Home First Lead আগস্টে রপ্তানির ধাক্কা: কেন কমলো প্রবাহ

আগস্টে রপ্তানির ধাক্কা: কেন কমলো প্রবাহ

বিজনেসটুডে২৪ প্রতিনিধি, ঢাকা: বাংলাদেশের রপ্তানি খাত এ বছর জুলাই মাসে চমকপ্রদ প্রবৃদ্ধি দেখিয়েছিল। কিন্তু এর পরের মাসেই অর্থাৎ আগস্টে সেই প্রবৃদ্ধি ধাক্কা খেল। প্রাথমিক হিসেবে আগস্টে রপ্তানি হয়েছে ৩৮৮ কোটি ডলার, যা গত বছরের আগস্টের তুলনায় ৪ দশমিক ৬৭ শতাংশ কম। অথচ জুলাইয়ে রপ্তানি ছিল ৪৭৬ কোটি ডলার—একই সময়ে ২৪ দশমিক ৬১ শতাংশ প্রবৃদ্ধি।

প্রশ্ন জাগে—কেন এমন ওঠানামা?

শুল্ক অনিশ্চয়তার আগাম জাহাজীকরণ

ব্যবসায়ীরা বলছেন, যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে ট্রাম্প প্রশাসনের পালটা শুল্ক নিয়ে অস্থিরতা রপ্তানি খাতে বড় প্রভাব ফেলেছে। ৩১ জুলাই থেকে নতুন শুল্ক কার্যকর হওয়ার আশঙ্কায় জুলাই মাসেই বিপুল পরিমাণ পণ্য আগাম জাহাজীকরণ হয়। এর ফলে জুলাইয়ের পরিসংখ্যানে প্রবৃদ্ধি অনেক বেড়ে যায়। কিন্তু বাস্তবিক অর্থে এই আগাম রপ্তানিই আগস্ট মাসে সংখ্যাটা কমিয়ে দিয়েছে।

অর্থাৎ এখানে প্রকৃত চাহিদা কমেনি; বরং সময়ের অগ্রিম শিফট হয়েছে।

মৌসুমি প্রবণতাও দায়ী

রপ্তানিকারকদের অভিজ্ঞতা হলো, জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর সময়টা তুলনামূলকভাবে দুর্বল মৌসুম। তৈরি পোশাক রপ্তানির বড় অংশ ইউরোপ ও আমেরিকার শীতকালীন মৌসুমের অর্ডারের ওপর নির্ভরশীল। অর্ডারগুলো সাধারণত অক্টোবর-ডিসেম্বর সময়ে বেশি আসে। তাই আগস্টে কম রপ্তানি হওয়া এক ধরনের মৌসুমি বাস্তবতা।

ক্রয়াদেশে ধীরগতি

এর পাশাপাশি বৈশ্বিক বাজারে অনিশ্চয়তার কারণে গত কয়েক মাস নতুন অর্ডারের হারও কম ছিল। ইউরোপ ও আমেরিকার ভোক্তা চাহিদা মন্দার প্রভাবে কমেছে। ফলে তৈরি পোশাক খাত, যা মোট রপ্তানির ৮০ শতাংশের বেশি, সেটিই আগস্টে ধীর হয়ে পড়েছে।

বড় ছবি: প্রবৃদ্ধি কি ঝুঁকিতে?

ইপিবির হিসাবে ২০২৪-২৫ অর্থবছরের মোট রপ্তানি ৪ হাজার ৮২৮ কোটি ডলার, যা আগের বছরের তুলনায় ৮ দশমিক ৫০ শতাংশ বেশি। অর্থাৎ দীর্ঘমেয়াদে প্রবৃদ্ধির ধারা এখনো ইতিবাচক। তবে মাসওয়ারি ওঠানামা কিছু ঝুঁকির ইঙ্গিত দিচ্ছে:

  • যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের শুল্ক ও বাণিজ্যনীতির পরিবর্তন সরাসরি বাংলাদেশের রপ্তানিকে প্রভাবিত করছে।
  • মৌসুমি অর্ডার নির্ভরতা রপ্তানিকে অস্থিতিশীল করছে।
  • বাজার বহুমুখীকরণে ধীরগতি থাকায় তৈরি পোশাক খাতের ওপর অতিনির্ভরতা ঝুঁকি বাড়াচ্ছে।