আন্তর্জাতিক ডেস্ক: রাশিয়া থেকে তেল কেনা বন্ধ না করায় ভারতকে অতিরিক্ত শুল্ক আরোপ করেছিল ট্রাম্প প্রশাসন। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে তা আরও একধাপ এগিয়েছে। মার্কিন বিদেশসচিব হাওয়ার্ড লুটনিক সরাসরি ভারতের কাছে জানিয়েছেন, আমেরিকায় উৎপাদিত ভুট্টা কিনতে না রাজি হলে মার্কিন বাজারে ব্যবসার সুযোগ হারাতে পারে নয়াদিল্লি।
লুটনিকের বক্তব্য, “ভারত আমাদের কাছে পণ্য বিক্রি করে, সুবিধা নেয়, কিন্তু নিজেদের বাজারে আমাদের পণ্য প্রবেশে বাধা দেয়। ১৪০ কোটি মানুষকে নিয়ে গর্ব করতে হলে কেন তারা মার্কিন ভুট্টা কিনবে না?” এর মাধ্যমে মার্কিন প্রশাসন শুধু বাণিজ্যিক সুবিধা চাইছে না, বরং ভারতীয় বাজারে প্রভাব বিস্তার ও দ্বিপাক্ষিক শুল্ক বৈষম্য কমানোর তাগিদও জানাচ্ছে।
এ প্রসঙ্গে মনে রাখতে হবে, ট্রাম্পের শুল্ক নীতি একপ্রকার সরাসরি “অ্যামেরিকান ফার্স্ট” নীতি প্রয়োগ। ভারতের উপর তেলের জন্য ৫০ শতাংশ শুল্ক আরোপ এবং রাশিয়ার সঙ্গে ভারতের ব্যবসায় প্রতিবন্ধকতা তৈরি করার পেছনে মূলত এ নীতি কাজ করছে। মার্কিন প্রশাসনের যুক্তি, ভারত রাশিয়ার তেল থেকে লাভবান হচ্ছে এবং সেই অর্থ ইউক্রেন যুদ্ধে কাজে লাগছে। তবে ভারত এখনও তেল আমদানি বন্ধ করতে রাজি হয়নি।
ভারত-মার্কিন বাণিজ্য চুক্তি বছরের শুরু থেকেই আলোচনার মধ্যে আছে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর আমেরিকা সফরের সময় এই আলোচনার সূচনা হলেও এখনও কোনও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি। শুল্ক-হুমকি ও ভুট্টা কেনার চাপকে কেন্দ্র করে সম্পর্কের টানাপোড়েন বৃদ্ধি পেয়েছে। তবে সাম্প্রতিক সময়ে ট্রাম্প প্রশাসন ভারতের সঙ্গে আলোচনায় এগোতে চাচ্ছে। মার্কিন প্রতিনিধিদলের প্রধান ব্রেন্ডন লিঞ্চ সোমবার রাতে ভারতে পৌঁছেছেন, এবং মঙ্গলবার থেকে বাণিজ্য আলোচনায় বসবেন।
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এই পরিস্থিতি শুধু দু’দেশের বাণিজ্য সম্পর্ককে প্রভাবিত করবে না, বরং আন্তর্জাতিক বাজারে তেল ও খাদ্যপণ্যের চাহিদা, শুল্ক নীতি এবং দক্ষিণ এশিয়ার কৌশলগত অবস্থানকেও প্রভাবিত করবে। বিশেষ করে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ এবং ভারতের ভূ-রাজনৈতিক অবস্থানের সঙ্গে যুক্ত হয়ে বিষয়টি আরও জটিল রূপ নিচ্ছে।










