বিজনেসটুডে২৪ প্রতিনিধি, চট্টগ্রাম: চট্টগ্রাম-৮ আসনে নির্বাচনী প্রচারণাকালে গুলির ঘটনায় বিএনপি মনোনীত প্রার্থী ও চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক এরশাদ উল্লাহ গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। এ ঘটনায় সরোয়ার হোসেন ওরফে বাবলা (৪৩) নামে একজন নিহত হয়েছেন। বুধবার (৫ নভেম্বর) সন্ধ্যা সাড়ে ৫টার দিকে নগরের বায়েজিদ থানার চালিতাতলী এলাকায় এই গুলির ঘটনা ঘটে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, নির্বাচনী গণসংযোগে অংশ নেওয়ার সময় অতর্কিতভাবে গুলি চালানো হয়। এতে এরশাদ উল্লাহসহ তিনজন আহত হন। পরে তাদের উদ্ধার করে নগরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে নেওয়া হলে সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টার দিকে সরোয়ার হোসেনের মৃত্যু হয়।

নিহত সরোয়ার হোসেন ওরফে বাবলা
চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির সদস্যসচিব নাজিমুর রহমান বলেন, “গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর প্রার্থী এরশাদ উল্লাহর চিকিৎসা চলছে। তিনি বর্তমানে শঙ্কামুক্ত।”
তবে নিহত সরোয়ার সম্পর্কে বিএনপির পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে, তিনি দলের কেউ নন। নাজিমুর রহমান বলেন, “জনসংযোগে শত শত মানুষ অংশ নিয়েছিলেন। সরোয়ার আমাদের কর্মী নন।”
পুলিশ জানায়, সরোয়ার হোসেন ওরফে বাবলার বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি, অস্ত্র ও হত্যা–সংক্রান্ত ১৫টি মামলা রয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, সন্ত্রাসী সাজ্জাদ হোসেন ওরফে ছোট সাজ্জাদের সঙ্গে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে প্রতিপক্ষ সরোয়ারকে লক্ষ্য করেই এ হামলা চালানো হয়।
চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক কাজী বেলাল বলেন, “এরশাদ উল্লাহ বিকেলে পাঁচলাইশ ওয়ার্ডে একটি নির্বাচনী সভা শেষে মসজিদে মাগরিবের নামাজ আদায় করেন। মসজিদ থেকে বের হওয়ার পরই সন্ত্রাসীরা হঠাৎ গুলি চালায়।”
বায়েজিদ বোস্তামী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জসিম উদ্দিন বলেন, “পুলিশ ঘটনাস্থলে রয়েছে। আমরা তদন্ত করছি কারা গুলি চালিয়েছে তা শনাক্ত করতে।”
পুলিশ সূত্র আরও জানায়, নিহত সরোয়ারের ওপর এর আগেও হামলার চেষ্টা হয়েছিল। গত ৩০ মার্চ নগরের বাকলিয়া এলাকায় তার গাড়িতে গুলি চালানো হয়, তখন দুইজন নিহত হলেও সরোয়ার প্রাণে বেঁচে যান। সেই মামলায় গ্রেপ্তার আসামিরা জানিয়েছিল, ছোট সাজ্জাদের নির্দেশেই হামলাটি চালানো হয়েছিল।
ছোট সাজ্জাদ বর্তমানে বিদেশে পলাতক বলে জানা গেছে। তিনি একসময় শিবির ক্যাডার হিসেবে পরিচিত ছিলেন এবং সরোয়ারও একসময় তাঁর সহযোগী ছিলেন। ২০১৫ সালের পর তাদের মধ্যে বিরোধ তৈরি হয়।
ঘটনার পরপরই এলাকায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর হামলার ঘটনায় তীব্র উদ্বেগ ও নিন্দা জানিয়ে দ্রুত হামলাকারীদের গ্রেপ্তার ও আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন।
স্থানীয় বিএনপি নেতারা অভিযোগ করেছেন, এই হামলা পরিকল্পিতভাবে চালানো হয়েছে, যাতে নির্বাচনী প্রচারণা ব্যাহত হয়।
প্রশাসন জানিয়েছে, ঘটনার পেছনের কারণ ও দায়ীদের শনাক্তে তদন্ত শুরু হয়েছে।










