বিজনেসটুডে২৪ ডেস্ক: মুঘল সম্রাট আওরঙ্গজেবের সমাধি সুরক্ষা নিশ্চিত করার দাবি জানিয়ে জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসের কাছে চিঠি লিখলেন ইয়াকুব হাবিবুদ্দিন তুসি। শেষ মুঘল সম্রাট বাহাদুর শাহ জাফরের বংশধর বলে নিজেকে দাবি করেন ইয়াকুব হাবিবুদ্দিন তুসি। আওরঙ্গজেবের সমাধিস্থলের ওয়াকফ সম্পত্তির মুতাওয়াল্লিও তিনি।
চিঠিতে শাহজাদা ইয়াকুব জানিয়েছেন, আওরঙ্গজেবের সমাধিস্থল ‘জাতীয় গুরুত্বের স্মৃতিস্তম্ভ’। ‘প্রাচীন স্মৃতিস্তম্ভ এবং প্রত্নতাত্ত্বিক স্থান এবং ধ্বংসাবশেষ আইন, ১৯৫৮’-এর আওতায় সুরক্ষিত। এই আইনের বিধান অনুসারে, সংরক্ষিত স্মৃতিস্তম্ভটিতে বা এর কাছাকাছি কোনও অননুমোদিত নির্মাণ, পরিবর্তন, ধ্বংস বা খনন করা যায় না। এই জাতীয় কর্মকাণ্ড আইনত ‘অবৈধ এবং শাস্তিযোগ্য’। কিন্তু বর্তমানে সেই আশঙ্কা তৈরি হয়েছে দাবি করে, সমাধিস্থলটি রক্ষার জন্য নিরাপত্তা কর্মীদের মোতায়েন করার দাবি জানিয়েছেন।

ইয়াকুব লিখেছেন, ‘চলচ্চিত্র, সংবাদমাধ্যম এবং সামাজিক প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে ঐতিহাসিক তথ্যাবলীর ভুল উপস্থাপনের কারণে জনসাধারণের অনুভূতি আঘাত করা হয়েছে। ফলে অযৌক্তিক প্রতিবাদ, ঘৃণা প্রচার এবং কুশপুত্তলিকা পোড়ানোর মতো প্রতীকী আগ্রাসনের ঘটনা ঘটেছে।’ বর্তমান এবং ভবিষ্যত প্রজন্মের সুবিধার জন্য সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য রক্ষা এবং সংরক্ষণ করা আন্তর্জাতিক আইন অনুসারে বাধ্যবাধকতামূলক বলে জানিয়েছেন তিনি।
বিশ্ব সাংস্কৃতিক ও প্রাকৃতিক ঐতিহ্য সুরক্ষা সংক্রান্ত ১৯৭২ সালের ইউনেস্কো কনভেনশনে ভারতের স্বাক্ষরের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেছেন, ‘এই ধরণের স্মৃতিস্তম্ভ ধ্বংস, অবহেলা বা বেআইনি পরিবর্তনের যে কোনও কাজ আন্তর্জাতিক বাধ্যবাধকতা লঙ্ঘনের সামিল।’ রাষ্ট্রপুঞ্জের মহাসচিবের কার্যালয়কে বিষয়টি বিবেচনা করে কেন্দ্রীয় সরকার এবং এএসআই-কে আওরঙ্গজেবের সমাধিস্থলের আইনি সুরক্ষা, নিরাপত্তা এবং সংরক্ষণ নিশ্চিত করার নির্দেশ দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন ইয়াকুব।

মুঘল সাম্রাজ্যের ষষ্ঠ সম্রাট আল-সুলতান আল-আজম ওয়াল খাকান আল-মুকাররম আবুল মুজাফফর মুহিউদ-দিন মুহাম্মদ আওরঙ্গজেব পঞ্চম মুঘল সম্রাট শাহজাহানের পুত্র। ১৬৫৮ খ্রিষ্টাব্দে সিংহাসনে আরোহন করেন(রাজ্যাভিষেক ১৩ জুন ১৬৫৯ খ্রি: শালিমার, দিল্লী) করে। (জন্ম: ৪ নভেম্বর ১৬১৮ খ্রি.) মৃত্যুর (মৃত্যু: ৩ মার্চ ১৭০৭ খ্রিষ্টাব্দ।) আগে পর্যন্ত ৪৯ বছর মুঘোল সাম্রাজ্য শাসন করেন। তিনি সম্রাট আওরঙ্গজেব নামেই সর্বাধিক পরিচিত।
মুসলিম জাহানের মহান এই সম্রাটকে ‘বাহাদুর আলমগীর, বাদশা গাজী, প্রথম আলমগীর’ নামেও সম্বোধন করা হতো। তবে সম্রাট আওরঙ্গজেবের সম্পূর্ণ রাজকীয় নাম ছিল- ‘আল-সুলতান আল-আজম ওয়াল খাকান আল-মুকাররম হযরত আবুল মুজাফফর মুই-উদ-দিন মুহাম্মদ আওরঙ্গজেব বাহাদুর আলমগীর প্রথম, বাদশা গাজি, শাহানশাহ-ই-সালতানাত-আল-হিন্দিয়া ওয়া আল মুগলিয়া।’










