৩০ কেজি চালের পরিবর্তে ২৮ থেকে ২৯ কেজি চাল দেওয়া হচ্ছে। ওজনে কম দেওয়ার প্রতিবাদ করলে ডিলার উপকারভোগীদের চাল বন্ধ করে দেওয়ার হুমকি দেন।
কুড়িগ্রাম থেকে নয়ন দাস: সরকারের খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির ১০ টাকা কেজির চাল নিয়ে আসলে হচ্ছেটা কি? হত দরিদ্ররা তা ঠিকঠাক মতো পাচ্ছে কি? উপকারভোগীদের প্রত্যেকের ১০ টাকা কেজি দরে পাওয়ার কথা ৩০ কেজি চাল। বাস্তবে কি হচ্ছে ?
২০১৬ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা হতদরিদ্রদের খাদ্যসহায়তার জন্য খাদ্যবান্ধব কর্মসূচি গ্রহণ করেন। উলিপুর উপজেলায় ১৩ ইউনিয়নে ২৭,২৪৫ জনকে এই কর্মসূচিতে অন্তর্ভূক্ত করা হয়েছে। বছরের মার্চ এপ্রিল এবং সেপ্টেম্বর অক্টোবরে এই চাল দেয়া হয়। এ চাল বিতরণের জন্য উপজেলা ফেয়ারপ্রাইজ কর্মসূচি কমিটি ৪৮ জন ডিলার নিয়োগ দেন। এ বছর এপ্রিল মাসের চাল গত মঙ্গলবার বিতরণ শুরু হয়েছে। শুরুতেই অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে ডিলার তৈয়ব আলীর বিরুদ্ধে। তিনি গুনাইগাছ ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ড যুবলীগের সভাপতি।
বুধবার উপজেলার গুনাইগাছ ইউপি চত্বরে গেলে উপকারভোগীরা অভিযোগ করেন, ডিলার ওজনে চাল কম দিচ্ছেন। ৩০ কেজি চালের পরিবর্তে ২৮ থেকে ২৯ কেজি চাল দেওয়া হচ্ছে। ওজনে কম দেওয়ার প্রতিবাদ করলে ডিলার উপকারভোগীদের চাল বন্ধ করে দেওয়ার হুমকি দেন। এতে উপকারভোগীরা মুখ খুলতে সাহস পাচ্ছেন না।
জানা গেছে, ডিলার তৈয়ব আলী ৫৭২ জন উপকারভোগীর বিপরীতে ১৭ হাজার ১৬০ কেজি চাল বিতরণ করেন। ওই হিসাবে ৫৭২ জন উপকারভোগীকে ২ কেজি চাল কম দিলে ১ হাজার ১৪৪ কেজি চাল কম দেন।
চাল কম দেওয়ার বিষয়ে ডিলার তৈয়ব আলী বলেন, খাদ্যগুদাম থেকে ৫০ কেজি ওজনের বস্তা নিয়ে আসা হলেও বস্তাসহ ৫০ কেজির চাল হয় না। এ ছাড়া বস্তা খুলে চাল দিতে গেলে চালের ঘাটতি হয়, তাই একটু কম দেওয়া হচ্ছে। তবে যেভাবে অভিযোগ হয়েছে, ঘটনা অতটা না। ঘাটতি পোষানোর জন্য ৫০০ গ্রাম করে কম দেওয়া হচ্ছে।
গুনাইগাছ ইউনিয়নের ট্যাগ কর্মকর্তা ও উপজেলা একাডেমিক সুপারভাইজার নুর-ই-আলম সিদ্দিকী বলেন, ‘(মঙ্গলবার) বিতরণের ওখানে গিয়েছিলাম। আজকে (বুধবার) ব্যস্ততার কারণে যাওয়া হয়নি। তবে চাল কম দেওয়ার কোনো নিয়ম নেই। এ ব্যাপারে আমি ডিলারের সঙ্গে কথা বলব।’
উপজেলা খাদ্যগুদাম কর্মকর্তা শাহিনুর আলম জানায়,৫০ কেজি চালের বস্তায় ৫০ কেজি ৭০০ গ্রাম করে চাল থাকে। চাল কম দেওয়া হয় না। ডিলারের অভিযোগ সত্য নয়।
সরকারের এ কর্মসূচির উদ্দেশ্য মহৎ হলেও একশ্রেণির দুর্নীতিবাজের কারণে তা পুরোপুরি কার্যকর হচ্ছে না। সরকারের উচ্চপর্যায়ের দৃষ্টি দেওয়া জরুরি হয়ে পড়েছে। গরিবদের হক নিয়ে যারা নয় ছয় করে, দুর্নীতি করে, তাদের কঠোর শাস্তি হওয়া উচিত বলে মনে করেন তথ্যাভিজ্ঞমহল।