Home আকাশ পথ পাক-ভারত উত্তেজনায় ফের আকাশসীমা বন্ধ করল পাকিস্তান

পাক-ভারত উত্তেজনায় ফের আকাশসীমা বন্ধ করল পাকিস্তান

এভিয়েশন ডেস্ক:

ক্রমবর্ধমান সামরিক উত্তেজনার জেরে পাকিস্তান আবারও দেশের আকাশসীমা বন্ধ করে দিয়েছে সকল বেসামরিক ও বাণিজ্যিক ফ্লাইট চলাচলের জন্য। পাকিস্তান সিভিল অ্যাভিয়েশন অথরিটি (পিসিএএ) জানিয়েছে, ১১ মে ২০২৫, দুপুর ১২টা পর্যন্ত এই নিষেধাজ্ঞা কার্যকর থাকবে। নিরাপত্তা পরিস্থিতির অবনতির মুখে যাত্রী ও বাণিজ্যিক বিমানের সুরক্ষাই এই সিদ্ধান্তের পেছনে মূল কারণ।

এই নিয়ে এপ্রিলের শেষ সপ্তাহ থেকে এ পর্যন্ত তৃতীয়বার পাকিস্তানের আকাশসীমা বন্ধ রাখা হলো। এর পেছনে রয়েছে ভারতের ‘অপারেশন সিন্ধুর’ আওতায় পাকিস্তানের তিনটি সামরিক ঘাঁটিতে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা এবং পাকিস্তানের পাল্টা অভিযান ‘অপারেশন বুনিয়ানুন মারসুস’। পাকিস্তান জানিয়েছে, ভারতের হামলায় বেসামরিক বিমান চলাচলের ঝুঁকি বেড়েছিল, তাই এই কঠোর পদক্ষেপ।

যেভাবে প্রভাব পড়ছে আন্তর্জাতিক ফ্লাইটে:

এই নিষেধাজ্ঞার ফলে পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্স (পিআইএ) ইতিমধ্যে ১৫০টির বেশি ফ্লাইট বাতিল করেছে। যাত্রীদের উদ্দেশে জানানো হয়েছে, যাত্রার আগে ফ্লাইট স্ট্যাটাস যাচাই না করে বিমানবন্দরে না যাওয়াই উত্তম।

এছাড়া আন্তর্জাতিক বিমান সংস্থাগুলোর উপরও এর প্রভাব পড়েছে। এমিরেটস, সিঙ্গাপুর এয়ারলাইনস এবং কেএলএমসহ একাধিক কোম্পানি পাকিস্তানের আকাশসীমা এড়িয়ে এখন আরব সাগর হয়ে দক্ষিণ পথ বেছে নিচ্ছে, ফলে যাত্রাপথে গড়ে দুই ঘণ্টা সময় বাড়ছে এবং খরচও বাড়ছে লক্ষ লক্ষ ডলার।

ভারতে পাল্টা পদক্ষেপ:

এদিকে, ভারতের তরফেও পাল্টা নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। ৯ মে থেকে ১৪ মে পর্যন্ত উত্তর ও পশ্চিম ভারতের ৩২টি বিমানবন্দর বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ শ্রীনগর ও অমৃতসর বিমানবন্দর।

অর্থনৈতিক ক্ষতি ও যাত্রীদের দুর্ভোগ:

আকাশপথ বন্ধ থাকায় শুধু ভারতীয় বিমান সংস্থাগুলোর অতিরিক্ত খরচ গত বছরই ছিল প্রায় ৬ কোটি ডলার। চলমান নিষেধাজ্ঞা দীর্ঘায়িত হলে এই সংখ্যা আরও বাড়বে বলে মনে করা হচ্ছে।

পাকিস্তানের লাহোর ও ইসলামাবাদ বিমানবন্দরে শত শত যাত্রী আটকে পড়েছেন। একদিকে ফ্লাইট বাতিল, অন্যদিকে রিফান্ড ও পুনঃবুকিং নিয়ে বিপাকে পড়েছেন অনেকে। বিভিন্ন এয়ারলাইনসের কাস্টমার সার্ভিস সেন্টারে লম্বা লাইনে দাঁড়িয়ে থাকতে হচ্ছে যাত্রীদের।

নিরাপত্তার অজুহাতে দীর্ঘমেয়াদি সমস্যা?

পাকিস্তানের সিভিল অ্যাভিয়েশন কর্তৃপক্ষ বলেছে, “সংঘর্ষ প্রবণ অঞ্চলে বেসামরিক ফ্লাইট যেন ভুলক্রমে সামরিক জোনে ঢুকে না পড়ে—সেই নিশ্চয়তা দিতেই আকাশপথ বন্ধ রাখা জরুরি।” তবে বিশ্লেষকরা বলছেন, এভাবে বারবার আকাশপথ বন্ধ হওয়া দক্ষিণ এশিয়ার বিমান যোগাযোগ ও বাণিজ্যের ওপর দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব ফেলবে।