বিনোদন ডেস্ক: দক্ষিণ কোরিয়ার জনপ্রিয় অভিনেত্রী জং গা-ইউন জীবনের নানা উত্থান-পতনের পর এবার বেছে নিয়েছেন এক ভিন্ন পেশা। ৪৮ বছর বয়সী এই অভিনেত্রী এখন সেওলে ট্যাক্সি চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করছেন নিজে ও তাঁর কন্যার জন্য।
সম্প্রতি তিনি দক্ষিণ কোরিয়ার সরকার অনুমোদিত ট্যাক্সি চালকের পরীক্ষা পাস করেছেন। এই প্রস্তুতির প্রতিটি ধাপ তিনি তুলে ধরেছেন নিজের ইউটিউব চ্যানেল Wonder Ga-eun-এ।
নতুন পেশা নিয়ে ইতিবাচক মনোভাব প্রকাশ করে জং বলেন, ‘‘কষ্ট করে পরিশ্রম করলে মাসে প্রায় এক কোটি ওয়ন পর্যন্ত আয় করা যায়। আজকাল বড় বড় কোম্পানিও এতটা দেয় না।’’
বিনোদন পোর্টাল অলকে-পপ-এর প্রতিবেদন অনুযায়ী, বিগত কয়েক বছর ধরে তিনি আর্থিক ও মানসিক চাপে ভুগছিলেন। ২০১৮ সালে এক ব্যবসায়ীর সঙ্গে বিবাহবিচ্ছেদের পর তিনি এককভাবে মেয়েকে বড় করছেন।
কিন্তু এই সম্পর্ক তাঁর জীবনে আরও জটিলতা ডেকে আনে। কারণ ওই ব্যবসায়ী তাঁর নাম ব্যবহার করে প্রায় ১৩২ কোটি ওয়ন আত্মসাৎ করেন এবং পরে বিদেশে পালিয়ে যান। তিনি শিশুটির জন্য কোনো ভরণপোষণও দিচ্ছেন না।
জং নিজেও এই প্রতারণায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন প্রায় ১ কোটি ওয়নের বেশি। একটি পুরোনো সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছিলেন, ‘‘আমার শেষ সিনেমার পর আর কোনো কাজই ছিল না। ব্যাংক অ্যাকাউন্টে তাকিয়ে আমি হতভম্ব হয়ে পড়েছিলাম।’’
তিনি আরও বলেন, ‘‘আগে টাকার অভাবে আতঙ্কে থাকতাম। এখন ভাবি, ‘যা আছে তাই নিয়ে চলব।’ অনিশ্চয়তা রয়েছেই, তবে আমার সন্তানকে বড় করতে গিয়েই আমি শক্ত হয়েছি।’’
জীবনের কঠিন সময়ে নিজের বাবার পথ অনুসরণ করেই জং এই সিদ্ধান্ত নেন। তাঁর বাবা প্রায় ৩০ বছর ধরে প্রাইভেট ট্যাক্সি চালাতেন।
‘‘আমার বাবাই এই কাজ করে আমাকে মানুষ করেছেন,’’ বলেন জং। এখন তাঁর বাবা খাবারেরনালী ক্যানসারে ভুগছেন, আর জং চান, পরীক্ষা পাস করার পর তাঁর বাবাই হোক তাঁর প্রথম যাত্রী।
ট্যাক্সি পরীক্ষার প্রস্তুতির সময় তিনি জনপ্রিয় পরিবহন ইউটিউবার পার্ক রে-হোর সঙ্গে দেখা করেন। সে সময় নার্ভাস থাকলেও আত্মবিশ্বাসী জং বলেছিলেন, ‘‘আমি নিশ্চিত পাস করব। চাই নম্বর ৯০-এর ওপরে উঠুক।’’
শেষ পর্যন্ত তিনি ৭৫ নম্বর পেয়ে পাস করেন। তিনি বলেন, ‘‘পরীক্ষা বেশ কঠিন ছিল, তবে আমি গর্বিত যে পাস করেছি।’’