Home পর্যটন সিঙ্গাপুর থেকে প্রমোদ তরীতে বাটাম: দুই দিনের স্বপ্নযাত্রা

সিঙ্গাপুর থেকে প্রমোদ তরীতে বাটাম: দুই দিনের স্বপ্নযাত্রা

ছবি: এ আই

সাইয়েদ আহমেদ

সকালে সিঙ্গাপুরের বন্দর থেকে প্রমোদতরীতে উঠে বাতাসে নেমে আসে এক অদ্ভুত রোমাঞ্চ। সমুদ্রের হালকা লবণমিশ্রিত বাতাস শরীরে ছুঁয়ে যায়। প্রমোদতরীটি ধীরে ধীরে সিঙ্গাপুরের কংক্রিটের ভবনগুলো পেছনে ফেলে, সামনে উন্মোচন করে বিশাল প্রশান্ত সাগর আর দূরে সূর্য উঠার আগের রঙিন ছটা।

দুই ঘণ্টার নৌযাত্রার পর পৌঁছাই ইন্দোনেশিয়ার বাটাম দ্বীপে। বন্দরে নেমে দেখি স্থানীয় জীবনের ছাপ—ছোট মাছ ধরার নৌকা, হাতে হাতে তাজা ফল, শিশুদের খেলা নৌকাগুলোর আশেপাশে। শহরের হইহুল্লোড় নেই; শুধু সমুদ্রের নীরবতা আর পাখির কিচিরমিচির ভেসে আসে।

প্রথম দিনটি শুরু করি বাটামের কেন্দ্রীয় বাজার ও ‘Nagoya Hill Mall’ ঘুরে। এখানে আন্তর্জাতিক ব্র্যান্ডের দোকান, স্থানীয় হস্তশিল্প, আর রেস্টুরেন্টে খেতে খরচ হলো প্রায় ৫০,০০০ থেকে ৮০,০০০ ইন্দোনেশিয়ান রুপিয়া (বাংলাদেশি টাকায় প্রায় ২৮০–৪৫০ টাকা)। এরপর রাইড করে পৌঁছাই ‘Harris Hotel Batam Center’। হোটেলের একটি সাধারণ রুমের ভাড়া এক রাত প্রায় ৩০০,০০০–৪০০,০০০ রুপিয়া (প্রায় ১৭০০–২২৫০ টাকা)। বিকেলে হেঁটে বেরাই Palm Beach এবং Waterfront Promenade-এ। সমুদ্রের নীলরঙ এবং সাদা বালি চোখকে শান্তি দিচ্ছে।

দ্বিতীয় দিনটিতে দর্শনীয় স্থানগুলি অন্বেষণ করি। ‘Maha Vihara Duta Maitreya’ বৌদ্ধ মন্দির, তারপর Barelang Bridge। শহরে ঘুরে ঘুরে অসংখ্য মসজিদ দেখা যায়, যেখানে নিয়মিত আজান ভেসে আসে। স্থানীয় রেস্তোরাঁয় সামুদ্রিক মাছ খেতে খরচ হয় প্রায় ৪০,০০০–৬০,০০০ রুপিয়া (বাংলাদেশি টাকায় ২২০–৩৫০ টাকা)। ছোট দোকান থেকে তাজা ফল, চা বা নাস্তা কিনলে প্রায় ১০,০০০–২০,০০০ রুপিয়া (৫৫–১১০ টাকা) লাগে।

রাতের আলো যখন জ্বলছে, হোটেলের বারান্দায় বসে সমুদ্রের শব্দ শোনার মধ্যে দিয়ে ভাবি, এই দু’দিনের যাত্রা কত সহজে মনে বসে গেছে। শহরের হইহুল্লোড়, ব্যস্ততা—সব যেন অদূরে হারিয়ে গেছে। দু’দিনের অভিজ্ঞতা মনে রাখার মতো, চোখে আঁকা এক জীবন্ত ছবি হয়ে থেকে যায়।

ফেরার দিন সকালেই নৌকায় চড়ে সিঙ্গাপুরের দিকে রওনা। সমুদ্রপথে ফিরে তাকাই বাটামের দিকে—সবুজ বন, নীল সমুদ্র, মসজিদ ও আজানের শব্দ, মানুষের বন্ধুত্ব। মনে হয়, এমন ছোট্ট যাত্রায় বড় সুখের খোঁজ পাওয়া যায়।