Home Third Lead ট্রাম্পের চাপেই কি ভারত চিন একসঙ্গে এগোচ্ছে?

ট্রাম্পের চাপেই কি ভারত চিন একসঙ্গে এগোচ্ছে?

ছবি: এআই

হাতি আর ড্রাগনের মিলন, এশিয়ার কূটনীতিতে নতুন সমীকরণ

আন্তর্জাতিক ডেস্ক:

দিল্লি:ভারত সফরে তিন বছর পর এলেন চিনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই। সোমবার সন্ধ্যায় দিল্লিতে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শংকরের সঙ্গে তাঁর দীর্ঘ বৈঠক হয়। বৈঠকের পর জানা যায়, পরে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গেও সাক্ষাৎ করবেন তিনি। এই সফরকে বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছেন কূটনৈতিক মহল। বিশেষত, সীমান্ত উত্তেজনা ও বৈশ্বিক বাণিজ্য সংকটের প্রেক্ষাপটে দুই দেশের এই শীর্ষ পর্যায়ের যোগাযোগকে ইতিবাচক ইঙ্গিত হিসেবে দেখা হচ্ছে।

তিন বছর আগে গালোয়ান সংঘর্ষ ও সীমান্ত বিরোধের কারণে ভারত চিন সম্পর্ক কার্যত স্থবির হয়ে গিয়েছিল। সীমান্তে প্রাণঘাতী সংঘর্ষের পর দুই দেশের কূটনৈতিক যোগাযোগ ভেঙে পড়ে। সেই প্রেক্ষাপটে ওয়াং ই-র দিল্লি সফর দুই দেশ সম্পর্ক পুনরুদ্ধারে একটি নতুন অধ্যায়ের সূচনা করতে পারে। অন্যদিকে আগামী ৩১ আগস্ট থেকে ১ সেপ্টেম্বর চিনের তাইনজিন সফরে যাবেন প্রধানমন্ত্রী মোদি। ধারনা করা হচ্ছে এই দ্বিপাক্ষিক সফরগুলোর মাধ্যমে দুই দেশের দীর্ঘদিনের সীমান্ত বিরোধ মীমাংসায় নতুন দিশা মিলতে পারে।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নতুন শুল্কনীতি ভারত ও চিন দুই দেশকেই চাপে ফেলেছে। বিশ্বের দুই বৃহত্তম অর্থনীতির সামনে এখন যৌথ কৌশল নেওয়ার প্রয়োজনীয়তা বেড়েছে। বিশ্লেষকরা মনে করছেন ট্রাম্প প্রশাসনের চাপই চিনকে ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক পুনর্গঠনে বাধ্য করছে। এক্ষেত্রে বাণিজ্য ও নিরাপত্তা উভয় দিক থেকেই দুই দেশের স্বার্থ মিলছে। বিশেষ করে এশিয়ার ভূরাজনীতিতে ভারত ও চিন একত্রে এগোলে তার প্রভাব পড়বে মার্কিন নীতিতেও।

ষাটের দশকের যুদ্ধ থেকে শুরু করে আজ পর্যন্ত নানা কারণে দুই দেশের সম্পর্ক ওঠানামা করেছে। লাদাখ ও অরুণাচলে সংঘর্ষ, ভারত মহাসাগরে চিনের আগ্রাসন, পাকিস্তানের প্রতি চিনের ঘনিষ্ঠতা—সব মিলিয়ে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কে আস্থা কমেছে। তবে বর্তমান বৈশ্বিক পরিস্থিতি উভয় দেশকেই সহযোগিতার পথে এগোতে উৎসাহিত করছে। কূটনীতিকদের মতে ওয়াং ই ও জয়শংকরের বৈঠক নতুন আস্থা সৃষ্টির প্রক্রিয়া শুরু করেছে।

এখন প্রশ্ন হলো এশিয়ার হাতি ও ড্রাগন কি সত্যিই একই নৃত্যে অংশ নেবে। উভয় পক্ষই সীমান্ত বিরোধ শান্তিপূর্ণভাবে সমাধান এবং বাণিজ্য সম্পর্ক জোরদারের প্রস্তুতি নিচ্ছে। ফলে ধারণা করা হচ্ছে নিকট ভবিষ্যতে ভারত চিন সম্পর্ক একটি নতুন মোড় নেবে। তবে অতীতের অবিশ্বাস কাটিয়ে টেকসই সম্পর্ক গড়ে তোলা কতটা সম্ভব হবে সেটাই এখন দেখার বিষয়।