বিজনেসটুডে২৪ প্রতিনিধি, গাইবান্ধা: গাইবান্ধার সাঘাটা উপজেলার কচুয়া ইউনিয়নের ওসমানেরপাড়া গ্রামে বাসর রাতে এক নববধূকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় নববধূর স্বামী আসিফ মিয়াসহ সাতজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় ওই তরুণী বর্তমানে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সম্প্রতি ওসমানেরপাড়া গ্রামের আশাদুল ইসলামের ছেলে আসিফ মিয়ার সঙ্গে গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার এক তরুণীর বিয়ে হয়। বুধবার রাতে ২ লাখ ৩০ হাজার টাকা দেনমোহরে পারিবারিকভাবে বিয়ের অনুষ্ঠান সম্পন্ন হয়। পরদিন বৃহস্পতিবার রাতে আসিফ তার নববধূকে নিয়ে নিজ বাড়িতে ফেরেন। সেখানেই আসিফ ও তার আরও ছয় বন্ধু নববধূকে রাতভর নির্যাতন ও সংঘবদ্ধভাবে ধর্ষণ করে।
শুক্রবার দুপুরে নববধূ অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে প্রথমে গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. ফাহাদ আল আসাদ বলেন, “শুক্রবার দুপুর ২টার দিকে ওই তরুণীকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তার শরীরে যৌন সহিংসতা ও শারীরিক নির্যাতনের চিহ্ন রয়েছে। প্রাথমিক চিকিৎসার পর তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে উন্নত চিকিৎসার জন্য রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করা হয়।”
স্থানীয় যুবক সাইফুল ইসলাম বলেন, “বুধবার রাতে বর-কনেকে বিদায় দেওয়া হয়। সবাই খুশি ছিল। কিন্তু বৃহস্পতিবার রাতে কী ঘটলো, তা জানার পর আমরা স্তব্ধ হয়ে যাই। পরদিন শুক্রবার দুপুরে মেয়েটি অসুস্থ হয়ে পড়লে বিষয়টি প্রকাশ পায়।”
আরেকজন স্থানীয় বাসিন্দা রফিকুল ইসলাম জানান, “নববধূর বাবা-মা যখন জানতে পারেন যে তাদের মেয়েকে স্বামী ও তার বন্ধুরা ধর্ষণ করেছে, তখন তারা কান্নায় ভেঙে পড়েন। গ্রামের মানুষজনও খুব ক্ষুব্ধ হয়েছে। পরে আমরা অভিযুক্তদের আটক করে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করি।”
গোবিন্দগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. বুলবুল ইসলাম বলেন, “শুক্রবার রাতে নববধূর বাবার বাড়ি থেকে সাতজনকে আটক করা হয়। শনিবার বিকেলে তাদের সাঘাটা থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। ভুক্তভোগীর পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে মামলা দায়ের করা হয়েছে। আসামিদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে।”
ভুক্তভোগীর স্বজনরা জানিয়েছেন, এত বড় অমানবিক ঘটনার পরও তারা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। তারা দ্রুত বিচার নিশ্চিতের দাবি জানিয়েছেন।