Home Third Lead মাউন্ট এটনায় অগ্ন্যুৎপাত, বিস্ফোরণে আকাশ ছেয়ে গেল ছাইয়ে

মাউন্ট এটনায় অগ্ন্যুৎপাত, বিস্ফোরণে আকাশ ছেয়ে গেল ছাইয়ে

হঠাৎ অগ্ন্যুৎপাত শুরু হওয়ার পর । ছবি সংগৃহীত

আন্তর্জাতিক ডেস্ক:

ইতালির সিসিলি দ্বীপে অবস্থিত ইউরোপের সবচেয়ে সক্রিয় আগ্নেয়গিরি মাউন্ট এটনায় হঠাৎ করে অগ্ন্যুৎপাত ঘটেছে। স্থানীয় সময় সোমবার সকাল ১১টা ২৪ মিনিটে দক্ষিণ-পূর্ব দিকের গহ্বরের একাংশ ধসে পড়ে, ফলে উদ্ভূত হয় পাথর, গরম ছাই ও বিষাক্ত গ্যাসের বিধ্বংসী প্রবাহযা পাহাড় বেয়ে নেমে আসে দ্রুত গতিতে।

আতঙ্কিত পর্যটকেরা তখন পাহাড়ের ঢালু পথ ধরে দৌড়ে পালাতে শুরু করেন। কেউ কেউ আবার সেই মুহূর্তের ভয়াবহ দৃশ্য ক্যামেরাবন্দি করার জন্য কিছুক্ষণ থেমেও যান। সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, কয়েক ডজন পর্যটক ছাইয়ের মেঘের পেছনে রেখে প্রাণপণ দৌড়াচ্ছেন।

অগ্ন্যুৎপাত হওয়ার আগে ছবি তোলায় ব্যস্ততা পর্যটকদের। ছবি সংগৃহীত

ইতালির জাতীয় ভূকম্প ও আগ্নেয়গিরি গবেষণা ইনস্টিটিউট জানিয়েছে, এ ঘটনার মূল কারণ ছিল দক্ষিণ-পূর্ব গহ্বরের উত্তরের পাশ থেকে পদার্থ ধসে পড়া। ধসে পড়ার ফলে সৃষ্টি হয় ‘পাইরোক্লাস্টিক ফ্লো’ নামে পরিচিত ছাই ও গরম গ্যাসের ধোঁয়ার ধাক্কা, যা চার মাইল উচ্চতায় ছড়িয়ে পড়ে আকাশে।

ঘটনার পরপরই আগ্নেয়গিরির ছাইয়ের উচ্চতা ও গতিবিধি পর্যবেক্ষণ করে রেড অ্যালার্ট জারি করা হয়েছিল বিমান চলাচলের ক্ষেত্রে। পরে তা কমিয়ে কমলা সতর্কতায় আনা হয়। ছাইয়ের মেঘ মূলত পানি ও সালফার ডাইঅক্সাইড গ্যাস দিয়ে গঠিত এবং এটি দক্ষিণ-পশ্চিম দিকে ভেসে যাচ্ছিল।

আগ্নেয়গিরির আশপাশের পিয়ানো ভেটোর এলাকায় পাতলা ছাই পড়ার খবর পাওয়া গেছে। সকাল থেকে মাউন্ট এটনায় ‘স্ট্রোম্বোলিয়ান এক্সপ্লোশন’ নামে পরিচিত প্রায়-নিরবচ্ছিন্ন বিস্ফোরণ ঘটেছে, যার তীব্রতা ক্রমাগত বেড়েছে বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ।

গতরাত ১০টার কিছু পর থেকে আগ্নেয়গিরির ভেতরে কম্পন শুরু হয় এবং রাত ১টার দিকে তা চূড়ায় পৌঁছায়। এরপর সকালে ঘটে ভয়াবহ অগ্ন্যুৎপাত।

অগ্ন্যুৎপাত হওয়ার পর ছাইয়ে ছেয়ে যাওয়া আকাশ। ছবি সংগৃহীত

যদিও সকালের অগ্ন্যুৎপাতের পরে পরিস্থিতি কিছুটা শান্ত রয়েছে, তবে আগ্নেয়গিরির আশপাশে এখনও ধূসর ছাইয়ের মেঘ দৃশ্যমান। কর্তৃপক্ষ সতর্কতা বজায় রাখার আহ্বান জানিয়েছে।

এটনা প্রায় ৫ লক্ষ বছর পুরোনো এবং বিগত পাঁচ বছর ধরে অস্বাভাবিক সক্রিয় রয়েছে। গত বছরও এটি সিসিলির কাছের বিমানবন্দরগুলোতে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করেছিল, যখন বিশাল ছাইয়ের কারণে উড়োজাহাজের গন্তব্য পরিবর্তন করতে বাধ্য হয়েছিল কর্তৃপক্ষ।

উল্লেখ্য, এটনার সবচেয়ে ভয়াবহ অগ্ন্যুৎপাত হয়েছিল ১৬৬৯ সালে, যা কয়েক সপ্তাহ ধরে চলেছিল। ওই সময় ১৪টি গ্রাম এবং শহর ধ্বংস হয়ে যায় এবং প্রায় ২০ হাজার মানুষ প্রাণ হারিয়েছিলেন।

⚠️ আরও এমন আপডেট পেতে আমাদের সঙ্গে থাকুন।

📢 প্রতিবেদনটি শেয়ার করুন