বিজনেসটুডে২৪ প্রতিনিধি, ফেনী: ফেনীর পরশুরামে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) গুলিতে মিল্লাত হোসেন (২১) নামে এক বাংলাদেশি যুবক নিহত হয়েছেন। এই ঘটনায় গুরুতর আহত হয়েছেন একই এলাকার মো. আফছার (৩১)।
ঘটনাটি ঘটেছে বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত আনুমানিক ১২টার দিকে, উপজেলার বাঁশপদুয়া সীমান্তের গুথুমা বিওপির আওতাধীন ২১৬৪/৩-এস সীমান্ত পিলারের কাছাকাছি এলাকায়। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) ৪ ফেনী ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোহাম্মদ মোশারফ হোসেন।
নিহত মিল্লাত হোসেন পরশুরাম পৌরসভার বাঁশপদুয়া গ্রামের ইউছুফ মিয়ার ছেলে। আহত আফছার একই এলাকার মৃত এয়ার আহম্মদের সন্তান।
কী ঘটেছিল সেদিন রাতে?
স্থানীয় ও বিজিবি সূত্রে জানা গেছে, রাতের আঁধারে মিল্লাত ও আফছার সীমান্ত পিলার অতিক্রম করে কাঁটাতারের কাছে পৌঁছালে ভারতীয় বিএসএফ সদস্যরা গুলি ছোড়ে। এতে উভয়েই গুলিবিদ্ধ হন। তাদের দ্রুত উদ্ধার করে প্রথমে পরশুরাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এবং পরে ফেনীর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে নেওয়ার পথেই মিল্লাত হোসেন মারা যান। আহত আফছার বর্তমানে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
বিজিবির প্রতিক্রিয়া
বিজিবির অধিনায়ক মোহাম্মদ মোশারফ হোসেন জানান, ঘটনাস্থলটি চোরাকারবারি-সংক্রান্ত কার্যক্রমের জন্য পরিচিত। তবে কী কারণে মিল্লাত ও আফছার সীমান্ত অতিক্রম করেছিলেন, সে বিষয়ে এখনও নিশ্চিত হওয়া যায়নি। বিষয়টি তদন্তাধীন রয়েছে।
তিনি বলেন, “এ ধরনের গুলিবর্ষণ কোনোভাবেই কাম্য নয়। আমরা বিষয়টি গুরুত্বসহকারে দেখছি এবং ইতোমধ্যেই ভারতের বিএসএফের কাছে কড়া প্রতিবাদ জানাতে একটি লিখিত প্রতিবাদলিপি প্রস্তুত করেছি।”
পুরনো স্মৃতি ও উদ্বেগ
উল্লেখ্য, ২০২২ সালের ১৩ নভেম্বর একই বাঁশপদুয়া সীমান্তে ভারতীয় বিএসএফ সদস্যরা বাংলাদেশের অভ্যন্তরে ঢুকে স্থানীয় কৃষক মেজবাহারকে গুলি করে হত্যা করে। সে সময়ও মৃতদেহ ফেরত পেতে ছয় দিন অপেক্ষা করতে হয়েছিল তার পরিবারকে।
সীমান্তে সহিংসতা নিয়ে উদ্বেগ
পরপর এমন ঘটনায় সীমান্তবাসীদের মধ্যে চরম উদ্বেগ ও আতঙ্ক তৈরি হয়েছে। মানবাধিকার সংগঠনগুলোও এ ধরনের গুলিবর্ষণের ঘটনাকে অমানবিক ও আন্তর্জাতিক নিয়মের পরিপন্থী বলে উল্লেখ করেছে।