বিজনেসটুডে২৪ প্রতিনিধি, পটিয়া ( চট্টগ্রাম): পটিয়া উপজেলার হাইদগাঁও উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শ্যামল কান্তি দে স্কুলে যাওয়ার পথে সন্ত্রাসী হামলার শিকার হয়েছেন। বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে পৌর এলাকার বিওসি রোডে এই ঘটনা ঘটে।
প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাতে জানা যায়, প্রধান শিক্ষক শ্যামল দে সিএনজিচালিত অটোরিকশায় বিদ্যালয়ে যাচ্ছিলেন। পথে ছয় থেকে সাতজন মুখোশধারী সন্ত্রাসী অটোরিকশার পথরোধ করে প্রধান শিক্ষককে নামিয়ে বেধড়ক মারধর করেন। হামলাকারীদের হাতে দেশীয় অস্ত্রও ছিল। গুরুতর আহত অবস্থায় শ্যামল দে রক্তাক্ত হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন।
সহকারী শিক্ষকরা উদ্ধার করেছেন
শ্যামল দে-র সঙ্গে বিদ্যালয়ের আরও দুজন শিক্ষক ছিলেন – তানিয়া ইয়াসমিন ও প্রান্ত বড়ুয়া। তারা চিৎকার করলে স্থানীয়রা এগিয়ে আসেন এবং আহত প্রধান শিক্ষককে উদ্ধার করে বিদ্যালয়ে নিয়ে যান। পরে তাঁকে পটিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। আঘাত গুরুতর হওয়ায় তাঁকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করা হয়েছে।
ক্ষোভ ও হত্যার হুমকি
শ্যামল কান্তি দে সাংবাদিকদের জানান, “বিদ্যালয়ের সভাপতি নিয়োগ নিয়ে এলাকায় একটি প্রভাবশালী মহল দীর্ঘদিন ধরে আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে। এর আগেও আমাকে একাধিকবার প্রাণনাশের হুমকি দেওয়া হয়েছে। জীবনের নিরাপত্তার জন্য আমি পটিয়া থানায় দুটি সাধারণ ডায়েরি করেছি।”
একই বিষয়ে সহকারী শিক্ষক তানিয়া ইয়াসমিন জানান, হামলাকারীরা তাঁকে গালাগালি করে বলছিলেন, মামলা কেন দেওয়া হচ্ছে। এরপর তারা মারার হুমকিও দিচ্ছিল। স্থানীয়রা চিৎকার শুনে এগিয়ে এসে প্রধান শিক্ষককে উদ্ধার করেন।
পুলিশ ও প্রশাসনের পদক্ষেপ
পটিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি নুরুজ্জামান বলেন, “প্রধান শিক্ষকের ওপর হামলার ঘটনায় প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। ইতোমধ্যে ঘটনাস্থলে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। হামলাকারীদের বিরুদ্ধে মামলা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।”
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফারহানুর রহমান বলেন, “প্রধান শিক্ষকের ওপর হামলার বিষয়টি পুলিশ ও সেনাবাহিনীকে জানানো হয়েছে। হামলাকারীদের শনাক্ত করে আইনের আওতায় আনার ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এর আগেও ভুক্তভোগী প্রধান শিক্ষক থানায় সাধারণ ডায়েরি করেছিলেন। সেই জিডির ভিত্তিতে নিয়মিত মামলা হবে।”
শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ ও উত্তেজনা
এই ঘটনার পর স্কুলের শিক্ষার্থীরা ক্লাস বর্জন করে বিক্ষোভ করেছে। তারা হামলাকারীদের শনাক্ত ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছে। এলাকাজুড়ে উত্তেজনা বিরাজ করছে, এবং পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রেখেছে।
এই ঘটনায় স্থানীয়রা শ্যামল কান্তি দে-এর নিরাপত্তার ব্যবস্থা জোরদার করতে প্রশাসনের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।