Home আন্তর্জাতিক ইসরায়েল-ইরান সংঘাতে শিপিং শিল্পে ধাক্কা: সরে দাঁড়াল মার্স্ক ও হ্যাপাগ-লয়েড

ইসরায়েল-ইরান সংঘাতে শিপিং শিল্পে ধাক্কা: সরে দাঁড়াল মার্স্ক ও হ্যাপাগ-লয়েড

শিপিং ডেস্ক: ইসরায়েল-ইরান চলমান উত্তেজনা মধ্যপ্রাচ্যের সামরিক ও কূটনৈতিক ভারসাম্যকে যেমন নাড়িয়ে দিয়েছে, তেমনি এর সরাসরি প্রভাব পড়েছে বৈশ্বিক বাণিজ্য ও জাহাজ চলাচলেও। এই সংকটময় পরিস্থিতিতে ডেনমার্কভিত্তিক জাহাজ পরিবহন সংস্থা মার্স্ক শুক্রবার এক পরামর্শ বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, তারা সাময়িকভাবে ইসরায়েলের হাইফা বন্দরে তাদের জাহাজ আগমন স্থগিত করেছে এবং হাইফার উদ্দেশ্যে কোনো পণ্য পরিবহন আপাতত গ্রহণ করবে না।

মার্স্ক বলেছে, “বাড়তে থাকা আঞ্চলিক অস্থিতিশীলতা বিবেচনায় আমরা আমাদের কর্মী, সম্পদ এবং গ্রাহকদের মালামালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এই পূর্বসতর্কতামূলক পদক্ষেপ নিয়েছি।”

তবে হাইফা থেকে সরে এলেও সংস্থাটি এখনো ইসরায়েলের আশদোদ বন্দরে জাহাজ পরিচালনা অব্যাহত রেখেছে এবং বিকল্প পরিবহন ব্যবস্থা খুঁজে বের করতে কাজ করছে।

মার্স্ক জানিয়েছে, “ইসরায়েল-ইরান চলমান সংঘাত, বিশেষত নির্দিষ্ট ইসরায়েলি বন্দরের নিরাপত্তা ঝুঁকি বিশ্লেষণ করে আমরা এই সিদ্ধান্তে এসেছি। পরিস্থিতির উন্নতি হলে আমরা সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করবো।”

শুধু মার্স্কই নয়, জার্মানির শিপিং জায়ান্ট হ্যাপাগ-লয়েডও হাইফা বন্দরে তাদের সেবা সীমিত করেছে। শুক্রবার এক বিবৃতিতে প্রতিষ্ঠানটি জানায়, নিরাপত্তা ঝুঁকি বিবেচনায় ‘ইস্ট মেড শাটল-৩ (EM3)’ সেবা সাময়িকভাবে হাইফাগামী পণ্য পরিবহন স্থগিত করেছে। যদিও ‘অ্যাটলান্টিক লুপ-৭ (AL7)’ সেবা এখনও হাইফা বন্দর ব্যবহার করছে।

হ্যাপাগ-লয়েড জানিয়েছে, “নাবিকদের নিরাপত্তা ও পণ্যের সুরক্ষা আমাদের সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার। আমরা স্থানীয় কর্তৃপক্ষ ও বন্দর পরিচালকদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ রক্ষা করে চলছি।”

বিশ্লেষকরা বলছেন, এই সিদ্ধান্ত দুটি শুধু দুইটি কোম্পানির পক্ষ থেকে নিরাপত্তা সংক্রান্ত তাৎক্ষণিক পদক্ষেপ নয়—বরং এটি ইঙ্গিত দেয় যে ইসরায়েল-ইরান উত্তেজনা ক্রমেই আন্তর্জাতিক বাণিজ্য ও জাহাজ পরিবহনের ওপর চাপ সৃষ্টি করছে।

হোয়াইট হাউজে প্রেস ব্রিফিংয়ে ট্রাম্প প্রশাসনের প্রেস সচিব ক্যারোলিন লেভিট জানান, “সংঘাতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সরাসরি জড়াবে কি না, তা নিয়ে এখনো কোনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি। পরবর্তী দুই সপ্তাহের মধ্যে বিষয়টি পর্যালোচনা করা হবে।”

ট্রাম্প নিজেও পরিস্থিতি খোলাসা না করে বলেন, “যুদ্ধের সময় সবকিছু এক মুহূর্তে বদলে যায়। আমার কৌশল আছে, কিন্তু আমি সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করি শেষ সেকেন্ডে।”

বিশ্বের অন্যতম ব্যস্ত বাণিজ্যপথের এই সংকট পরিস্থিতি কোথায় গড়ায়, তা এখনও অনিশ্চিত। তবে মার্স্ক ও হ্যাপাগ-লয়েডের পদক্ষেপ আভাস দিচ্ছে পরিস্থিতি যদি আরও জটিল হয়, তবে বৈশ্বিক সরবরাহ ব্যবস্থায় বড় ধরনের বিঘ্ন আসতে পারে।