Home সারাদেশ খুলনায় ইমামের বিদায়ে শোভাযাত্রা, অনন্য উদাহরণ স্থাপন

খুলনায় ইমামের বিদায়ে শোভাযাত্রা, অনন্য উদাহরণ স্থাপন

ছবি সংগৃহীত
বিজনেসটুডে২৪ প্রতিনিধি, খুলনা: পশ্চিম টুটপাড়া জামে মসজিদের প্রবীণ ইমাম মাওলানা আব্দুস সালামকে রাজকীয় বিদায় দিয়েছে এলাকাবাসী। শুক্রবার (১৯ সেপ্টেম্বর) জুমার নামাজ শেষে মসজিদ কমিটির উদ্যোগে তাকে পাগড়ি পরিয়ে ও ফুলেল শুভেচ্ছা জানানো হয়। দীর্ঘ ৩৭ বছর ৮ মাস দায়িত্ব পালন শেষে ৮৫ বছর বয়সে তিনি অবসরে গেলেন।

বিদায়ের মুহূর্তে মসজিদে আবেগঘন পরিবেশ সৃষ্টি হয়। দীর্ঘদিনের ইমামকে হারানোর বেদনায় বহু মুসল্লির চোখ ভিজে ওঠে। এলাকাবাসীর মতে, তিনি শুধু একজন ইমাম নন, বরং ছিলেন একজন অভিভাবক ও আস্থার প্রতীক।

মাওলানা আব্দুস সালাম ১৯৮৭ সালে পশ্চিম টুটপাড়া জামে মসজিদে ইমাম হিসেবে যোগ দেন। এর আগে তিনি খুলনা আলিয়া কামিল মাদ্রাসায় দীর্ঘদিন শিক্ষকতা করেছেন। প্রায় ১৫ বছর আগে শিক্ষকতা থেকে অবসর নিলেও নিয়মিত ইমামতির দায়িত্ব পালন করেছেন। বয়সজনিত শারীরিক জটিলতা এবং দাঁড়িয়ে নামাজ পড়তে অক্ষম হয়ে পড়ায় এবার তিনি দায়িত্ব ছাড়লেন।

বিদায় অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন মসজিদের প্রধান উপদেষ্টা খান আব্দুল আজিজ। প্রধান অতিথি ছিলেন খুলনার দারুল উলুম মাদ্রাসার মোহতামিম হাফেজ মাওলানা মোসতাক আহমেদ। বিশেষ অতিথি ছিলেন মুফতি জিয়াউর রহমান। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন খতিব হাফেজ মাওলানা আবুল খায়ের। এ সময় বক্তব্য দেন মোতাওয়াল্লি এস এম শামছুল আরিফ, ইসলামিয়া জামে মসজিদের সভাপতি কামরুল ইসলামসহ অনেকে।

নামাজ শেষে মাওলানা আব্দুস সালাম কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বলেন, “শারীরিক অসুস্থতার কারণে আর দাঁড়িয়ে নামাজ পড়তে পারছি না। তাই দায়িত্ব ছেড়ে দিচ্ছি। আল্লাহ যেন আমাকে দাঁড়িয়ে নামাজ পড়ার তৌফিক দেন, সবার কাছে সেই দোয়া চাই।”

পরে ফুল দিয়ে সাজানো গাড়িতে করে তাকে শোভাযাত্রার মাধ্যমে পুরো টুটপাড়া এলাকা ঘুরিয়ে ছোট খালপারের বাসায় পৌঁছে দেওয়া হয়। মোটরসাইকেল বহরসহ শত শত মুসল্লি এ শোভাযাত্রায় অংশ নেন। এলাকাবাসীর মতে, ইমামের বিদায়কে ঘিরে এমন আয়োজন এক অনন্য দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে।

মসজিদ কমিটির উপদেষ্টা মো. ইদ্রিস আলী বলেন, “মাওলানা আব্দুস সালামের কাছে পুরো এলাকাবাসী কৃতজ্ঞ। তিনি হাজারো মানুষকে ধর্মীয় শিক্ষা দিয়েছেন, ইসলামের পথে আহ্বান জানিয়েছেন। সমাজে ইমামদের যথাযথ মূল্যায়ন হয় না, তাই আমরা এই আয়োজনের মাধ্যমে একটি উদাহরণ স্থাপন করতে চেয়েছি।”