বিজনেসটুডে২৪ প্রতিনিধি, সিলেট: সিলেট নগরের রাজনীতিতে এক হৃদয়বিদারক ঘটনার জন্ম দিয়েছে একই দলের কর্মীদের হাতে মারধরের শিকার হওয়ার অভিযোগ। স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা এমদাদুল ইসলাম মিজানকে শুধু মারধর করাই নয়, বরং তার মাথা ন্যাড়া করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভিডিও ছড়িয়ে দেওয়ার ঘটনা তোলপাড় সৃষ্টি করেছে।
আহত মিজান সিলেট বিমানবন্দর থানা স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম আহ্বায়ক। তিনি জানান, গত বুধবার বিকেলে নগরের আম্বরখানা এলাকা থেকে ১০ থেকে ১২ জন যুবক তাকে জোরপূর্বক ধরে দর্শনদেউরি এলাকায় নিয়ে যান। সেখানে এক প্রবাসী নারীর ব্যাগ ছিনতাইয়ের অভিযোগ তুলে তাকে বেধড়ক মারধর করা হয়। এরপর তার সঙ্গে থাকা টাকা ও মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নেওয়ার পর মাথা ন্যাড়া করে দেওয়া হয় এবং অপমানজনক একটি ভিডিও ধারণ করে তা ফেসবুকে ছড়িয়ে দেওয়া হয়।
মিজান দাবি করেন, এই হামলাকারীরা বিএনপি, যুবদল ও স্বেচ্ছাসেবক দলের কর্মী। তাদের সঙ্গে দুই বছর আগের একটি ব্যক্তিগত বিরোধকে কেন্দ্র করেই এই ভয়াবহ হামলা চালানো হয়েছে। বর্তমানে তিনি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রয়েছেন এবং দলের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাদের কাছে বিচার চেয়েছেন।
এ ঘটনায় দুঃখ ও উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন সিলেট মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি মাহবুবুল হক চৌধুরী। তিনি বলেন, “বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। তদন্ত শেষে আমরা আনুষ্ঠানিকভাবে প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে বিস্তারিত জানাবো।”
অন্যদিকে, কেন্দ্রীয় বিএনপির সহ সাংগঠনিক সম্পাদক মিফতাহ সিদ্দিকী জানান, “বিষয়টি আমাদের নজরে এসেছে। সিলেট মহানগর বিএনপির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক তদন্ত করছেন।”
তবে এ বিষয়ে সিলেট মহানগর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি রেজাউল হাসান কয়েস লোদীর সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তার মোবাইল ফোন রিসিভ হয়নি।
ঘটনার একটি ভিডিও ইতোমধ্যেই সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হয়ে গেছে। ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, এক যুবককে মারধর করার পাশাপাশি তার মাথা কামিয়ে দেওয়া হচ্ছে। এই দৃশ্য রাজনৈতিক অঙ্গনে যেমন আলোড়ন তুলেছে, তেমনি সাধারণ মানুষের মাঝেও উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে।
এই ঘটনা কেবল একজন রাজনৈতিক কর্মীর উপর বর্বর আচরণের দৃষ্টান্ত নয়, বরং তা দলীয় শৃঙ্খলার অভ্যন্তরীণ সংকটকেও প্রকাশ করেছে।