Home বিনোদন রূপসী রাজকন্যা ও রাক্ষসের দ্বীপ: এক দুঃসাহসিক লোককাহিনি

রূপসী রাজকন্যা ও রাক্ষসের দ্বীপ: এক দুঃসাহসিক লোককাহিনি

অনেক অনেক কাল আগে, সমুদ্রপারের এক রাজ্যে জন্ম নিয়েছিল রূপমঞ্জরী নামের এক অপূর্ব সুন্দরী রাজকন্যা। তাঁর রূপ ছিল এমন, যেন চাঁদের আলো ও পদ্মফুল একসঙ্গে মিশে এক কুমারী রূপে জন্ম নিয়েছে। রাজ্যবাসী তাকে ভালোবাসত, আর দূর দূরান্ত থেকে রাজপুত্ররা আসত তার সৌন্দর্য দেখতে।

একদিন রাজ্যের উত্সব চলাকালীন, আকাশ কালো করে আসে এক ঘূর্ণি বাতাস। হঠাৎই একটি ভয়ঙ্কর রাক্ষস আকাশ থেকে নেমে আসে এবং সবার চোখের সামনে রাজকন্যাকে অপহরণ করে উড়ে যায় সমুদ্রের ওপারে এক রহস্যময় দ্বীপে। সে দ্বীপ ছিল অভিশপ্ত—সেখানে ছিল না মানুষ, ছিল না আলো, কেবল অন্ধকার আর ভয়ঙ্কর প্রাণীর হাহাকার।

রাজপ্রাসাদে শোকের ছায়া। রাজা মহাবল ঘোষণা দেন—যে যুবক রাজকন্যাকে উদ্ধার করে আনবে, তার সঙ্গে তার বিবাহ ও রাজ্যের অর্ধেক দেবেন। অনেকেই গিয়েছিল, কেউ ফেরেনি।

ঠিক সেই সময় উদয় হয় এক গরিব কিন্তু সাহসী যুবক, নাম তাঁর অর্জুন। সে ছিল এক জেলে পরিবারের ছেলে, কিন্তু তার বুকে ছিল অজেয় সাহস। অর্জুন নিজের হাতে এক নৌকা বানায়, সঙ্গে নেয় কিছু জাদুকরী ঘাস, মায়ের দেওয়া সিঁদুর ও এক বুড়ি সাধুর দেওয়া তাবিজ।

সমুদ্র পেরিয়ে সে পৌঁছায় রাক্ষসের দ্বীপে। সেখানে সে দেখে রাজকন্যাকে একটি পাথরের প্রাসাদে বন্দি করে রেখেছে রাক্ষস। প্রতি রাতে সে রূপমঞ্জরীর সামনে এসে ভয়ংকর রূপে নাচে, আর বলে, “আমায় বিয়ে না করলে, তুমি পাথর হয়ে যাবে!”

অর্জুন দিনের আলোয় রাজকন্যার সঙ্গে গোপনে কথা বলে। রাতে সে লুকিয়ে থাকে। তারপর হঠাৎ এক রাতে, চাঁদের আলোয় যখন রাক্ষস নিজের রূপ বদলাতে ব্যস্ত, তখন অর্জুন সেই তাবিজ ছুঁড়ে মারে রাক্ষসের বুকে। এক গর্জনে রাক্ষস ধ্বংস হয়। দ্বীপে আলো ফিরে আসে, আর পাথরের মূর্তি হয়ে যাওয়া অনেক মানুষ আবার জীবন্ত হয়ে ওঠে।

অর্জুন রাজকন্যাকে নিয়ে ফিরে আসে নিজের রাজ্যে। রাজা কথা রাখেন। কিন্তু অর্জুন কোনো রাজত্ব নেয় না। সে শুধু বলে—“আমি এই পৃথিবীর সব আলো তার চোখে পেয়েছি।”

রূপমঞ্জরী ও অর্জুনের মিলনে শেষ হয় এক ভয়ানক অধ্যায় আর শুরু হয় এক শান্তির গল্প।

📚 বাংলার হারিয়ে যাওয়া রূপকথা ভালো লাগছে?
👍 লাইক দিন, 💬 মতামত দিন, আর 📤 শেয়ার করুন বন্ধুর সঙ্গে – যেন সবার কাছে ফিরে আসে আমাদের লোককথার জাদু!
✨ পরের গল্পের জন্য চোখ রাখুন! #রূপকথা #বাংলারলোকগাথা #শেয়ারকরুন 💖