Home Third Lead মৃত্যুকূপ থেকে জীবিত উদ্ধার সাজিদ, ফায়ার সার্ভিসের বীরত্বে স্বস্তির নিঃশ্বাস

মৃত্যুকূপ থেকে জীবিত উদ্ধার সাজিদ, ফায়ার সার্ভিসের বীরত্বে স্বস্তির নিঃশ্বাস

সাজিদ

বিজনেসটুডে২৪ প্রতিনিধি, রাজশাহী: সকল শঙ্কা আর উৎকণ্ঠাকে মিথ্যে প্রমাণ করে অবশেষে মৃত্যুর দুয়ার থেকে ফিরে এলো শিশু সাজিদ। দীর্ঘ প্রায় ৩২ ঘণ্টার এক শ্বাসরুদ্ধকর অভিযানের পর আজ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় তাকে জীবিত উদ্ধার করতে সক্ষম হয়েছে ফায়ার সার্ভিসের উদ্ধারকারী দল। বৃহস্পতিবার রাত ৮টা ৫০ মিনিট থেকে ৯টা ০৭ মিনিটের মধ্যবর্তী সময়ে তাকে নিরাপদে ওপরে তুলে আনা হয়।

সাজিদকে জীবিত উদ্ধারের খবর ছড়িয়ে পড়লে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হাজারো মানুষের মধ্যে স্বস্তির নিঃশ্বাস নেমে আসে। সমস্বরে উচ্চারিত হয় সৃষ্টিকর্তার প্রতি কৃতজ্ঞতা এবং উদ্ধারকর্মীদের প্রতি ভালোবাসা।

যেভাবে সফল হলো এই দীর্ঘ অভিযান
ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের নেতৃত্বে চলা এই অভিযানটি ছিল অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ ও চ্যালেঞ্জিং। মাটির গভীরে আটকে থাকা শিশুটিকে অক্ষত অবস্থায় ফিরিয়ে আনতে উদ্ধারকর্মীরা দিনরাত এক করে পরিশ্রম করেছেন। ফায়ার সার্ভিসের পাশাপাশি পুলিশ বাহিনী এবং স্থানীয় প্রশাসনের সর্বাত্মক সহযোগিতায় এই জটিল অভিযানটি সফলতার মুখ দেখে।

উদ্ধারের পরপরই কালবিলম্ব না করে সাজিদকে দ্রুত তানোর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে বর্তমানে তাকে নিবিড় পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, দীর্ঘ সময় আটকে থাকায় তার শারীরিক ও মানসিক ধকল গেছে, তবে সে জীবিত আছে—এটাই সবচেয়ে বড় সংবাদ। তার বিস্তারিত শারীরিক অবস্থার বিষয়ে চিকিৎসকরা পরবর্তীতে ব্রিফ করবেন বলে জানানো হয়েছে।

ফায়ার সার্ভিসের অদম্য সাহসিকতা ও প্রশংসনীয় ভূমিকা
সাজিদকে উদ্ধারের এই ঘটনা ফায়ার সার্ভিসের সদস্যদের পেশাদারিত্ব ও মানবিকতার এক অনন্য দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে। প্রায় ৩২ ঘণ্টা ধরে চলা এই অভিযানে তারা এক মুহূর্তের জন্যও হাল ছাড়েননি। মাটির গভীর অন্ধকার গর্তে আটকে থাকা শিশুটিকে অক্সিজেন সরবরাহ করা থেকে শুরু করে, তাকে নিরাপদে বের করে আনার জন্য প্রতিটি পদক্ষেপ ছিল অত্যন্ত সুপরিকল্পিত।

ঘটনাস্থলে উপস্থিত প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা নিজেদের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে, আধুনিক যন্ত্রপাতি ও বুদ্ধিমত্তার সমন্বয়ে এই অভিযান পরিচালনা করেছেন। তাদের চোখে-মুখে ছিল কেবল একটিই লক্ষ্য—সাজিদকে মায়ের কোলে ফিরিয়ে দেওয়া। ক্লান্তিকে উপেক্ষা করে তাদের এই নিরলস প্রচেষ্টার ফলেই আজ একটি প্রাণ অকালে ঝরে যাওয়া থেকে রক্ষা পেল।

স্থানীয় জনতা ফায়ার সার্ভিসের এই বীরত্বপূর্ণ কাজের ভূয়সী প্রশংসা করেছেন। প্রশাসনের পক্ষ থেকেও উদ্ধারকারী দলের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করা হয়েছে।

বর্তমান পরিস্থিতি
হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, সাজিদের প্রাথমিক চিকিৎসা চলছে। তার শরীরে কোনো গুরুতর আঘাত আছে কি না, তা নিশ্চিত হতে বিভিন্ন স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হচ্ছে। সাজিদের পরিবারের সদস্যদের চোখে এখন আনন্দাশ্রু। দীর্ঘ ৩২ ঘণ্টার বিভীষিকা শেষে সন্তানকে ফিরে পেয়ে তারা উদ্ধারকারী দল ও দেশবাসীর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন।