বিনোদন ডেস্ক: ‘অক্টোবর’ ছবির পর আলোচনায় আসা অভিনেত্রী বনিতা সান্ধু এবার মুখ খুললেন সহকর্মী দীপিকা পাড়ুকোনের পক্ষে। মাতৃত্বকালীন সময়ের কারণে দীর্ঘ শুটিং ঘন্টার বিরুদ্ধে দীপিকার অবস্থান নিয়ে চলমান আলোচনায় যোগ দিয়ে বললেন, “সিনেমা বানানো যুদ্ধ নয়, কাজের পাশাপাশি বিশ্রামও প্রয়োজন।”
সম্প্রতি ‘স্ক্রিন’ নামের এক আয়োজনে অংশ নিয়ে বনিতা বলেন, “পশ্চিমে শক্তিশালী ইউনিয়ন থাকে যারা কাজের সময়, বিশ্রাম, স্বাস্থ্য—সবকিছুর ভারসাম্য নিশ্চিত করে। আমাদেরও সেটা দরকার। আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি, ১২ ঘণ্টার বেশি কাজ হওয়া উচিত নয়। আমরা তো কোনো যুদ্ধক্ষেত্রে নেই!”
দীপিকা পাড়ুকোন সন্দীপ রেড্ডি ভাঙ্গার ছবি ‘স্পিরিট’ থেকে সরে দাঁড়ান মূলত ৮ ঘণ্টার বেশি কাজ করতে অনিচ্ছুক থাকায়। পরিচালক তা মানতে রাজি ছিলেন না বলে মতবিরোধ হয়। এরপর থেকেই এই প্রসঙ্গে মতামত জানাচ্ছেন বলিউডের অনেকেই—কাজল, অজয় দেবগন, রাধিকা আপ্তে, রানা ডাগ্গুবতিসহ আরও অনেকে দীপিকার পাশে দাঁড়িয়েছেন। এবার সেই তালিকায় যুক্ত হলেন বনিতা সান্ধুও।
নিজের অভিজ্ঞতা তুলে ধরে বনিতা বলেন, “ক্যারিয়ারের শুরুর দিকে বুঝতাম না বিষয়গুলো। দিনের পর দিন ১৬–১৮ ঘণ্টা কাজ করেছি। প্রযোজক যা বলতেন তাই করতাম। এমনও হয়েছে টানা ২৪ ঘণ্টা না ঘুমিয়ে কাজ করেছি। পরে বুঝেছি, এটা স্বাভাবিক নয়।”
তিনি আরও বলেন, “যখন আমি প্রযোজকদের বলেছিলাম আমি এত দীর্ঘসময় কাজ করতে পারব না, তখন তারা আমাকে খারাপ ভাবতে শুরু করলেন। কিন্তু আমি জানি আমি ঠিক ছিলাম। ঘুম ও বিশ্রামের প্রয়োজন সবারই আছে। কাজের পাশাপাশি নিজেকে রক্ষা করাটাও জরুরি।”
‘অক্টোবর’ সিনেমা নিয়ে বলতে গিয়ে বনিতা জানান, “আমি তখন ভারতে পুরোপুরি ছিলাম না। লন্ডনে কলেজে পড়তাম। কাজের জন্য ভারত আসতাম, আবার ফিরে যেতাম। অনেকে ভেবেছিল আমি ইন্ডাস্ট্রি ছেড়ে দিয়েছি, কিন্তু সেটা সত্যি নয়। আমি সবসময় কাজেই ছিলাম, শুধু জায়গাটা ভিন্ন ছিল।”
তিনি জানান, স্নাতক সম্পন্ন করার পর তিনি হলিউড ও দক্ষিণী চলচ্চিত্র ইন্ডাস্ট্রিতে অন্তত তিনটি ছবিতে অভিনয় করেছেন। তবে অনুপস্থিতির কারণে অনেক নির্মাতা তাকে মনে রাখেননি। “অক্টোবর মুক্তির পর অনেকে বলেছিলেন, ‘তোমাকে ভাবছিলাম আমাদের ছবির জন্য, কিন্তু কোথায় ছিলে তুমি?’ এটাই বাস্তবতা—চোখের আড়াল মানেই মনে থেকেও না থাকার মতন,” বলেন বনিতা।
এই সাহসী অবস্থান বনিতাকে শুধু সহকর্মীদের সহানুভূতি নয়, দর্শকের প্রশংসাও এনে দিচ্ছে। বলিউডে কাজের পরিবেশ, বিশ্রামের অধিকার ও মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে নতুন করে ভাবনার দরজা খুলছে এই আলোচনায় তার সক্রিয় অংশগ্রহণ।