Home সারাদেশ স্ত্রী ও শাশুড়িকে গলা কেটে হত্যা, খুনি পলাতক

স্ত্রী ও শাশুড়িকে গলা কেটে হত্যা, খুনি পলাতক

নিহত চম্পা ও ফরিদা।

বিজনেসটুডে২৪ প্রতিনিধি, পিরোজপুর: ভান্ডারিয়ার ধাওয়া গ্রামে স্ত্রী ও শাশুড়িকে গলা কেটে হত্যা করেছেন এক চা বিক্রেতা। নিহতদের শরীরে আগুন দেওয়ারও আলামত পাওয়া গেছে। হত্যাকাণ্ডের পর থেকে অভিযুক্ত ব্যক্তি পলাতক রয়েছেন।

নিহতরা হলেন, ফরিদা বেগম (৬৫) এবং তার মেয়ে চম্পা বেগম (৩২)। সোমবার রাত ১১টার দিকে উপজেলার ধাওয়া গ্রামে এ ভয়াবহ ঘটনা ঘটে।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, অভিযুক্ত ওবায়দুল হক বাদল খান (৪৫) এর আগেও তিনবার বিয়ে করেছিলেন। ১৬ এপ্রিল তিনি তার প্রতিবেশী চাচাতো বোন চম্পাকে বিয়ে করে নতুন সংসার শুরু করেন। বিয়ের পর তিনি চম্পা, শাশুড়ি ফরিদা এবং প্রথম স্ত্রীর ছেলে ইয়াসিনকে নিয়ে একটি বাড়িতে থাকতেন।

ঘটনার রাতে ছেলে ইয়াসিন ঘর থেকে পালিয়ে এক প্রতিবেশীকে জানায়, তার বাবা সবাইকে হত্যা করেছেন। পরে স্থানীয় নাছিমা বেগম গিয়ে মৃত অবস্থায় চম্পা ও ফরিদার দগ্ধ মরদেহ দেখতে পান। তিনি নিজের উদ্যোগে আগুন নেভান এবং পুলিশকে খবর দেন।

হত্যাকাণ্ডের কারণ এখনো স্পষ্ট নয়। পরিবার কিংবা স্থানীয়রা কেউই নিশ্চিত করে কিছু বলতে পারেননি। ঘটনার পর থেকে শিশু ইয়াসিন নিখোঁজ, যার কাছ থেকে হত্যার সূত্রপাত সম্পর্কে কিছু জানা যেতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

পুলিশ, ডিবি ও সিআইডি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। ওবায়দুল ধাওয়া বাজারে একটি চায়ের দোকান চালাতেন। ভান্ডারিয়া থানার ওসি আহমদ আনওয়ার জানান, প্রাথমিকভাবে এটি পারিবারিক বিরোধ বলেই ধারণা করা হচ্ছে। তবে সব সম্ভাবনা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

এ ঘটনার পর ধাওয়া গ্রামে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। স্থানীয়দের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ বিরাজ করছে। তারা অবিলম্বে ঘাতক বাদল খানের গ্রেফতার দাবি করেছেন।

সমাজ বিজ্ঞানিদের মতে, এই হত্যাকাণ্ড শুধুমাত্র একটি পারিবারিক কলহ নয়, এটি আমাদের সমাজে ক্রমবর্ধমান নৈতিক অবক্ষয়ের একটি নির্মম উদাহরণ। যেখানে মানুষের মূল্যবোধ, সহনশীলতা ও সম্পর্কের প্রতি দায়বদ্ধতা ভয়ানকভাবে বিলুপ্তির পথে। একজন মানুষ কীভাবে নিজের স্ত্রী ও শাশুড়িকে নির্মমভাবে গলা কেটে হত্যা করতে পারেএ প্রশ্ন শুধু আইন বা তদন্তের নয়, এটি আমাদের সামাজিক ও মানবিক ব্যবস্থার ওপরও এক গভীর আঘাত।

স্থানীয়রা বলেছেন, পরপর একাধিক বিয়ে, পারিবারিক দায়িত্বহীনতা, এবং হিংস্র মনোবৃত্তি আজ যে কোথায় গিয়ে দাঁড়িয়েছে, তা এই ঘটনার মধ্য দিয়ে আরও একবার স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। এখন সময় এসেছে ব্যক্তি, পরিবার ও সমাজ সব জায়গায় নৈতিক শিক্ষাকে গুরুত্ব দিয়ে দেখার। নাহলে এমন আত্মঘাতী ট্র্যাজেডি আরও বাড়বে।