বিজনেসটুডে২৪ প্রতিনিধি, ঢাকা: সম্প্রতি বাংলাদেশ সফর করেছে পাকিস্তানের একটি উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধিদল, মূল উদ্দেশ্য সিমেন্ট খাতে সম্ভাব্য দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতা এবং বিনিয়োগ ও প্রযুক্তি বিনিময় খুঁজে বের করা। সফরে বাংলাদেশের ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দ, শিল্প সংশ্লিষ্ট সংগঠন ও সরকারি কর্মকর্তাদের সঙ্গে বিস্তৃত আলোচনা হয়। দুই দেশের অংশগ্রহণকারীরা সিমেন্ট শিল্পের বর্তমান পরিস্থিতি, চ্যালেঞ্জ এবং সম্ভাব্য যৌথ উদ্যোগ নিয়ে মনোনিবেশ করেন।
বাংলাদেশের প্রতিনিধিদল নেতৃত্ব দেন বাংলাদেশ সিমেন্ট ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিসিএমএ)-এর সভাপতি ও প্রিমিয়ার সিমেন্ট মিলস পিএলসি’র ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আমিরুল হক। এছাড়া সাবেক সভাপতি মোস্তফা কামাল, ফার্স্ট ভাইস প্রেসিডেন্ট ইমরান করিম, কোষাধ্যক্ষ মশিউর রহমান, নির্বাহী কমিটির সদস্য অভিমন্যু সাহা এবং নির্বাহী পরিচালক শঙ্কর কুমার রায় অংশ নেন। পাকিস্তান পক্ষ থেকে উপস্থিত ছিলেন নোমান খট্টক মাইনস অ্যান্ড মিনারেলসের ইঞ্জিনিয়ার আওরঙ্গজেব খান, নাদিম এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী ফররুখ ইকবাল, খাদিম ইন্ডাস্ট্রির ব্যবস্থাপনা পরিচালক তামুর আকবর, কেএনকে (প্রা.) লিমিটেডের ব্যবসা উন্নয়ন প্রধান ইফতিখার এ আযান এবং নাবিল মার্বেলের স্বত্বাধিকারী নাবিল আহমেদ।
আলোচনায় মূল গুরুত্ব পেয়েছে বাংলাদেশের সিমেন্ট শিল্পে পাকিস্তানি কাঁচামাল আমদানি, যৌথ উদ্যোগে বিনিয়োগ, প্রযুক্তি হস্তান্তর ও দক্ষতা উন্নয়ন। বিশেষ করে কাঁচামালের আমদানির মাধ্যমে বাংলাদেশের উৎপাদন খরচ কমানো এবং সরবরাহ চেইন আরও কার্যকর করা সম্ভব বলে ধারণা করা হচ্ছে। পাকিস্তানি প্রযুক্তি ও উৎপাদন দক্ষতা শেয়ার করলে বাংলাদেশের সিমেন্ট উৎপাদন খাতে আধুনিকীকরণ এবং গুণগত মান উন্নয়নের সম্ভাবনা রয়েছে।
দুই পক্ষই যৌথ উদ্যোগ ও বিনিয়োগের ক্ষেত্রে নতুন বাজার সৃষ্টি, কর্মসংস্থান বৃদ্ধি এবং সিমেন্ট খাতে প্রতিযোগিতা ও মান উন্নয়নের সুযোগ দেখেছেন। এছাড়া তারা ব্যবসায়িক পরিবেশ সহজতর করার মাধ্যমে খরচ কমানো এবং আমদানি-রপ্তানি প্রক্রিয়া দ্রুত করার বিষয়েও গুরুত্ব দিয়েছেন। আলোচনায় এই সিদ্ধান্তে পৌঁছানো হয় যে, প্রস্তাবিত বিষয়গুলো বাস্তবায়নের জন্য একটি যৌথ ওয়ার্কিং গ্রুপ গঠন করা হবে।
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এই ধরনের দ্বিপাক্ষিক উদ্যোগ বাংলাদেশের সিমেন্ট শিল্পকে শুধু দেশীয় চাহিদা পূরণে সাহায্য করবে না, বরং আন্তর্জাতিক বাজারেও বাংলাদেশের অবস্থান শক্তিশালী করতে পারে। পাকিস্তানের কাঁচামাল ও প্রযুক্তি সহায়তা বাংলাদেশের শিল্পে নতুন বিনিয়োগ আকৃষ্ট করতে পারে, যা দীর্ঘমেয়াদে অর্থনৈতিক বৃদ্ধির একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হতে পারে।
এই সফর দুই দেশের মধ্যে শিল্প এবং বাণিজ্যিক সম্পর্ককে আরও দৃঢ় করার দিক নির্দেশ করছে এবং ভবিষ্যতে সিমেন্ট খাতে দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতার নতুন সম্ভাবনার পথ উন্মোচন করেছে।