আন্তর্জাতিক ডেস্ক: স্বামীর যৌন সহিংসতায় সদ্য বিবাহিত তরুণীর মর্মান্তিক মৃত্যুর ঘটনায় উত্তাল হয়ে উঠেছে পাকিস্তানের করাচি। নারীবাদী সংগঠন অরাত মার্চ এক বিবৃতিতে এই ঘটনাকে “যৌন সহিংসতার সংস্কৃতির নির্মম প্রতিফলন” বলে অভিহিত করেছে। তরুণীর স্বামী বর্তমানে পুলিশ হেফাজতে থাকলেও সংগঠনের দাবি, শুধু তাকে নয়, তার পরিবার, চিকিৎসক এবং সংশ্লিষ্ট হাসপাতালকে জবাবদিহির আওতায় আনতে হবে।
পুলিশ জানায়, গত ১৫ জুন ভিকটিমের বিয়ে হয়। কিন্তু বিয়ের দুই দিনের মাথায়ই তার স্বামী তাকে ধর্ষণ ও পাশবিক নির্যাতনের শিকার করে। বাগদাদি থানার এসএইচও মজিদ আলভী জানান, তরুণীকে একটি ধাতব রড দিয়ে আঘাত করা হয়েছিল এবং তার ওপর চালানো হয় “অস্বাভাবিক যৌন নির্যাতন”।
প্রথমে এক বেসরকারি হাসপাতালে অস্ত্রোপচার করার পর তরুণীকে করাচি সিভিল হাসপাতালে আনা হয়, যেখানে কয়েকদিন কোমায় থাকার পর বুধবার সকালে তার মৃত্যু হয়। পুলিশ সার্জন ডা. সুমাইয়া সাঈদ জানিয়েছেন, তরুণীর শরীরে যৌন সহিংসতার প্রাথমিক আলামত পাওয়া গেছে।
ভিকটিমের ভাই থানায় দায়ের করা এফআইআরে (ধারা ৩২৪ ও ৩৭৬-বি অনুযায়ী) জানান, তার বোনকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করার উদ্দেশ্যে যৌন নির্যাতন চালানো হয়েছিল।
অরাত মার্চ করাচি-র বিবৃতিতে বলা হয়, “আমরা স্তব্ধ। আমরা ক্ষুব্ধ। আমরা শোকাহত। এটি কোনো ‘পারিবারিক বিষয়’ নয়, এটি ছিল নিখাদ বিকৃত মানসিকতার নিষ্ঠুর নির্যাতন।”
তারা আরও দাবি জানায়—
- অভিযুক্ত স্বামীর পরিবারের সদস্যদেরও গ্রেপ্তার করতে হবে
- বেসরকারি হাসপাতালের লাইসেন্স বাতিল করতে হবে, যতক্ষণ না তদন্ত শেষ হচ্ছে
- সংশ্লিষ্ট চিকিৎসককে চিকিৎসা গাফিলতি ও ঘটনার ধামাচাপার অভিযোগে বিচারের মুখোমুখি করতে হবে
- হাসপাতাল ও চিকিৎসকের বিরুদ্ধে স্বাধীন তদন্ত শুরু করতে হবে
সংগঠনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, তরুণীর মরদেহ ইতিমধ্যে তার গ্রামের বাড়িতে দাফনের জন্য নেওয়া হয়েছে। পরিবার ফিরে এলে অরাত মার্চ এবং মাইনরিটি রাইটস মার্চ যৌথভাবে রাস্তায় নেমে প্রতিবাদ জানাবে—”প্রবল, অবিরাম, ক্রোধে ভরা কণ্ঠে।”
এই ঘটনাটি পাকিস্তানের পিতৃতান্ত্রিক সহিংসতার এক ভয়ঙ্কর চিত্র তুলে ধরেছে, যেখানে নারীর নিরাপত্তা, মর্যাদা ও চিকিৎসাসেবা সবই প্রশ্নবিদ্ধ।