বিজনেসটুডে২৪ প্রতিনিধি, সিলেট: সিলেটের কানাইঘাটে ১০ মাসের অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীকে পেট্রোল ঢেলে আগুন ধরিয়ে হত্যার চেষ্টা করেছে স্বামী হোসেন আহমদ চৌধুরী আক্তার (৪৫)। এ ঘটনায় অগ্নিদগ্ধ স্ত্রী সাবানা বেগম (২০) একটি মৃত কন্যাসন্তান প্রসব করেছেন। বর্তমানে তিনি আশঙ্কাজনক অবস্থায় সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন।
সোমবার দুপুরে উপজেলার সাতবাঁক ইউনিয়নের চরিপাড়া গ্রামে আত্মীয়ের বাড়ি থেকে স্থানীয়দের সহায়তায় পুলিশ আক্তারকে গ্রেপ্তার করে।
ঘটনার সূত্রপাত হয় গত শনিবার রাতে। জানা গেছে, কানাইঘাট উপজেলার সীমান্তবর্তী লক্ষীপ্রসাদ পূর্ব ইউনিয়নের কান্দলা গ্রামের বাসিন্দা আক্তার তার শ্বশুরবাড়িতে যান স্ত্রী সাবানাকে নিজ বাড়িতে নিয়ে যেতে। কিন্তু মেয়ের শারীরিক অবস্থা খারাপ থাকায় শাশুড়ি তাকে নিজের কাছে রাখতে চান। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে আক্তার শ্বশুরবাড়ি ত্যাগ করেন।
কিছুক্ষণ পর তিনি স্থানীয় নয়াবাজার থেকে বোতলে করে পেট্রোল কিনে আবার শ্বশুরবাড়িতে ফেরেন। ঘরে ঢুকে হঠাৎ বিছানায় শুয়ে থাকা সাবানার গায়ে পেট্রোল ঢেলে গ্যাস লাইট দিয়ে আগুন ধরিয়ে পালিয়ে যান।
সাবানার চিৎকার শুনে আশপাশের লোকজন ও পরিবারের সদস্যরা দৌঁড়ে এসে আগুন নিভিয়ে তাকে গুরুতর দগ্ধ অবস্থায় সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান। পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সাবানা একটি মৃত কন্যা সন্তানের জন্ম দেন।
ঘটনার পরপরই ইউপি সদস্য ফখর উদ্দিন চৌধুরী হাসপাতালে গিয়ে সাবানার খোঁজ নেন এবং বিষয়টি পুলিশকে জানান। এরই ভিত্তিতে পুলিশ অভিযুক্ত আক্তারকে গ্রেপ্তার করে।
সাবানা বেগমের বাবা আব্দুল জব্বার অভিযোগ করেন, ঘটনার সময় তিনি বাড়িতে ছিলেন না। তার অনুপস্থিতিতে জামাতা আক্তার মেয়ের গায়ে আগুন দিয়ে নির্মমতার সীমা ছাড়িয়ে যায়।
এ ব্যাপারে কানাইঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল আউয়াল জানান, এ ঘটনায় অভিযুক্ত আক্তারকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ভিকটিমের পরিবারের পক্ষ থেকে মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে। পুলিশ ঘটনাটি গুরুত্ব সহকারে তদন্ত করছে।
সাবানার দগ্ধ শরীরের অবস্থাও গুরুতর। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, তার শরীরের অধিকাংশ অংশই পুড়ে গেছে। পরিবার ও এলাকাবাসীর দাবি, এই নির্মম ঘটনার দৃষ্টান্তমূলক বিচার নিশ্চিত করতে হবে।
।){kind=link}