বিজনেসটুডে২৪ প্রতিনিধি, পার্বতীপুর: রেলওয়ের কেন্দ্রীয় লোকোমোটিভ কারখানার আদলে আরও একটি নতুন লোকোমোটিভ কারখানা নির্মাণের সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হয়েছে।
রোববার (৫ অক্টোবর) পার্বতীপুর রেলওয়ে লোকোমোটিভ কারখানার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করে জানান, শিগগিরই নতুন কারখানা নির্মাণ কাজ শুরু হবে। বর্তমানে চলমান কেন্দ্রীয় লোকোমোটিভ ওয়ার্কশপ–১ (সি এল ডাব্লিউ-১)-এর মতো একই আদলে দ্বিতীয় ইউনিট ‘সি এল ডাব্লিউ-২’ নির্মাণের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।
রেলওয়ে সূত্রে জানা গেছে, নতুন কারখানাটি নির্মাণের প্রক্রিয়া ইতোমধ্যে শুরু হয়েছে এবং কার্যক্রম অনেকটাই অগ্রসর। ২০২৬ সাল নাগাদ আনুষ্ঠানিকভাবে নির্মাণকাজ শুরু হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। পাশাপাশি বিদ্যমান কারখানাটিরও আধুনিকায়ন প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে, যা শিগগিরই বাস্তবায়ন শুরু হতে পারে।
সূত্রের তথ্য অনুযায়ী, নতুন কেন্দ্রীয় লোকোমোটিভ কারখানাটি পার্বতীপুর রেলওয়ে আবাসিক এলাকার প্রায় ২৫ একর জায়গায় নির্মিত হবে। এ লক্ষ্যে গত সেপ্টেম্বরের প্রথম সপ্তাহে রেলপথ মন্ত্রণালয়ের ৫ সদস্যের উচ্চপর্যায়ের একটি টিম পরিদর্শন করে নির্মাণের জন্য স্থান নির্ধারণ করেছে।
নতুন কারখানায় লোকোমোটিভের জিওএইচ, বিশেষ মেরামত, রিলিফ ট্রেন মেরামতসহ নানা ধরনের কাজ সম্পন্ন হবে। কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য নির্মিত হবে আধুনিক মানের ৩টি বহুতল ভবন। প্রকল্পটির আনুমানিক ব্যয় নির্ধারণ করা হয়েছে প্রায় ২ হাজার ৯০০ কোটি টাকা।
বর্তমানে বাংলাদেশ রেলওয়ের মোট লোকোমোটিভ (ইঞ্জিন) সংখ্যা ৩০৬টি, যার মধ্যে প্রতিবছর প্রায় ৫১টি ইঞ্জিন ওভারহোলিংয়ের প্রয়োজন হয়। তবে বর্তমানে পার্বতীপুর কারখানায় বছরে মাত্র ২১টি ইঞ্জিন মেরামত করা সম্ভব হয়।
নতুন কারখানাটি নির্মিত হলে ওভারহোলিংয়ের পরিমাণ দ্বিগুণের বেশি হবে, পাশাপাশি রেলওয়ের সামগ্রিক রক্ষণাবেক্ষণ ও কার্যক্রমেও গতি আসবে। এতে প্রায় ৭৫০ জন কর্মকর্তা-কর্মচারীর কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে, যার মধ্যে নতুন কারখানায় কর্মরত থাকবেন ৬৬৬ জন।
রেলওয়ের যুগ্ম মহাপরিচালক (যান্ত্রিক) মো. রফিকুল ইসলাম জানিয়েছেন, “পার্বতীপুর রেলওয়ে বিভাগে বিদ্যমান কারখানার আদলে আরও একটি কারখানা নির্মাণের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এখন নির্মাণ কাজ বাস্তবায়নের জন্য পরিকল্পনা কার্যক্রম দ্রুত অগ্রসর করা হচ্ছে।”
রেলওয়ের আধুনিকীকরণ ও রক্ষণাবেক্ষণ সক্ষমতা বাড়ানোর মাধ্যমে এই প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে দেশের রেল যোগাযোগ ব্যবস্থায় এক যুগান্তকারী উন্নয়ন ঘটবে বলে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা মনে করছেন।