আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
ভারতীয় গীতিকার ও চিত্রনাট্যকার জাভেদ আখতারের সাম্প্রতিক মন্তব্য নিয়ে মুখ খুলেছেন পাকিস্তানি অভিনেত্রী মানশা পাশা। তিনি বলেন, পাকিস্তানিদের বারবার অপমান সহ্য না করে আত্মমর্যাদা রক্ষা করা উচিত।
সোমবার ইনস্টাগ্রাম স্টোরিতে দেওয়া এক পোস্টে লাল কবুতর খ্যাত এই অভিনেত্রী আখতারের বক্তব্য নিয়ে করা একটি সংবাদ প্রতিবেদন শেয়ার করে লিখেছেন, “এটা মনে করিয়ে দেয়, যখন তিনি পাকিস্তানে এসেছিলেন, আর কিছু লোক পার্টিতে তাঁর পায়ের কাছে বসে ছিলেন। যদিও তিনি একটি অনুষ্ঠানে পাকিস্তান সম্পর্কে অবমাননাকর মন্তব্য করেছিলেন।”
মানশা পাশা স্পষ্টভাবে ইঙ্গিত দিয়েছেন, ২০২৩ সালে জাভেদ আখতারের পাকিস্তান সফরের সময় একটি অনুষ্ঠানে গায়ক ও অভিনেতা আলি জাফর তাঁর সম্মানে একটি ঘরোয়া আয়োজন করেন। তখন আখতারের পূর্বেকার বিতর্কিত মন্তব্য উপেক্ষা করে পাকিস্তানি সাংস্কৃতিক অঙ্গনের একাংশ তাকে অত্যন্ত উষ্ণ অভ্যর্থনা জানায়। সেই দৃশ্যই নতুন করে আলোচনায় এসেছে, আখতারের সাম্প্রতিক সমালোচনার প্রেক্ষাপটে।
পাশা বলেন, “আসলে দোষ আমাদেরই। কারণ এটা স্পষ্ট, আমাদের নিজেদের আরও আত্মসম্মান থাকা উচিত।”
সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে জাভেদ আখতার বলেন, ভারত-পাকিস্তানের সাংস্কৃতিক আদান-প্রদানের সম্পর্ক একমুখী। তাঁর ভাষ্য অনুযায়ী, পাকিস্তানি কিংবদন্তিরা যেমন নুসরাত ফতেহ আলী খান, মেহদি হাসান ও গুলাম আলী—ভারতে প্রশংসিত হলেও, ভারতের কিংবদন্তি শিল্পীরা পাকিস্তানে একইভাবে কখনও সুযোগ পাননি। তিনি উদাহরণ হিসেবে লতা মঙ্গেশকরের নাম উল্লেখ করে বলেন, “পাকিস্তানে ভারতীয় শিল্পীদের জন্য পরিকল্পিতভাবেই পথ রুদ্ধ রাখা হয়।”
আখতার আরও বলেন, “এই মুহূর্তে দুই দেশের মধ্যে কোনো বন্ধুত্বপূর্ণ অনুভূতি নেই। কাশ্মীরের পাহেলগামে যেটা ঘটেছে, তার পরিপ্রেক্ষিতে এখন এমন বিষয় নিয়ে ভাবার সময় নয়।” উল্লেখ্য, ২২ এপ্রিল পাহেলগামে নিরাপত্তা বাহিনীর ওপর হামলার ঘটনায় ভারত সরাসরি পাকিস্তানকে দায়ী করে।
তাঁর দাবি অনুযায়ী, পাকিস্তানি শিল্পীরা ভারতে কাজ করলে তার সুফল যায় কেবল পাকিস্তানের সামরিক বাহিনী ও মৌলবাদীদের পক্ষে। যারা সাধারণ মানুষকে ভারতীয় ‘স্বাধীনতা ও মূল্যবোধ’ দেখাতে চায় না।
আখতারের এই মন্তব্য আসে এমন এক সময়ে, যখন ফাওয়াদ খানের অভিনীত বলিউড ছবি আবির গুলাল ভারতে মুক্তি পাবে না বলে খবর ছড়িয়েছে, দুই দেশের রাজনৈতিক উত্তেজনার কারণে।
তবে মানশা পাশার দৃষ্টিতে বিষয়টি কেবল আখতারের মন্তব্য নিয়ে নয়। বরং তিনি প্রশ্ন তুলেছেন, কেন পাকিস্তানিরা বারবার ভারতীয় শিল্পীদের অতিমাত্রায় সম্মান দিয়ে যায়, যখন সে সম্মান ফিরিয়ে দেওয়া হয় না। তাঁর এই প্রতিক্রিয়া পাকিস্তানের সংস্কৃতিকর্মীদের ক্রমবর্ধমান হতাশার প্রতিফলন। যারা দীর্ঘদিন ধরে ভারতীয় বৈরিতার শিকার হয়েও ভারতীয় সংস্কৃতির প্রতি একতরফা শ্রদ্ধা দেখিয়ে আসছেন।