Home First Lead  লালদিয়ায় কনটেইনার টার্মিনাল নির্মাণে ডেনমার্কের বিশাল বিনিয়োগ

 লালদিয়ায় কনটেইনার টার্মিনাল নির্মাণে ডেনমার্কের বিশাল বিনিয়োগ

সংবাদ ব্রিফিংয়ে বিডা চেয়ারম্যান চৌধুরী আশিক মাহমুদ বিন হারুন

বিজনেসটুডে২৪ প্রতিনিধি, ঢাকা: চট্টগ্রামের লালদিয়ায় প্রায় সাত হাজার কোটি টাকার বিনিয়োগে একটি বিশ্বমানের কনটেইনার টার্মিনাল নির্মাণে যাচ্ছে ডেনমার্কভিত্তিক শিপিং ও লজিস্টিকস জায়ান্ট এপি মোলার মায়ের্স্ক (এপিএম)। পাবলিক প্রাইভেট পার্টনারশিপ (পিপিপি) ভিত্তিতে বাস্তবায়িত এই প্রকল্পটি দেশের বন্দর সক্ষমতায় নতুন দিগন্ত খুলে দেবে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) চেয়ারম্যান চৌধুরী আশিক মাহমুদ বিন হারুন।

বুধবার (১২ নভেম্বর) রাজধানীর বেইলি রোডের ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আয়োজিত সংবাদ ব্রিফিংয়ে তিনি বলেন, লালদিয়া টার্মিনাল প্রকল্পটি হবে ৩০ বছরের একটি পিপিপি উদ্যোগ, যার নির্মাণকাজ সম্পন্ন করতে প্রায় তিন বছর সময় লাগবে। প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় ছয় হাজার ৭০০ কোটি টাকা, যা ডেনমার্কের অর্থায়নে বাস্তবায়িত হবে।

তিনি জানান, এই টার্মিনালের ধারণক্ষমতা হবে ৮ থেকে ১০ লাখ কনটেইনার, যা বর্তমানে চট্টগ্রাম বন্দরের সক্ষমতার তুলনায় অনেক বেশি। টার্মিনালটি নির্মিত হলে বন্দরে দ্বিগুণ সংখ্যক জাহাজ ভেড়ানো সম্ভব হবে এবং পণ্য ওঠানামায় সময় উল্লেখযোগ্যভাবে কমে আসবে।

বিডা চেয়ারম্যান বলেন, “ডেনমার্কের কোম্পানিগুলো করপশনমুক্ত কাজের জন্য বিশ্বজুড়ে খ্যাত। আমরা আশা করছি তারা একটি ওয়ার্ল্ড ক্লাস পোর্ট তৈরি করবে, যা বাংলাদেশের রপ্তানি ও আমদানি খাতে নতুন গতি আনবে।” তিনি আরও জানান, “এ প্রকল্পে বাংলাদেশ কোনো অর্থ বিনিয়োগ করছে না। প্রায় ৮০০ মিলিয়ন ডলার প্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগ (এফডিআই) হিসেবে ডেনমার্ক থেকে আসবে।”

চৌধুরী আশিক মাহমুদ বলেন, “ডেনমার্ককে আমরা একটি সবুজ খালি জায়গা দিচ্ছি। চুক্তির পরও মালিকানা থাকবে বাংলাদেশের হাতেই। প্রকল্পের মাধ্যমে আমরা অন্য পোর্টের তুলনায় অনেক বেশি রিটার্ন আশা করছি।”

বিডা চেয়ারম্যান জানান, ডিসেম্বরে কাজ শুরু হলে ২০২৯ সালের মধ্যেই টার্মিনালটি চালু করা সম্ভব হবে। চুক্তি সইয়ের পরপরই ডেনমার্ক প্রাথমিকভাবে ২৫০ কোটি টাকা প্রদান করবে।

গত ২৮ অক্টোবর রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় বাংলাদেশে নিযুক্ত ইইউ রাষ্ট্রদূত মাইকেল মিলারের সঙ্গে বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস জানান, চট্টগ্রাম বন্দরের লালদিয়া টার্মিনাল উন্নয়ন ও পরিচালনার জন্য এপি মোলার-মায়ার্সকের সঙ্গে চুক্তি সইয়ের প্রস্তুতি চলছে।

ডেনমার্কের কোপেনহেগেনভিত্তিক এপি মোলার-মায়ার্সক বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ কনটেইনার শিপিং ও লজিস্টিকস কোম্পানি। ১৯০৪ সালে আর্নল্ড পিটার মোলার ও তার বাবা পিটার মার্স্ক মোলার প্রতিষ্ঠিত এই প্রতিষ্ঠানটি বর্তমানে বৈশ্বিক বাণিজ্য পরিবহনের একটি প্রধান শক্তি।

প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে চট্টগ্রাম বন্দরের সক্ষমতা দ্বিগুণ হবে এবং দেশের আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্যে সময়, ব্যয় ও দক্ষতা—তিন ক্ষেত্রেই বড় ধরনের পরিবর্তন আনবে বলে আশা করছে সরকার।