বিনোদন ডেস্ক
অভিনয় জগতে তাঁর অবস্থান যেমন স্পষ্ট, ব্যক্তিগত জীবনেও তেমনই স্পষ্ট বক্তব্যে নজর কাড়লেন অভিনেত্রী মানালি দে। বেশ অল্প বয়সেই বিয়ের বন্ধনে আবদ্ধ হলেও তা দীর্ঘস্থায়ী হয়নি। গান-পাগল এক পরিবারের ছেলে সঙ্গীত শিল্পী সপ্তক ভট্টাচার্যের সঙ্গে ২০১২ সালের ২৯ নভেম্বর বিয়ে হয় মানালির। তবে মাত্র চার বছরের মধ্যেই, ২০১৬ সালে, সেই সম্পর্কের পরিসমাপ্তি ঘটে। ডিভোর্সের কারণ নিয়ে মুখ না খুললেও সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে মানালি সেই অতীত জীবনের কিছু দিক স্পষ্ট করেন।
নিবেদিতা অনলাইনকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে যখন জানতে চাওয়া হয়, সপ্তকের সঙ্গে এখনো কি কোনো সুসম্পর্ক আছে? জবাবে মানালি স্পষ্ট বলেন, ‘খারাপ সম্পর্ক হয়েছে বলেই তো একসঙ্গে থাকিনি। বন্ধুত্বের কোনও সিন নেই।’ অতীত নিয়ে ফিরেও তাকাতে চান না অভিনেত্রী। বরং এখনকার জীবন নিয়েই তিনি তৃপ্ত।
ডিভোর্সের পেছনের মূল কারণ হিসেবে মানালি ব্যাখ্যা করেন, ছোটবেলার স্বপ্ন আর বাস্তবতার সংঘর্ষ। তাঁর কথায়, “আমি বাড়ির একমাত্র মেয়ে। খুব আদরে বড় হয়েছি। ছোটবেলা কেটেছে রূপকথার গল্প পড়ে। তখন মনে হতো, বিয়ে মানেই আনন্দ। কিন্তু বিয়ের পরে একরকম বাস্তবতা আসে। আমি বাড়ির মেয়ে হয়ে থাকতে চেয়েছিলাম, কেউ হয়তো আমাকে শুধুই বাড়ির বউ ভাবতে চেয়েছিল। সেই জায়গা থেকে আমি মানিয়ে নিতে পারিনি।”
মানালির মতে, একটা মেয়ে বিয়ের পর নতুন এক পরিবেশে যায়, যেখানে তাকে পুরোপুরি নতুন করে সব কিছু মানিয়ে নিতে হয়। কিন্তু সেই মানিয়ে নেওয়ার সুযোগ বা জায়গা যদি না দেওয়া হয়, তাহলে সম্পর্ক টেকে না। তিনি বলেন, ‘‘ওই বাড়িটাকে আমি কোনোদিন নিজের বাড়ি মনে করিনি। আমি নিজেকে কখনোই ওদের বাড়ির মেয়ে বলে মনে করিনি। তাই হয়তো থাকতে পারিনি।’’
বর্তমানে পরিচালক অভিমন্যু মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে বিবাহিত জীবন কাটাচ্ছেন মানালি। এখানে তিনি পেয়েছেন সেই ‘মেয়ের জায়গা’, যেটার অভাব আগের সংসারে ছিল। নিজের বাবা-মায়ের মতোই শ্বশুর-শাশুড়িকেও ভালবাসেন, যত্ন করেন। আর এই গ্রহণযোগ্যতাই তাঁকে দিয়েছেন নিজের মতো করে বাঁচার শক্তি।
একসময় যেটা ছিল ‘থাকার জায়গা’, এখন সেটা ‘নিজের বাড়ি’। এই স্বতঃস্ফূর্ত স্বীকারোক্তির মধ্য দিয়ে মানালি দে বুঝিয়ে দিলেন, সম্পর্ক মানেই শুধু টিকে থাকা নয়, বরং সত্যিকার অর্থে জড়িয়ে থাকা।