আন্তর্জাতিক ডেস্ক: মালয়েশিয়ায় চরমপন্থী কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে গ্রেপ্তার হওয়া ৩৬ জন বাংলাদেশির বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ এনেছেন দেশটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী দাতুক সাইফুদ্দিন নাসিউশন ইসমাইল। তিনি দাবি করেছেন, আটক বাংলাদেশিরা শুধু মালয়েশিয়ায় উগ্রবাদ ছড়াতে নয়, বরং নিজ দেশে সরকার উৎখাতের পরিকল্পনায়ও সক্রিয় ছিল। খবর বারনামা বার্তা সংস্থা এবং কুয়ালালামপুরের বিভিন্ন সংবাদপত্র সূত্রের।
শুক্রবার কুয়ালালামপুরে এক সরকারি বিবৃতিতে সাইফুদ্দিন বলেন, “বিশেষ শাখার গোয়েন্দা তথ্য ও সমন্বিত অভিযানে উঠে এসেছে, এই চক্র ইসলামিক স্টেট (আইএস)-এর আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে চরমপন্থা ছড়াতে কাজ করছিল। তারা নিজেদের কমিউনিটির মধ্যে ‘রিক্রুটমেন্ট সেল’ গঠন করে উগ্র মতাদর্শ প্রচার, সন্ত্রাসী তহবিল সংগ্রহ এবং নিজ দেশ বাংলাদেশে সরকারকে উৎখাতের পরিকল্পনায় সক্রিয় ছিল।”

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, এই ৩৬ জনকে গত ২৪ এপ্রিল থেকে সেলাঙ্গর ও জোহর প্রদেশে তিন ধাপে পরিচালিত অভিযানে গ্রেপ্তার করা হয়। তাদের মধ্যে পাঁচজনের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবিরোধী আইনের আওতায় আনুষ্ঠানিক অভিযোগ গঠন করে শাহ আলম ও জোহর বাহরুর আদালতে বিচার শুরু হয়েছে। ১৫ জনের বিরুদ্ধে বহিষ্কারাদেশ জারি হয়েছে এবং বাকি ১৬ জন তদন্তাধীন রয়েছে।
আইএস মতাদর্শে বিশ্বাস, ভেতরে গোপন চক্র:
পুলিশের তথ্যে বলা হয়েছে, গ্রেপ্তারকৃতরা আইএস মতাদর্শে বিশ্বাসী হয়ে মালয়েশিয়ায় একটি সংগঠিত চক্র গঠন করেছিল। তারা নিজের সম্প্রদায়ের মধ্যে গোপনে ‘রিক্রুটমেন্ট সেল’ গড়ে তোলে। এসব সেলের মাধ্যমে তরুণদের চরমপন্থী ভাবধারায় প্রভাবিত করে উগ্রবাদের পথে টেনে নেওয়া হচ্ছিল।
এছাড়া, এই চক্র অর্থ সংগ্রহের মাধ্যমে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে সহায়তা করছিল এবং বাংলাদেশের বর্তমান সরকারবিরোধী ষড়যন্ত্রে সক্রিয়ভাবে জড়িত ছিল বলে অভিযোগ করেছে মালয়েশিয়ার সরকার।
‘মালয়েশিয়া কারও আশ্রয়স্থল নয়’:
সাইফুদ্দিন জোর দিয়ে বলেন, “মালয়েশিয়া কোনো বিদেশি উগ্রবাদী গোষ্ঠীর আশ্রয়স্থল বা ট্রানজিট কেন্দ্র হতে দেবে না। আমাদের নিরাপত্তা বাহিনী এই ধরনের চক্রান্ত রুখে দিতে সদা প্রস্তুত।”
তিনি আরও জানান, গোয়েন্দা সংস্থার কার্যকর কাজ এবং পুলিশের পেশাদারিত্বের ফলে এই অভিযান সফল হয়েছে। একইসঙ্গে ভবিষ্যতে এমন উগ্রবাদ রুখতে আন্তর্জাতিক সহযোগিতা ও নজরদারি বাড়ানো হবে বলেও আশ্বাস দেন তিনি।
বিশেষজ্ঞদের মতে, “এই ঘটনাটি শুধু অভিবাসন নয়, বরং বাংলাদেশিদের একটি অংশের চরমপন্থার সঙ্গে সম্পৃক্ততার ভয়াবহ ইঙ্গিত দিচ্ছে। সরকারকে এখন প্রবাসী বাংলাদেশিদের মধ্যে কার্যকর মনিটরিং ব্যবস্থা চালু করতে হবে।”