বিজনেসটুডে২৪ প্রতিনিধি, চট্টগ্রাম: আইনজীবী সাইফুল ইসলাম হত্যা মামলায় সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় দাসসহ ৩৮ জনকে আসামি করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেছে নগর পুলিশ। মঙ্গলবার (১ জুলাই) মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা নগর পুলিশের সহকারী কমিশনার (কোতোয়ালি অঞ্চল) মাহফুজুর রহমান চট্টগ্রাম আদালতে এই অভিযোগপত্র জমা দেন।
নগর পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার (প্রসিকিউশন) মফিজ উদ্দিন জানান, পুলিশি তদন্তে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে চিন্ময় দাসসহ মোট ৩৮ জনকে এই হত্যা মামলায় অভিযুক্ত করা হয়েছে। আদালতের অনুমোদনে গত ৫ মে চিন্ময়কে আনুষ্ঠানিকভাবে গ্রেপ্তার দেখানো হয়।
২০২৩ সালের ২৬ নভেম্বর চট্টগ্রাম আদালত এলাকায় চিন্ময় দাসের জামিন ঘিরে সংঘর্ষে আইনজীবী সাইফুল ইসলামকে পিটিয়ে ও কুপিয়ে হত্যা করা হয়। নিহতের বাবা জামাল উদ্দিন ওইদিনই কোতোয়ালি থানায় ৩১ জনের নাম উল্লেখ করে হত্যা মামলা দায়ের করেন। একই ঘটনায় পুলিশের ওপর হামলা, বিচারপ্রার্থীদের ওপর হামলা ও ককটেল বিস্ফোরণের অভিযোগে আরও পাঁচটি মামলা হয়।
এই ছয়টি মামলায় এখন পর্যন্ত ৫১ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এর মধ্যে ২১ জন আইনজীবী সাইফুল হত্যায় সরাসরি জড়িত বলে পুলিশ জানিয়েছে। গ্রেপ্তারকৃতদের মধ্যে চন্দন দাস, রিপন দাস ও রাজীব ভট্টাচার্য আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। তাদের জবানবন্দিতে উঠে আসে—সাইফুলের ঘাড়ে বঁটি দিয়ে কোপ দেন রিপন, আর কিরিচ দিয়ে কোপান চন্দন। এরপর সাদা শার্ট ও কালো প্যান্ট পরা অবস্থায় মাটিতে পড়ে থাকা সাইফুলকে অন্তত ১৫-২০ জন মিলে লাঠি, ইট, বাটাম ও ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করে হত্যা করে।
তদন্ত কর্মকর্তা মাহফুজুর রহমান জানান, “চিন্ময় দাসের উসকানি ও নেতৃত্বেই এই বর্বর হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়েছে বলে আমরা প্রমাণ পেয়েছি। এজন্য তাকে মূল পরিকল্পনাকারী হিসেবে মামলায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।”
চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারী এর আগেও মামলার আসামি ছিলেন। ২০২৩ সালের ৩১ অক্টোবর জাতীয় পতাকা অবমাননার অভিযোগে বিএনপি নেতা ফিরোজ খানের দায়ের করা রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় তাঁর নাম ছিল। ওই মামলায় ২৫ নভেম্বর তাঁকে ঢাকার মিরপুর এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে ফিরোজ খানকে বিএনপি থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়।
এই মামলার বিচারিক কার্যক্রম শিগগিরই শুরু হবে বলে আদালত সূত্রে জানা গেছে।