বিজনেসটুডে২৪ প্রতিনিধি, ঢাকা: রাজধানীর গণপরিবহন খাতে আসছে বড় পরিবর্তন। ঢাকা ও আশপাশের এলাকায় পরিবেশবান্ধব ৪০০ বৈদ্যুতিক বাস চালুর উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। বাংলাদেশ ক্লিন এয়ার প্রকল্পের আওতায় এই বাসগুলো নামানো হবে ঢাকার সড়কে। প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় আড়াই হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যে বড় অংশ অর্থায়ন করছে বিশ্বব্যাংক।
এই প্রকল্প বাস্তবায়নের দায়িত্বে রয়েছে ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষ। ইতোমধ্যে বিশ্বব্যাংক প্রকল্পে ব্যয় অনুমোদন করেছে। সংস্থাটি বাংলাদেশের জ্বালানি নিরাপত্তা ও বায়ুদূষণ নিয়ন্ত্রণে দুইটি প্রকল্পে মোট সাত হাজার ৮২২ কোটি টাকা অনুদান অনুমোদন করেছে। এর মধ্যে বাংলাদেশ ক্লিন এয়ার প্রকল্পে বরাদ্দ ২৯০ মিলিয়ন ডলার।
পরিকল্পনা অনুযায়ী, প্রকল্পের আওতায় পুরোনো ডিজেলচালিত বাস সরিয়ে নতুন বৈদ্যুতিক বাস চালু করা হবে। বাসগুলো পরিচালিত হবে একক অপারেটর মডেলের মাধ্যমে এবং চার্জিং, পার্কিং ও রক্ষণাবেক্ষণের জন্য নির্মিত হবে তিনটি ডিপো। প্রাথমিকভাবে ডিপো হবে পূর্বাচল, ঝিলমিল এবং তৃতীয় স্থান নির্ধারণাধীন এলাকায়।
তবে প্রকল্পটি এখনো পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে। ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষের উপপ্রধান প্রকৌশলী মোহাম্মদ তুষার জানান, “প্রকল্পটি পরিকল্পনা কমিশনে জমা আছে। কিছু আপত্তি থাকায় জুলাই মাসে কাজ শুরু হচ্ছে না, আগস্ট নাগাদ শুরুর সম্ভাবনা রয়েছে।”
২০২৫ সালের মধ্যে চারটি নির্ধারিত রুটে বৈদ্যুতিক বাস চালু হবে এবং চালকদের প্রশিক্ষণ কার্যক্রম শুরু হবে। পর্যায়ক্রমে আরও ১০০ বাস সংযোজন, পুরোনো বাস অপসারণ, ডিজিটাল টিকিটিং ও লাইভ ট্র্যাকিং সিস্টেম চালু করা হবে। সব মিলিয়ে ২০৩০ সালের মধ্যে পুরো প্রকল্প বাস্তবায়ন হবে।
প্রকল্পের আওতায় পাঁচটি নতুন যানবাহন পরিদর্শন কেন্দ্র নির্মাণ, দুইটি পুরাতন কেন্দ্রের উন্নয়ন এবং ২০টি মোবাইল নির্গমন পরীক্ষা ইউনিট মাঠে নামানো হবে। এতে প্রতি বছর দুই হাজার ৭০০ টন পিএম ২.৫ ধরণের বায়ুদূষণ কমবে বলে আশা করা হচ্ছে।
এই প্রকল্পের মাধ্যমে সরকারের লক্ষ্য শুধু যানজট কমানো নয়, বরং পরিবেশগত উন্নয়ন, জনস্বাস্থ্যের সুরক্ষা, টেকসই উন্নয়ন ও জলবায়ু সংকট মোকাবিলাও।
এর আগে ২০২৪ সালের মে মাসে সরকারের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব বলেন, “এই বৈদ্যুতিক বাস প্রকল্প ঢাকার গণপরিবহনে নতুন মাত্রা আনবে। এটি নাগরিকদের জন্য নিরাপদ ও আধুনিক পরিবহন নিশ্চিত করবে।”
একই বিষয়ে বাজেট বক্তৃতায় অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, “ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষ আইন সংশোধনের মাধ্যমে একটি কার্যকর নগর পরিবহন কর্তৃপক্ষ গঠনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এর আওতায় ৪০০ বৈদ্যুতিক বাস চালুর কার্যক্রম চলমান।”