Home আন্তর্জাতিক ব্যাংককের বিমানবন্দরে অন্তর্বাসে সাপ লুকিয়ে পাচারের চেষ্টা: শ্রীলঙ্কান নাগরিক আটক

ব্যাংককের বিমানবন্দরে অন্তর্বাসে সাপ লুকিয়ে পাচারের চেষ্টা: শ্রীলঙ্কান নাগরিক আটক

আন্তর্জাতিক ডেস্ক: থাইল্যান্ডের রাজধানী ব্যাংককের সুয়ান্নাভুমি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অন্তর্বাসে সাপ লুকিয়ে পাচারের সময় এক শ্রীলঙ্কান নাগরিককে আটক করেছে থাই কর্তৃপক্ষ। ধৃত ব্যক্তি ‘শেহান’ নামের এক চিহ্নিত বন্যপ্রাণী পাচারকারী। তার অন্তর্বাস থেকে উদ্ধার করা হয়েছে তিনটি বল পাইথন প্রজাতির সাপ।

থাইল্যান্ড ওয়াইল্ডলাইফ এনফোর্সমেন্ট নেটওয়ার্ক  এক ফেসবুক পোস্টে জানায়, বুধবার ব্যাংকক থেকে একটি আন্তর্জাতিক ফ্লাইট ধরার প্রস্তুতির সময় শেহানকে থামানো হয়। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে বিমানবন্দরের নিরাপত্তা ও বন বিভাগ যৌথভাবে নজরদারি চালায়। প্রাথমিকভাবে ব্যাগ স্ক্যানিংয়ে কিছু না পাওয়ায় তার দেহ তল্লাশি করা হয়, এবং তখনই অন্তর্বাসে বিশেষ নেট ব্যাগে লুকানো অবস্থায় তিনটি বল পাইথন সাপের খোঁজ মেলে।

বল পাইথন সাপ CITES-এর (Convention on International Trade in Endangered Species of Wild Fauna and Flora) দ্বিতীয় পরিশিষ্টে তালিকাভুক্ত একটি সংরক্ষিত প্রজাতি। এর আমদানি-রপ্তানি করতে হলে অবশ্যই আন্তর্জাতিক অনুমতিপত্র প্রয়োজন।

থাইল্যান্ডের আইনে বন্যপ্রাণী অবৈধভাবে রপ্তানির চেষ্টা করলে সর্বোচ্চ ১০ বছর কারাদণ্ড, ১০ লাখ বাথ (প্রায় ৩০ হাজার মার্কিন ডলার) পর্যন্ত জরিমানা বা উভয় দণ্ড হতে পারে। পাশাপাশি, কাস্টমস অনুমতি ছাড়াই পণ্য রপ্তানির অপরাধে এক বছর কারাদণ্ড বা ২০ হাজার বাথ জরিমানা হতে পারে।

শেহান কেবল এই একবার নয়, এর আগেও বন্যপ্রাণী পাচারে জড়িত ছিলেন। গত বছর শ্রীলঙ্কার রাজধানী কলম্বোতে এক অভিযানে তাকে আটক করা হয়েছিল। সে সময় তার কাছ থেকে উলফ, মিয়ারক্যাট, ককাটু, সুগার গ্লাইডার, সজারু ও গিরগিটির মতো প্রাণী উদ্ধার করা হয়েছিল।

সূত্র অনুযায়ী, এবার তিনি ব্যাংকক থেকে থাই এয়ারওয়েজের একটি ফ্লাইটে দেশত্যাগের প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। তার লাগেজে কিছু না পাওয়া গেলেও দেহ স্ক্যান এবং তল্লাশিতে এই সাপগুলো পাওয়া যায়।

থাই কর্তৃপক্ষ তাকে হেফাজতে রেখে জিজ্ঞাসাবাদ চালিয়ে যাচ্ছে। তদন্তকারীরা মনে করছেন, আন্তর্জাতিক পাচারচক্রের অংশ হিসেবেই শেহান এই বিপজ্জনক ও বিরল প্রজাতির প্রাণীগুলো পাচার করছিলেন।

থাইল্যান্ড বর্তমানে দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার মধ্যে বন্যপ্রাণী পাচারের অন্যতম বড় ট্রানজিট হাব হিসেবে চিহ্নিত। সম্প্রতি এক বেসরকারি পরিবেশ সংস্থা জানিয়েছে, গত তিন বছরে থাইল্যান্ড-ভারত আকাশপথ ব্যবহার করে সাত হাজারেরও বেশি জীবিত ও মৃত প্রাণী পাচারের সময় আটক হয়েছে।

মাত্র কয়েকদিন আগেই ভারতের কাস্টমস বিভাগ থাইল্যান্ড থেকে ফেরা যাত্রীদের কাছ থেকে অন্তত ১৬টি জীবন্ত সাপ জব্দ করে। এ ঘটনাগুলো এশিয়াজুড়ে বন্যপ্রাণী পাচার রোধে নতুন করে উদ্বেগের সৃষ্টি করেছে।