Home Second Lead রাজশাহীর আমের ক্যালেন্ডার: গুটি আম আগে গোপালভোগ পরে

রাজশাহীর আমের ক্যালেন্ডার: গুটি আম আগে গোপালভোগ পরে

বিজনেসটুডে২৪ প্রতিনিধি, রাজশাহী: রাজশাহীতে আম সংগ্রহ ও বাজারজাতকরণের নির্ধারিত সময়সূচি ঘোষণা করা হয়েছে। আম উৎপাদন, বিপণন ও সংরক্ষণের সঙ্গে জড়িত বিভিন্ন পক্ষের অংশগ্রহণে আয়োজিত মতবিনিময় সভায় এই সিদ্ধান্ত জানানো হয়। বুধবার দুপুরে জেলা প্রশাসকের সম্মেলনকক্ষে অনুষ্ঠিত সভায় সভাপতিত্ব করেন জেলা প্রশাসক আফিয়া আখতার।

সভায় কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের রাজশাহী অঞ্চলের উপপরিচালক সালমা আখতার, কৃষি কর্মকর্তা, আমচাষি, আড়তদার, পরিবহন ব্যবসায়ীসহ সংশ্লিষ্ট সকল পক্ষ উপস্থিত ছিলেন। সবার সঙ্গে আলোচনা করে ‘ম্যাঙ্গো ক্যালেন্ডার’ নামে সময়ভিত্তিক একটি সময়সূচি প্রকাশ করা হয়, যাতে পরিপক্ব, নিরাপদ ও বিষমুক্ত আম সংগ্রহ ও বাজারজাত নিশ্চিত করা যায়।

ঘোষিত সময়সূচি অনুযায়ী, চলতি বছর ১৫ মে থেকে গুটি জাতের আম সংগ্রহ শুরু হবে। এরপর ২০ মে থেকে গোপালভোগ, ২৫ মে থেকে রাণীপছন্দ ও লক্ষণভোগ, ৩০ মে থেকে হিমসাগর ও ক্ষীরশাপাতি, ১০ জুন থেকে বানানা আম ও ল্যাংড়া, ১৫ জুন থেকে আম্রপালি ও ফজলি, ৫ জুলাই থেকে বারি আম ৪, ১০ জুলাই থেকে আশ্বিনা এবং ১৫ জুলাই থেকে গৌড়মতি আম সংগ্রহ ও বাজারজাত করা যাবে। কাটিমন ও বারি আম ১১ জাতের আম সারাবছরই সংগ্রহযোগ্য।

জেলা প্রশাসক আফিয়া আখতার জানান, ঘোষিত ক্যালেন্ডার অনুসরণ না করে অপরিপক্ব আম পাড়া হলে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তবে প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে কোনো বাগানে আগাম আম পাড়ার প্রয়োজন হলে সংশ্লিষ্ট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছ থেকে অনুমতি নিয়ে তা সংগ্রহ করা যাবে।

সভায় জানানো হয়, চলতি মৌসুমে রাজশাহী জেলায় ১৯ হাজার ৬০৩ হেক্টর জমিতে আমবাগান রয়েছে। হেক্টরপ্রতি গড় উৎপাদন ১৩ দশমিক ২৬ টন ধরে এ বছর প্রায় দুই লাখ ৬০ হাজার মেট্রিক টন আম উৎপাদনের সম্ভাবনা রয়েছে। সম্ভাব্য বাজারমূল্য ধরা হয়েছে এক হাজার ৭০০ কোটি টাকার বেশি।

কৃষি কর্মকর্তারা জানান, আম পরিপক্ব হওয়ার আগে সংগ্রহ করলে স্বাদ ও গুণমান নষ্ট হয়। এতে দেশের অভ্যন্তরীণ বাজারে ক্রেতা-ভোক্তাদের মধ্যে আস্থাহীনতা তৈরি হয়। সেই সঙ্গে রপ্তানিযোগ্য আমের মান নিয়েও প্রশ্ন উঠে।

এ কারণে সময়সূচি মেনে পরিপক্ব আম সংগ্রহে জোর দিয়েছে প্রশাসন ও কৃষি বিভাগ। রাজশাহীর আম দেশের বিভিন্ন জায়গায় যেমন জনপ্রিয়, তেমনি বিদেশেও এর ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। গত কয়েক বছর ধরে ইউরোপসহ মধ্যপ্রাচ্যে রাজশাহীর আম রপ্তানি হচ্ছে।

সভায় নিরাপদ আম উৎপাদনে প্রয়োজনীয় পরামর্শ ও প্রযুক্তি সহায়তা দিতে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরকে আহ্বান জানানো হয়।