Home Second Lead যুক্তরাষ্ট্রের ৫০% শুল্কে ভারত থেকে অর্ডার বন্ধ করল অ্যামাজন-ওয়ালমার্ট

যুক্তরাষ্ট্রের ৫০% শুল্কে ভারত থেকে অর্ডার বন্ধ করল অ্যামাজন-ওয়ালমার্ট

আন্তর্জাতিক ডেস্ক: যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ভারতীয় পণ্যে মোট ৫০ শতাংশ শুল্ক আরোপের ঘোষণা দেওয়ার পর দেশটির বড় খুচরা বিক্রেতা প্রতিষ্ঠানগুলো—অ্যামাজন, ওয়ালমার্ট, টার্গেট ও গ্যাপ—ভারত থেকে নতুন অর্ডার স্থগিত করেছে। বিশ্বের বৃহত্তম বাজার হিসেবে যুক্তরাষ্ট্র ভারতীয় রপ্তানির প্রায় ৫৫ শতাংশ করে থাকে। শুল্কবৃদ্ধির কারণে যুক্তরাষ্ট্রমুখী অর্ডারে ৪০ থেকে ৫০ শতাংশ পর্যন্ত পতন ঘটতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে, যা ভারতের রপ্তানি আয় থেকে প্রায় ৪ থেকে ৫ বিলিয়ন ডলার ক্ষতি ডেকে আনবে।

রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠানগুলো যুক্তরাষ্ট্রের ক্রেতাদের কাছ থেকে চিঠি ও ইমেইল পেয়েছে, যেখানে স্পষ্ট করে জানানো হয়েছে যে তারা পোশাক ও বস্ত্রের চালান আপাতত স্থগিত রাখুক। ক্রেতারা জানিয়ে দিয়েছেন, শুল্কবৃদ্ধির অতিরিক্ত খরচ তারা বহন করতে রাজি নন। ভারতের বড় রপ্তানিকারক ওয়েলস্পান লিভিং, গোকালদাস এক্সপোর্টস, ইন্ডো কাউন্ট ও ট্রাইডেন্টের মতো প্রতিষ্ঠানগুলো তাদের মোট বিক্রির ৪০ থেকে ৭০ শতাংশ যুক্তরাষ্ট্রে করে থাকে।

সবচেয়ে বড় ধাক্কা খাচ্ছে বস্ত্র ও পোশাক খাত—যা একাই ভারতের যুক্তরাষ্ট্রমুখী রপ্তানির ২৮ শতাংশ জুড়ে আছে। ২০২৪-২৫ অর্থবছরে এই খাতের যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানি মূল্য ছিল ৩৬.৬১ বিলিয়ন ডলার। ভারত বিশ্বের ষষ্ঠ বৃহত্তম বস্ত্র ও পোশাক রপ্তানিকারক দেশ হলেও শুল্ক বৃদ্ধির ফলে তারা আশঙ্কা করছে, অনেক অর্ডার বাংলাদেশ ও ভিয়েতনামের কাছে চলে যেতে পারে, যেখানে শুল্ক মাত্র ২০ শতাংশ।

এর বাইরে রত্ন ও গয়না খাত (বার্ষিক আয় প্রায় ১০ বিলিয়ন ডলার), অটোমোবাইল যন্ত্রাংশ (৭ বিলিয়ন ডলার), চামড়াজাত পণ্য ও সামুদ্রিক খাদ্যপণ্যও বড় ক্ষতির মুখে পড়বে। এসব খাতের একটি বড় অংশ পরিচালনা করে ক্ষুদ্র, ছোট ও মাঝারি উদ্যোক্তারা (এমএসএমই)।

শুল্ক আরোপের পটভূমি
ট্রাম্প প্রশাসন প্রথমে ২৫ শতাংশ শুল্ক কার্যকর করে এবং ২৮ আগস্ট থেকে আরও ২৫ শতাংশ শুল্ক কার্যকর হবে, ফলে মোট ৫০ শতাংশ শুল্ক আরোপিত হবে। যুক্তরাষ্ট্রের দাবি, ভারত এখনো রাশিয়া থেকে তেল আমদানি করছে এবং সেটিকে শাস্তি হিসেবেই এই শুল্ক আরোপ করা হয়েছে। বুধবার স্বাক্ষরিত নির্বাহী আদেশে ট্রাম্প লিখেছেন—“ভারত যে সরাসরি বা পরোক্ষভাবে রাশিয়া থেকে তেল আমদানি করছে, তার প্রতিক্রিয়া হিসেবে এই অতিরিক্ত শুল্ক আরোপ প্রয়োজনীয় এবং উপযুক্ত।”

ভারত সরকার এই সিদ্ধান্তকে “অন্যায্য, অযৌক্তিক ও অগ্রহণযোগ্য” বলে অভিহিত করেছে। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে—“যুক্তরাষ্ট্র সম্প্রতি রাশিয়া থেকে ভারতের তেল আমদানি নিয়ে অবস্থান নিয়েছে। আমরা ইতিমধ্যেই জানিয়ে দিয়েছি যে আমাদের এই আমদানি বাজারের প্রেক্ষাপট ও ১৪০ কোটি মানুষের জ্বালানি নিরাপত্তা নিশ্চিত করার লক্ষ্যেই করা হচ্ছে।”