বিজনেসটুডে২৪ ডেস্ক: পৃথিবীর গভীরতম সমুদ্রের নিচে ঘন্টার পর ঘন্টা, এমনকি মাসের পর মাস নিঃশব্দে ঘুরে বেড়ায় এক অদৃশ্য দানব। এর নাম টাইফুন ক্লাস সাবমেরিন, রাশিয়ার তৈরি ভয়ঙ্কর এবং বিশাল আকারের এই পারমাণবিক সাবমেরিনের প্রকৃত প্রকল্প নাম Project 941 Akula।
বিশ্বের ইতিহাসে এটিই সবচেয়ে বড় এবং ভারী সাবমেরিন। দৈর্ঘ্যে প্রায় ১৭৫ মিটার, যা প্রায় দুটি ফুটবল মাঠের সমান। ওজন প্রায় ৪৮,০০০ টন, এবং এটি নিউক্লিয়ার রিঅ্যাক্টর দিয়ে চালিত—ফলে এটি একবার পানিতে ডুবে গেলে মাসের পর মাস উপরে উঠার প্রয়োজন হয় না।
এই সাবমেরিনের সবচেয়ে বিপজ্জনক দিক হলো, এটি ১৬টি ব্যালিস্টিক মিসাইল বহনে সক্ষম। প্রতিটি মিসাইলে থাকে পারমাণবিক ওয়ারহেড, যেগুলোর প্রতিটির ক্ষমতা কয়েকটি শহর নিশ্চিহ্ন করে দিতে পারে। তাই একমাত্র এই সাবমেরিনই একটি দেশের অস্তিত্ব মুছে দিতে যথেষ্ট।
তবে যুদ্ধ ও ধ্বংসের এই রূপটি এর সব নয়। টাইফুন ক্লাসের ভিতরেই রয়েছে সুইমিং পুল, জিমনেসিয়াম, সাউনা, বিশ্রামাগার ও রান্নাঘর। এতদিনে তৈরি করা হয়েছে যেন এটি পানির নিচের এক বিলাসবহুল দুর্গ।
সবচেয়ে ভয়ংকর তথ্যটি হলো—আপনি কখনই জানবেন না, এই সাবমেরিনটি আপনার দেশের উপকূলে কখন এসে হাজির হয়েছে। এর চলাচল এতটাই নিঃশব্দ এবং গোপনীয় যে স্যাটেলাইট বা সেন্সরের চোখও অনেক সময় এর অবস্থান ধরতে পারে না।
১৯৮০-এর দশকে সোভিয়েত ইউনিয়ন যখন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ঠান্ডা যুদ্ধে লিপ্ত, তখন এই সাবমেরিন তৈরি করা হয়। বর্তমানে রাশিয়া সীমিতসংখ্যক টাইফুন ক্লাস সাবমেরিন সচল রেখেছে, তবে তাদের নতুন সাবমেরিন প্রজন্ম বোরেই ক্লাস ইতিমধ্যেই বহরে যুক্ত হয়েছে।
🌊 যখন নিরাপত্তা অদৃশ্য হয়ে যায়
টাইফুন ক্লাস শুধু একটি সাবমেরিন নয়, এটি পানির নিচে লুকানো ভয়ংকর রাজনৈতিক ও সামরিক শক্তির প্রতীক। এর অস্তিত্ব প্রমাণ করে, আধুনিক বিশ্বে যুদ্ধ কেবল আকাশে বা মাটিতে হয় না—পানির তলদেশেও চলে গোপন প্রস্তুতি।