Home স্বাস্থ্য সামাজিক সম্পর্ক বৃদ্ধির সঙ্গে স্বাস্থ্যকর বয়স বৃদ্ধিও ধীর হয়: গবেষণা

সামাজিক সম্পর্ক বৃদ্ধির সঙ্গে স্বাস্থ্যকর বয়স বৃদ্ধিও ধীর হয়: গবেষণা

বিজনেসটুডে২৪ ডেস্ক: সম্প্রতি প্রকাশিত একটি গবেষণায় জানা গেছে, আমাদের সামাজিক জীবন কেবল মানসিক স্বাস্থ্যের জন্যই নয়, শরীরের জন্যও গুরুত্বপূর্ণ। যারা পরিবার, বন্ধু বা সম্প্রদায়ের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ ও সক্রিয় সম্পর্ক বজায় রাখে, তারা বয়স বাড়ার প্রক্রিয়াকে ধীর করতে পারে এবং দীর্ঘ সময় সুস্থ থাকতে পারে।

গবেষণার আলোচনায় প্রখ্যাত বয়সবিজ্ঞানী প্রফেসর লুইজি ফেরুচ্চি বলেন, “বয়সবিজ্ঞানকে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাওয়ার মূল চাবিকাঠি হলো বোঝা, কিভাবে জীবনধারার বিভিন্ন দিক বিশেষ করে সামাজিক সংযোগ বয়স ধীর করতে সাহায্য করে।”

গবেষণায় যুক্তরাষ্ট্রে দুই হাজারের বেশি প্রাপ্তবয়স্কের সামাজিক সম্পর্কের দৃঢ়তা, ধারাবাহিকতা ও সক্রিয়তা পরিমাপ করা হয়েছে। পরিবার, বন্ধু, সম্প্রদায় বা ধর্মীয় কর্মকাণ্ডে অংশগ্রহণ এবং মানসিক সহায়তা এই সবকে একত্র করে তৈরি করা হয়েছে সামাজিক সমন্বিত সুবিধা বা CSA নামক সূচক।

ফলাফল দেখিয়েছে, যারা বেশি সামাজিকভাবে সংযুক্ত এবং সমর্থিত ছিলেন, তাদের শরীরে বয়সজনিত পরিবর্তন ধীর হয়েছে এবং প্রদাহের মাত্রাও কম ছিল। যদিও স্বল্পমেয়াদি মানসিক চাপ বা হরমোনের পরিবর্তনের সঙ্গে সামাজিক সংযোগের সরাসরি সম্পর্ক তেমন স্পষ্ট হয়নি।

গবেষকরা বলছেন, “মানুষ জন্ম থেকেই সামাজিক প্রাণী। হাজার হাজার বছর ধরে আমাদের পূর্বপুরুষরা একে অপরের সঙ্গে কাজ করে বেঁচে থাকতে শিখেছে। খাদ্য খোঁজা, নিরাপত্তা নিশ্চিত করা এবং মানসিক সুরক্ষা সবই সামাজিক সংযোগের ওপর নির্ভর করত। তাই আজও আমাদের শরীর এবং মন সুসংগঠিত সামাজিক জীবনে স্বাভাবিকভাবে উন্নতি করে।”

গবেষণা আরও দেখিয়েছে, শিক্ষাগত, অর্থনৈতিক এবং সামাজিক অবস্থানও বয়স বৃদ্ধির সঙ্গে সম্পর্কিত। উচ্চ শিক্ষা, ভালো আয় বা বিশেষ সামাজিক অবস্থান অনেক সময় বয়স ধীর করতে এবং শরীরের প্রদাহ কম রাখতে সাহায্য করে।

বিশেষজ্ঞদের মতে, এর দুটি শিক্ষা রয়েছে। প্রথমত, সামাজিক নীতি এবং শিক্ষা ও সুযোগ বৃদ্ধি করে মানুষের জীবনমান উন্নয়ন করা জরুরি। দ্বিতীয়ত, ব্যক্তিগতভাবে সক্রিয় সামাজিক জীবন বজায় রাখা বন্ধু ও পরিবারের সঙ্গে সংযুক্ত থাকা, পরস্পরের সহায়তা করা ও সুস্থ বয়স বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ।

প্রফেসর জেমস গুডউইন, লাফবোরো বিশ্ববিদ্যালয়ের বয়সবিজ্ঞান বিষয়ে ভিজিটিং অধ্যাপক বলেন, “সামাজিক বিজ্ঞান ও জেনেটিক্স একত্রিত হয়ে আমাদের শেখাচ্ছে শুধু কিভাবে বয়স হয় না, কিভাবে আমরা সুস্থভাবে বয়স বাড়াতে পারি।”

নতুন এই গবেষণা স্পষ্ট বার্তা দিচ্ছে, বন্ধু, পরিবার ও সম্প্রদায়ের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সংযোগ আমাদের মানসিক ও শারীরিক স্বাস্থ্যের জন্য অপরিহার্য। সুস্থ, আনন্দময় এবং দীর্ঘায়ু জীবন শুধুমাত্র ব্যক্তিগত যত্ন নয়, সামাজিক বন্ধনের মধ্য দিয়েও সম্ভব।