Home Second Lead নবীগঞ্জে ১৪৪ ধারা ভেঙে সহিংসতা অগ্নিসংযোগ, সেনা মোতায়েন

নবীগঞ্জে ১৪৪ ধারা ভেঙে সহিংসতা অগ্নিসংযোগ, সেনা মোতায়েন

বিজনেসটুডে২৪ প্রতিনিধি, হবিগঞ্জ: নবীগঞ্জে পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী প্রশাসনের জারি করা ১৪৪ ধারা অমান্য করে সোমবার দুপুর থেকে বিকেল পর্যন্ত ভয়াবহ সহিংসতা ও সংঘর্ষে এক ব্যক্তি নিহত হয়েছেন এবং আহত হয়েছেন অন্তত দেড় শতাধিক মানুষ। অর্ধশতাধিক ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ভাঙচুর এবং অন্তত ১০টি দোকানে অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে। শহরজুড়ে বিরাজ করেছে চরম আতঙ্ক ও নৈরাজ্য।

নিহত ব্যক্তির নাম ফারুক মিয়া (৪২)। তিনি পূর্ব তিমিরপুর গ্রামের আওল মিয়ার ছেলে ও পেশায় অ্যাম্বুলেন্স চালক ছিলেন। সংঘর্ষে আহতদের মধ্যে ২০ জনের অবস্থা গুরুতর হওয়ায় তাদেরকে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

স্থানীয় সূত্র এবং পুলিশ জানায়, সংঘর্ষের সূত্রপাত গত বৃহস্পতিবার রাতে পূর্ব তিমিরপুর গ্রামের খরচু তালুকদার ও ইনাতগঞ্জ ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি আশাহিদ আলী আশার মধ্যে কথাকাটাকাটি থেকে। এরপর শুক্রবার রাতে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার পর সোমবার নবীগঞ্জ শহরের মধ্যবাজার, শেরপুর রোড ও হাসপাতাল সড়কজুড়ে সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ে।

তিমিরপুর ও চরগাঁও গ্রামের লোকজন শহরে জড়ো হলে তাদের সঙ্গে মৎস্যজীবী সম্প্রদায়ের আনমনু, রাজাবাদ, রাজনগর, কানাইপুর ও নোয়াপাড়া গ্রামের লোকজনের সংঘর্ষ বাধে। দুই পক্ষ দেশীয় অস্ত্র নিয়ে একে অপরের ওপর হামলা চালায়। পরিস্থিতি রণক্ষেত্রে রূপ নেয়।

সংঘর্ষ চলাকালে ইউনাইটেড প্রাইভেট হাসপাতাল, হোটেল ও দোকানসহ শহরের অন্তত ৫০টি প্রতিষ্ঠান ভাঙচুর করা হয়। ১০টির বেশি দোকানে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়। আতঙ্কে সাধারণ মানুষ দোকানপাট বন্ধ করে নিরাপদ আশ্রয়ে চলে যান।

বিকেল ৪টায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. রুহুল আমীন নবীগঞ্জ শহরে ১৪৪ ধারা জারি করেন, যা মঙ্গলবার রাত ১২টা পর্যন্ত কার্যকর থাকবে। এর আওতায় সভা-সমাবেশ, জমায়েত, অস্ত্র বহন এবং সংঘাতমূলক কর্মকাণ্ড নিষিদ্ধ করা হয়।

তবে আইন অমান্য করে সংঘর্ষ চলতেই থাকে। একপর্যায়ে সেনাবাহিনী ও পুলিশের যৌথ টহল ও অভিযান চালিয়ে পরিস্থিতি কিছুটা নিয়ন্ত্রণে আনা হয়। বর্তমানে শহরে থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে, গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে মোতায়েন করা হয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।

নবীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বলেন, “বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। সেনাবাহিনী ও পুলিশ মাঠে আছে। আমরা সর্বোচ্চ সতর্কতায় রয়েছি যাতে কোনোভাবেই পুনরায় সংঘর্ষ না ঘটে।”