আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
জাপানের রাজনৈতিক ইতিহাসে নতুন অধ্যায় রচিত হতে যাচ্ছে। শাসক দল লিবারেল ডেমোক্র্যাটিক পার্টি (এলডিপি) নেতৃত্ব নির্বাচনে জয়ী হয়ে সানায়ে তাকাইচি দেশটির প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী হওয়ার দ্বারপ্রান্তে দাঁড়িয়েছেন।
এলডিপির সভাপতি পদে শেষ রাউন্ডে তাকাইচি পেয়েছেন ১৮৫ ভোট, আর প্রতিদ্বন্দ্বী শিনজিরো কোইজুমি পেয়েছেন ১৫৬ ভোট। দলের নেতৃত্ব পাওয়ায় আগামী ১৫ অক্টোবর পার্লামেন্টে তাকাইচির প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নির্বাচিত হওয়া এখন প্রায় নিশ্চিত।
ঐতিহাসিক মুহূর্ত
৬৩ বছর বয়সী সানায়ে তাকাইচি জাপানের নারীদের জন্য এক ঐতিহাসিক মাইলফলক স্থাপন করলেন। দীর্ঘ রাজনৈতিক ক্যারিয়ারে তিনি বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পালন করেছেন। এর মধ্যে অভ্যন্তরীণ বিষয়ক ও যোগাযোগ মন্ত্রণালয় এবং অর্থনৈতিক নিরাপত্তা বিষয়ক মন্ত্রণালয় উল্লেখযোগ্য।
রক্ষণশীল ভাবধারা
রক্ষণশীল ও জাতীয়তাবাদী অবস্থানের জন্য পরিচিত তাকাইচি নারীর পদবি পরিবর্তনের স্বাধীনতা ও কিছু সামাজিক সংস্কারের বিরোধিতা করে আসছেন। তার নেতৃত্বে নারী অধিকার কতটা প্রসার পাবে—তা নিয়ে দেশে আলোচনা শুরু হয়েছে। তবে নিরাপত্তা ও পররাষ্ট্রনীতিতে তিনি যুক্তরাষ্ট্র–জাপান জোটকে অটুট রাখতে এবং সংবিধান সংস্কারের মাধ্যমে সামরিক ক্ষমতা বাড়ানোর পক্ষে।
চ্যালেঞ্জ সামনে
জাপানের অর্থনীতি, জনসংখ্যা হ্রাস, শ্রমবাজার সংকট ও আন্তর্জাতিক অস্থিরতা—সব মিলিয়ে তাকাইচির সামনে রয়েছে বড় চ্যালেঞ্জ। এলডিপি সাম্প্রতিক বছরগুলোতে জনপ্রিয়তা হারাচ্ছে, ফলে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা বজায় রাখাও হবে একটি কঠিন কাজ।
প্রতিক্রিয়া
জাপানসহ আন্তর্জাতিক মহল এই ঘটনাকে স্বাগত জানিয়েছে। তবে পর্যবেক্ষকরা মনে করছেন, নারী প্রধানমন্ত্রী হওয়ার ঐতিহাসিক মুহূর্ত নারীর ক্ষমতায়নের নতুন দুয়ার খুললেও তাকাইচির নীতিনির্ধারণ কতটা সামাজিক পরিবর্তন আনবে তা সময়ই বলে দেবে।
বহু বছর ধরে পুরুষপ্রধান রাজনীতির ছায়ায় থাকা জাপানে প্রথমবারের মতো একজন নারী প্রধানমন্ত্রী হতে চলেছেন—এটি নিঃসন্দেহে এক বড় রাজনৈতিক ও সামাজিক পরিবর্তনের সূচনা।