Home Second Lead বিক্রি নেই, বিপাকে ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা

বিক্রি নেই, বিপাকে ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা

রকিব কামাল

চট্টগ্রাম: করোনায় ব্যবসা প্রতিষ্ঠান খুললেও, বাজারে মন্দা ভাব বিরাজ করছে। আর্থিক লোকসানের মুখে খুচরা বাজারে বেচা-বিক্রি নেমে এসেছে অর্ধেকে।

 সুদিন ফেরায় অপেক্ষায় অলস সময় পার করছেন বিক্রেতা ও দোকানের কর্মচারীরা। চট্টগ্রামের বেশ কয়েকজন ক্ষুদ্র দোকানির সাথে কথা বললে ব্যবসার এমন চিত্র উঠে আসে।

ফুলের মোড় হিসেবে পরিচিত চট্টগ্রামের চেরাগী মোড়ের অধিকাংশ দোকানি হতাশার কথা জানিয়েছেন। অন্যান্য  বছরের এ সময়ে বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও সভা সমাবেশের জন্য ফুলের প্রচুর চাহিদা থাকতো।  দাম কষাকষি নিয়ে জটলা লেগে থাকতো ক্রেতা-বিক্রেতার। অথচ এখন দিনের অর্ধেক সময় পার হলেও ক্রেতার দেখা মিলছে না। করোনার প্রকোপ ছড়িয়ে পড়লে লকডাউনের সময় চার মাস বন্ধ ছিল এসব দোকান।

খাজা পুষ্প বিতানের স্বত্ত্বাধিকারী মো. আবু মিয়া বিজনেস টুডে২৪ কে বলেন, দুপুর সাড়ে ১২ টা বাজলেও একজন ক্রেতা আসেননি। দিনের অন্য সময়েও তেমন ক্রেতা থাকেন না। দিনে ২ হাজার টাকা আয় করতেও বেগ পোহাতে হচ্ছে। পারিবারিক কোনো অনুষ্ঠানের অর্ডার আসলে তিন থেকে পাঁচ হাজার টাকা বিক্রি হয়।

আবু মিয়া আরও বলেন, করোনার আগে দিনে ১৫ থেকে ২০ হাজার টাকার ফুল বিক্রি হতো। বিভিন্ন অনুষ্ঠানের সময় বিক্রি কয়েক গুণ বাড়তো। বিক্রি না থাকায় প্রতিদিন বিপুল পরিমান ফুল নষ্ট হয়ে যায়।

রোজ হেভেন নামে আরেক দোকানের মালিক জমির উদ্দীন বিজনেসটুডে২৪ কে বলেন, পুরোদিনে দুই হাজার টাকা বিক্রি  হয় না। বিক্রি তিন ভাগের এক ভাগে নেমে এসেছে।

লোকসানে রয়েছেন খুচরা ফল ব্যবসায়ীরাও। হরেক রকমের মৌসুমী ফল বাজারে থাকলেও চাহিদা নেই বলে জানালেন নগরীর ব্যাটারী গলির মুখের মানিক ফল বিতানের মালিক মোহাম্মদ মানিক।

জানান, করোনার পূর্বে দিনে ২০ থেকে ২৫ হাজার টাকা ফল বিক্রি হতো। কিন্তু এখন বড়জোর ৭ থেকে ৮ হাজার টাকার বিক্রি হচ্ছে। চাহিদা নেই। আগে ক্রেতারা যে পরিমান কিনিতেন, এখন কিনেন তার অর্ধেক।

ব্যবসা প্রতিষ্ঠান খুলে দিলেও বন্ধ রয়েছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো। শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ থাকায় এক প্রকার বন্ধ হয়ে পড়েছে স্টেশনারী দোকানসমূহ। কর্মচারী আর দোকান ভাড়া পরিশোধ করতে গিয়ে মালিকদের ব্যাংক ঋণের ওপর নির্ভর করতে হচ্ছে। অনেকে বিক্রি করছেন করোনা সুরক্ষা সামগ্রী।

নগরীর আন্দরকিল্লা মোড়ের রাজমনি স্টেশনারী দোকানের মালিক মো. জানে আলম বলেন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান না খুললে আমাদের ব্যবসা চাঙা হবে না। ইনকাম না থাকায় দোকানে মালামাল তুলতে পারছি না। সরকার সব কিছু দিলেও স্কুল-কলেজ খুলছে না। যার কারণে আমাদের দোকান চালাতে গিয়ে হিমশিম খেতে হচ্ছে।

সরকারের ঘোষিত প্রণোদনা বিষয়ে জানে আলম বলেন, ব্যবসা বাণিজ্য সচল রাখতে সরকার প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করেছে। এসব প্রণোদনা উদ্যোক্তা ও খুচরা ব্যবসায়ীদের দেওয়া হলে তারা সাময়িক ক্ষতি পুষিয়ে নিতে পারতো। এক্ষেত্রে সরকারের মনোযোগ আর্কষণ করছি। আমাদের ব্যবসার সুযোগ করে দেওয়া হোক।