এভিয়েশন ডেস্ক: উত্তরাখণ্ডের কেদারনাথ ধাম থেকে গুপ্তকাশীর উদ্দেশ্যে যাত্রারত একটি যাত্রীবাহী হেলিকপ্টার আজ সকালে দুর্ঘটনায় পতিত হয়েছে। হেলিকপ্টারটিতে পাইলটসহ মোট ছয়জন আরোহী ছিলেন, যাঁদের মধ্যে একজন শিশু। প্রাথমিকভাবে জানা গেছে, খারাপ আবহাওয়া ও ঘন কুয়াশার কারণে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে হেলিকপ্টারটি গৌরীকুণ্ডের জঙ্গলে ভেঙে পড়ে।
ভারতীয় গণমাধ্যম এনডিটিভির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কেদারনাথ মন্দির থেকে উত্তরাখণ্ডের গুপ্তকাশীতে যাওয়ার সময় আরিয়ান এভিয়েশনের ওই হেলিকপ্টারটি জঙ্গলে বিধ্বস্ত হয়। এতে সাতজন নিহত হয়েছেন। এদের মধ্যে একজন পাইলটও রয়েছেন। উড্ডয়নের প্রায় ১০ মিনিট পর গৌরীকুণ্ড এবং সোনপ্রয়াগের মাঝামাঝি এলাকায় হেলিকপ্টারটি বিধ্বস্ত হয়।
রবিবার ভোর সাড়ে পাঁচটায় কেদারনাথ থেকে উড্ডয়ন করে গুপ্তকাশীর পথে যাত্রী পরিবহন করছিল হেলিকপ্টারটি। যাত্রীরা ছিলেন উত্তরাখণ্ড, উত্তরপ্রদেশ, মহারাষ্ট্র ও গুজরাটের বাসিন্দা। হেলিকপ্টারটি গৌরীকুণ্ডের অদূরে একটি দুর্গম এলাকায় পড়ে গেলে সঙ্গে সঙ্গে উদ্ধার অভিযান শুরু করে রাজ্য ও জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী।
ঘটনাস্থল থেকে পাওয়া দৃশ্যপটে দেখা যায়, কপ্টারের পেছনের অংশ সম্পূর্ণভাবে ভেঙে গেছে এবং সামনে অংশটিও চূর্ণবিচূর্ণ হয়ে গেছে। ব্লেডের একটি অংশ এখনও ঘুরতে দেখা যায়, যদিও মূল কাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত। সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ছবি ও ভিডিওর সত্যতা যদিও আনুষ্ঠানিকভাবে যাচাই করা হয়নি, তবুও তা থেকে দুর্ঘটনার ভয়াবহতা স্পষ্ট।
হেলিকপ্টার দুর্ঘটনার খবর নিশ্চিত করে উত্তরাখণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী পুষ্কর সিং ধামী টুইটারে লেখেন, “রুদ্রপ্রয়াগ জেলায় হেলিকপ্টার দুর্ঘটনার খবর পেয়েছি। উদ্ধারকারী দল, স্থানীয় প্রশাসন এবং বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে গেছে। উদ্ধারকাজ চলছে। বাবা কেদারের আশীর্বাদে সকল যাত্রীর নিরাপত্তা কামনা করি।”
উত্তরাখণ্ড সিভিল এভিয়েশন ডেভেলপমেন্ট অথরিটি (ইউসিএডিএ)-র পক্ষ থেকেও একটি আনুষ্ঠানিক বিবৃতি দেওয়া হয়েছে। তাতে জানানো হয়, গৌরীকুণ্ড এলাকায় দুর্ঘটনায় পড়া হেলিকপ্টারটিতে পাইলটসহ ছয়জন ছিলেন, যাঁদের মধ্যে পাঁচজন প্রাপ্তবয়স্ক ও একজন শিশু। এখন পর্যন্ত হতাহতের বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য পাওয়া যায়নি।
উল্লেখ্য, কেদারনাথ থেকে গুপ্তকাশীর মধ্যে যাত্রী পরিবহনের অন্যতম দ্রুত ও জনপ্রিয় মাধ্যম হল হেলিকপ্টার। প্রতিবছর হাজার হাজার পুণ্যার্থী এই রুটে হেলিকপ্টারে যাতায়াত করেন। তবে পাহাড়ি অঞ্চল এবং দ্রুত পরিবর্তনশীল আবহাওয়ার কারণে এ ধরনের দুর্ঘটনার ঝুঁকি থেকেই যায়।
প্রসঙ্গত, এর আগে ১২ জুন অহমদাবাদ থেকে লন্ডনগামী একটি আন্তর্জাতিক যাত্রীবাহী বিমান রানওয়ে ছাড়ার পরপরই দুর্ঘটনার কবলে পড়ে, যাতে প্রাণ হারান ২৪১ জন। সেই মর্মান্তিক ঘটনার দাগ মুছতে না মুছতেই ফের আকাশপথে ঘটল বড় ধরনের বিপর্যয়।