লন্ডনের চিঠি
আজহার মুনিম শাফিন, লন্ডন: কুয়াশাভেজা বিকেলে টেমস নদীর শীতল হাওয়াও দমাতে পারছে না উৎসুক মানুষের উন্মাদনাকে। আজ থার্টিফার্স্ট নাইট। ঘড়ির কাঁটা এখনো মধ্যরাত না ছুঁলেও লন্ডনের রাজপথগুলো জানান দিচ্ছে—এক নতুন বছরকে বরণ করে নিতে কতটা মুখিয়ে আছে এই তিলোত্তমা নগরী।
বিকেল থেকেই লন্ডনের বিখ্যাত ‘লন্ডন আই’ (London Eye) এবং বিগ বেন চত্বরে মানুষের ভিড় বাড়তে শুরু করেছে। প্রতি বছরের মতো এবারও এখানে হবে বিশ্বের অন্যতম সেরা আতশবাজি প্রদর্শনী। নিরাপত্তার কড়াকড়ি থাকলেও মানুষের উৎসাহে কোনো ভাটা নেই।
যারা টিকিট সংগ্রহ করতে পেরেছেন, তারা নদীর পাড়ে নিজেদের জায়গা গুছিয়ে নিচ্ছেন। ট্রাফালগার স্কোয়ার থেকে শুরু করে পিকাডিলি সার্কাস—সবখানেই এখন সাজ সাজ রব।
লন্ডনের শপিং পাড়া হিসেবে পরিচিত অক্সফোর্ড ও রিজেন্ট স্ট্রিটে এখন লাখো বাতির রোশনাই। ইংরেজি নববর্ষের কেনাকাটা আর উৎসবের আমেজে পর্যটকদের পদচারণায় মুখর চারপাশ। স্থানীয় পাবগুলোতে বইছে খুশির জোয়ার; চলছে ঐতিহ্যবাহী গান আর আড্ডা।
এখানে থাকা বাংলাদেশি কমিউনিটির মধ্যেও উৎসবের আমেজ কম নয়। ইস্ট লন্ডনের হোয়াইটচ্যাপেল বা ব্রিক লেনের অনেক রেস্তোরাঁয় বিশেষ ডিনারের আয়োজন করা হয়েছে। অনেকেই পরিকল্পনা করছেন পরিবার নিয়ে সেন্ট্রাল লন্ডনের আতশবাজি দেখার। তবে লন্ডনের হাড়কাঁপানো শীতে সবাই নিজেকে মুড়িয়ে নিয়েছেন গরম কাপড়ে।
লন্ডন মেট্রোপলিটন পুলিশ পুরো শহরকে নিরাপত্তার চাদরে ঢেকে ফেলেছে। গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টগুলোতে সিসিটিভি ক্যামেরা আর ড্রোন দিয়ে নজরদারি চালানো হচ্ছে। মেয়রের কার্যালয় থেকে ঘোষণা করা হয়েছে, রাত ১২টা বাজার সাথে সাথে প্রায় ১২ হাজারেরও বেশি আতশবাজি আকাশকে রাঙিয়ে তুলবে।
লন্ডনের সময় এখন বিকেল ৪টা ছুঁইছুঁই। সূর্য প্রায় ডুবে এসেছে, কিন্তু শহরটি যেন মাত্র জেগে উঠতে শুরু করেছে। সবার মনে এখন একটাই অপেক্ষা—কখন বিগ বেনের ঘণ্টা বারোবার বেজে উঠে ঘোষণা করবে, ‘হ্যাপি নিউ ইয়ার ২০২৬’।










