Home Third Lead তুরস্কের সহায়তায় মুক্ত শহিদুল আলম দেশে ফিরেছেন

তুরস্কের সহায়তায় মুক্ত শহিদুল আলম দেশে ফিরেছেন

 

বিজনেসটুডে২৪ প্রতিনিধি, ঢাকা: ইসরাইলের কারাগার থেকে মুক্তি পাওয়া বাংলাদেশের প্রখ্যাত আলোকচিত্রী ও দৃকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শহিদুল আলম দেশে ফিরেছেন। শনিবার (১১ অক্টোবর) ভোর ৫টার দিকে শহিদুল আলমকে বহনকারী বিমান শাহজালাল বিমানবন্দরে অবতরণ করেছে।
শুক্রবার (১০ অক্টোবর) বিকেলে টার্কিশ এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটে তিনি তুরস্কের ইস্তাম্বুলে পৌঁছান।বাংলাদেশ সময় বিকেল ৫টা ২৫ মিনিটে শহিদুল আলমকে বহনকারী ফ্লাইটটি ইস্তাম্বুল বিমানবন্দরে অবতরণ করে। বিমানবন্দরে তাকে স্বাগত জানান ইস্তাম্বুলে বাংলাদেশের কনসাল জেনারেল মো. মিজানুর রহমান।

প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস শহিদুল আলমের মুক্তি ও নিরাপদ প্রত্যাবর্তনে সহযোগিতার জন্য তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ানের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন।

শহিদুল আলম সম্প্রতি ফিলিস্তিনে ইসরায়েলের নৃশংসতা বন্ধ ও গাজায় আরোপিত নৌ অবরোধ ভাঙার লক্ষ্যে গঠিত ‘ফ্রিডম ফ্লোটিলা কোয়ালিশন’-এর উদ্যোগে গাজামুখী নৌযাত্রায় অংশ নিয়েছিলেন। এই মানবিক অভিযানে বিশ্বের ২১টি দেশের রাজনীতিক, সাংবাদিক, চিকিৎসক ও মানবাধিকারকর্মীরা অংশ নেন।

বুধবার (৮ অক্টোবর) ওই অভিযানের সময় ইসরায়েলি সেনারা আন্তর্জাতিক জলসীমায় গাজামুখী জাহাজ ‘ভিচদান’ (বিবেক) আটক করে এবং সেখানে থাকা সব অধিকারকর্মী ও নাবিককে গ্রেপ্তার করে নিয়ে যায়।

তুরস্কের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, ‘ফ্রিডম ফ্লোটিলা’-তে অংশ নেওয়া ২১ দেশের ১৮ জন তুর্কি নাগরিক ও বিদেশিকে শুক্রবার বিকেলে একটি বিশেষ ফ্লাইটে ইসরায়েল থেকে তুরস্কে ফিরিয়ে আনা হয়েছে। এর আগের দিন বৃহস্পতিবার একই অভিযানে আটক তিনজন তুর্কি সংসদ সদস্যকেও ফিরিয়ে আনা হয়।

তুরস্কের ডেনিজলি প্রদেশের নিউ পাথ পার্টির সাংসদ সেমা সিলকিন ইউন, বুরসার সাংসদ মেহমেত আতমাজা এবং হাতায়ের সাংসদ নেজমেত্তিন চালিশকান শুক্রবার তেলআবিব থেকে আজারবাইজান হয়ে ইস্তাম্বুলে পৌঁছান। বিমানবন্দরে তাদের স্বাগত জানান সমর্থক ও সংবাদকর্মীরা।

সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপে সংসদ সদস্য সেমা সিলকিন ইউন বলেন, “ইসরায়েল আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন করে ভিচদান জাহাজে হামলা চালিয়েছে এবং আমাদের ১৫ ঘণ্টা আটকে রেখে আশদোদ বন্দরে নিয়ে যায়। এরপর ১২ ঘণ্টা পৃথক হোল্ডিং এলাকায় আটক রাখে।”

তিনি বলেন, “আমাদের যাত্রা শুরু হয়েছিল ‘সুমুদ’ (অটলতা) নামের জাহাজ দিয়ে, যা শেষ হয়েছে ‘ভিচদান’ ও ‘ফ্রিডম ফ্লোটিলা’র মাধ্যমে। এই অভিযাত্রা দমন নয়, মানবিক সাহসের প্রতীক।”

হাতায়ের সাংসদ নেজমেত্তিন চালিশকান বলেন, “বিশ্ব আবারও প্রত্যক্ষ করল, ইসরায়েল কীভাবে মানবতার বিরুদ্ধে আচরণ করছে। এখন সময় এসেছে ক্ষুধা ও গণহত্যা বন্ধের জন্য বৈশ্বিক উদ্যোগ জোরদার করার।”

বুরসার সাংসদ মেহমেত আতমাজা বলেন, “আমরা জানতাম এই অভিযানে ঝুঁকি আছে, তবু গাজাবাসীর পাশে দাঁড়াতে পেরে গর্বিত। ইসরায়েল কোনো আইন মানে না, কোনো মানবিকতা বোঝে না। তারা রাষ্ট্র নয়, বরং এক সন্ত্রাসী কাঠামো।”

তিনি আরও বলেন, “যদিও আমরা গাজার অবরোধ ভাঙতে পারিনি, তবু আমরা বিশ্বের মনোযোগ আকর্ষণ করতে সক্ষম হয়েছি—এটাই আমাদের জয়।”