Home তথ্য প্রযুক্তি সূর্যের চেয়ে ২৬৫ গুণ ভারী ব্ল্যাক হোলের জন্ম: বিজ্ঞানীরা হতবাক

সূর্যের চেয়ে ২৬৫ গুণ ভারী ব্ল্যাক হোলের জন্ম: বিজ্ঞানীরা হতবাক

বিজ্ঞানীরা বলছেন, এ আবিষ্কার মহাবিশ্বকে দেখার দৃষ্টিভঙ্গি পাল্টে দেবে

আন্তর্জাতিক ডেস্ক: দূর মহাবিশ্বে সংঘটিত এক ভয়ঙ্কর ব্ল্যাক হোল সংঘর্ষ থেকে সৃষ্ট মহাকর্ষীয় তরঙ্গ পৃথিবীতে এসে পৌঁছেছে, যা বিজ্ঞানীদের মতে এ যাবৎকালের সবচেয়ে বিশাল ব্ল্যাক হোল সংমিশ্রণ।

গত বছরের ২৩ নভেম্বর বিকেল ২টার দিকে যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটন ও লুইজিয়ানা অঙ্গরাজ্যে অবস্থিত লেজার ইন্টারফেরোমিটার গ্র্যাভিটেশনাল-ওয়েভ অবজারভেটরি (লাইগো) একযোগে কাঁপতে থাকে। এটাই ছিল দুই বিশাল ব্ল্যাক হোলের সংঘর্ষের প্রমাণ, যাদের ভর ছিল যথাক্রমে সূর্যের ১০৩ ও ১৩৭ গুণ।

এই সংঘর্ষটি ঘটেছিল পৃথিবী থেকে প্রায় ১০ বিলিয়ন আলোকবর্ষ দূরে। এতে গঠিত নতুন ব্ল্যাক হোলটির ভর এখন সূর্যের ২৬৫ গুণ—যা মহাকর্ষীয় তরঙ্গ দ্বারা পরিমাপ করা বৃহত্তম ব্ল্যাক হোলের রেকর্ড।

কার্ডিফ বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্র্যাভিটি এক্সপ্লোরেশন ইনস্টিটিউটের প্রধান অধ্যাপক মার্ক হ্যানাম বলেন, “এই রকম সংঘর্ষ মহাবিশ্বের সবচেয়ে সহিংস ঘটনা হলেও, এর তরঙ্গ যখন পৃথিবীতে এসে পৌঁছে, তখন তা এতটাই ক্ষীণ যে প্রোটনের প্রস্থের চেয়েও হাজার গুণ ক্ষুদ্র।”

বিজ্ঞানীরা মনে করছেন, এই ব্ল্যাক হোল দুটির জন্মও হয়েছিল পূর্ববর্তী ব্ল্যাক হোল সংঘর্ষ থেকেই, যার ফলে তারা এত বেশি ভর এবং ঘূর্ণনগতিতে পৌঁছেছিল। নতুনভাবে আবিষ্কৃত এই ‘রিংডাউন ফেজ’ বিশ্লেষণ করে ধারণা করা হচ্ছে, তারা প্রতি সেকেন্ডে পৃথিবীর চেয়ে চার লাখ গুণ বেশি গতিতে ঘুরছিল।

এই তথ্য বিজ্ঞানীদের কাছে এক নতুন ধাঁধার জন্ম দিয়েছে। কারণ, এত বেশি ভরের ব্ল্যাক হোল সাধারণত তারকা বিস্ফোরণের মাধ্যমে গঠিত হওয়ার কথা নয়। হ্যানাম বলেন, “এই পর্যবেক্ষণ আমাদের বর্তমান তত্ত্বগুলোকে প্রশ্নবিদ্ধ করছে। পরবর্তী প্রজন্মের ডিটেক্টর দিয়ে আমরা হয়তো পুরো মহাবিশ্বের সব ব্ল্যাক হোল সংঘর্ষ দেখতে পারব, এমনকি হয়তো এমন কিছু পাব, যা একদম অপ্রত্যাশিত।”

পূর্বে শুধু আলোকতরঙ্গ নির্ভর বিজ্ঞান এখন মহাকর্ষীয় তরঙ্গে প্রবেশ করে মহাবিশ্বের অদৃশ্য দিগন্ত উন্মোচন করছে। এই প্রযুক্তি আমাদের মহাবিশ্ব পর্যবেক্ষণের এক নতুন যুগের সূচনা করেছে।