি যুগের সূচনা হলো। পোপ ফ্রান্সিসের উদারনৈতিক ও অন্তর্ভুক্তিমূলক ধারাকে অনেকেই ধরে রাখার ইঙ্গিত দেখছেন লিওর নির্বাচনে।
এদিন পোপের প্রথম ‘উরবি এট অরবি’ “রোম ও বিশ্বের প্রতি” আশীর্বাদ ঘোষণার সময় জনতার হাতেই ছিল বিশ্বের নানা দেশের পতাকা, যার মধ্যে ছিল আমেরিকারটিও। সেন্ট পিটার্স স্কোয়ারে প্রায় এক লক্ষ মানুষ সেই মুহূর্তের সাক্ষী ছিলেন।
বিশ্বের ১৪০ কোটির বেশি ক্যাথলিক খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের নেতৃত্বে এখন একজন মার্কিন নাগরিক। ইতিহাসে দ্বিতীয়বার, পোপ হচ্ছেন ‘নিউ ওয়ার্ল্ড’ থেকে, প্রথম ছিলেন আর্জেন্টিনার পোপ ফ্রান্সিস।
প্রবীণ পোপ লিও চতুর্দশের সামনে রয়েছে চার্চের আধুনিক চ্যালেঞ্জ তরুণদের দূরত্ব, লিঙ্গ সংবেদনশীলতা, সংঘাতময় বিশ্বে শান্তির বার্তা পৌঁছানো এবং চার্চের ভেতরের সংস্কার। তবে সেন্ট পিটার্স ব্যালকনি থেকে তার হাসিমাখা মুখ ও সংলাপের বার্তা একটি বিষয় স্পষ্ট করেছে এই নতুন পোপ ঐক্যের স্বপ্ন দেখেন।