বিজনেসটুডে২৪ প্রতিনিধি, গাজীপুর: গাজীপুরে এক রাতে ধারাবাহিকভাবে তিনটি স্থানে সড়কের পাশে পার্ক করে রাখা বাসে অগ্নিসংযোগ করেছে দুর্বৃত্তরা। মঙ্গলবার (১১ নভেম্বর) গভীর রাত থেকে বুধবার ভোর পর্যন্ত বাসন, কাশিমপুর ও শ্রীপুরে এসব ঘটনা ঘটে। তবে কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।
পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিস সূত্রে জানা গেছে, বুধবার ভোর সাড়ে ৪টার দিকে বাসন থানার ভোগড়া বাইপাস এলাকার পেয়ারা বাগান সংলগ্ন ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের পাশে পার্ক করা ভিআইপি পরিবহনের একটি বাসে আগুন দেয় দুর্বৃত্তরা। এতে বাসটির ভেতরের আসন ও জানালা পুড়ে যায়। খবর পেয়ে ভোগড়া মডার্ন ফায়ার স্টেশনের একটি ইউনিট ঘটনাস্থলে গিয়ে দ্রুত আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।
ফায়ার স্টেশনের স্টেশন অফিসার ইকবাল হোসেন বলেন, “আগুন লাগার খবর পেয়ে আমরা প্রথমে নিরাপত্তার জন্য পুলিশকে জানাই। পরে যৌথভাবে ঘটনাস্থলে গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনি। বাসটি রাতে সড়কের পাশে পার্ক করে রাখা হয়েছিল এবং আগুন লাগার সময় ভিতরে কেউ ছিল না।”
একই রাতে কাশিমপুর থানার চক্রবর্তী এলাকায় কালিয়াকৈর–নবীনগর সড়কের পাশে দাঁড়িয়ে থাকা একটি মিনিবাসেও আগুন দেয় দুর্বৃত্তরা। মঙ্গলবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। এতে বাসটির ভেতরের বেশ কয়েকটি সিট সম্পূর্ণ পুড়ে যায়।
এ ছাড়া শ্রীপুর উপজেলার বেড়াইদের চালা এলাকায় ভোর ৪টা ৫০ মিনিটের দিকে আরেকটি বাসে আগুন লাগানো হয়। খবর পেয়ে শ্রীপুর ফায়ার সার্ভিসের একটি দল ঘটনাস্থলে গিয়ে প্রায় আধঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।
তিনটি ঘটনাতেই বাসগুলো রাস্তার পাশে পার্ক করা ছিল বলে জানিয়েছে পুলিশ। অগ্নিসংযোগের পরপরই স্থানীয় প্রশাসন ঘটনাস্থল ঘিরে তদন্ত শুরু করে।
গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কমিশনার (অতিরিক্ত ডিআইজি) জাহিদুল হাসান বলেন, “এক রাতে তিন স্থানে ধারাবাহিকভাবে বাসে অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে। আমরা ঘটনাগুলো অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে তদন্ত করছি। ফায়ার সার্ভিস, ডিবি ও সিআইডি যৌথভাবে আলামত সংগ্রহ করেছে এবং আশপাশের সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ চলছে।”
তিনি আরও বলেন, “এ ধরনের নাশকতামূলক কর্মকাণ্ড কোনোভাবেই সহ্য করা হবে না। শহরের গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে এবং রাত্রিকালীন টহল জোরদার করা হয়েছে।”
স্থানীয়দের মধ্যে এ ঘটনায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। অনেকেই মনে করছেন, এটি পূর্ব পরিকল্পিত নাশকতা হতে পারে। ফায়ার সার্ভিস প্রাথমিকভাবে ধারণা করছে, পেট্রোল বা অন্য কোনো দাহ্য পদার্থ ছিটিয়ে আগুন দেওয়া হয়েছিল। তদন্ত শেষে সঠিক কারণ জানা যাবে বলে জানিয়েছে সংস্থাটি।
সম্প্রতি গাজীপুরের বিভিন্ন এলাকায় রাজনৈতিক উত্তেজনা ও সড়ক অবরোধের ঘটনাকে কেন্দ্র করে পরিস্থিতি অস্থিতিশীল হয়ে উঠেছে। এর মধ্যে ধারাবাহিকভাবে বাসে অগ্নিসংযোগের ঘটনায় শহরজুড়ে উদ্বেগ ছড়িয়ে পড়েছে।










