Home Third Lead ইসরায়েলি বাহিনীর হাতে শহিদুল আলমের আটক হওয়ার দাবি মিথ্যা প্রমাণিত

ইসরায়েলি বাহিনীর হাতে শহিদুল আলমের আটক হওয়ার দাবি মিথ্যা প্রমাণিত

আলোকচিত্রী শহিদুল আলম
বিজনেসটুডে২৪ প্রতিনিধি, ঢাকা: গাজা অভিমুখী নৌবহর ‘কনশানস’ থেকে আটক হওয়ার বার্তা দেওয়ার পর বাংলাদেশি আলোকচিত্রী শহিদুল আলমকে ইসরায়েলি বাহিনীর হাতে আটক অবস্থায় দেখানো একটি ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। কিন্তু অনুসন্ধানে জানা গেছে, ছবিটি বাস্তব নয়— এটি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা এআই প্রযুক্তি দিয়ে তৈরি।

তথ্য যাচাইকারী সংস্থা রিউমর স্ক্যানার জানিয়েছে, ভাইরাল ছবিটির কোনো উৎস বা প্রমাণিত প্রকাশনা নেই। ছবিতে দেখা যায়, শহিদুল আলমকে ‘আবু সাঈদের ছবি আঁকা টি-শার্ট’ পরিহিত অবস্থায় কয়েকজন ইসরায়েলি সৈন্য সমুদ্রতটে আটক করছে। তবে একাধিক এআই-জনিত অসঙ্গতি ও দৃশ্যমান বিকৃতি শনাক্ত করা হয়েছে ছবিটিতে।

রিউমর স্ক্যানারের বিশ্লেষণে দেখা যায়—

  • সৈন্যদের মুখাবয়ব, উচ্চতা ও দেহভঙ্গিতে একরকম পুনরাবৃত্তি রয়েছে, যা জেনারেটিভ এআই-এর সাধারণ বৈশিষ্ট্য।
  • ছবির পটভূমি ও ছায়ার দিক বাস্তব আলো-ছায়ার সঙ্গে অসঙ্গত।
  • শহিদুল আলমের পোশাকের ধরনও সন্দেহজনক— তিনি ৪ অক্টোবর নিজের ফেসবুকে যে ছবি প্রকাশ করেন, তাতে কালো পাঞ্জাবি পরিহিত ছিলেন, কিন্তু ভাইরাল ছবিতে দেখা যায় টি-শার্ট, যা সাধারণত এআই সম্পাদনার ফল।

এআই শনাক্তকরণ টুল Hive Moderation–এ পরীক্ষায়ও ছবিটি এআই-নির্মিত হওয়ার সম্ভাবনা ৯৭ শতাংশ দেখায়।

এদিকে, ফ্রিডম ফ্লোটিলা কোয়ালিশন— যাদের উদ্যোগে ‘কনশানস’ বহর গাজা যাচ্ছিল— তাদের অফিসিয়াল এক্স (X) অ্যাকাউন্ট বা ইউটিউব চ্যানেলে এমন কোনো ছবি প্রকাশ করা হয়নি। বরং তারা আটক যাত্রীদের পূর্বে ধারণ করা ভিডিও বার্তাগুলো প্রচার করছে।

ইসরায়েলের সংবাদমাধ্যম টাইমস অব ইসরায়েল জানায়, দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় নিশ্চিত করেছে যে, গাজা অভিমুখী বহরটি আটক করে আশদোদ বন্দরে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। তাদের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, “সব যাত্রী নিরাপদে আছেন এবং দ্রুত সময়ের মধ্যে নিজ নিজ দেশে পাঠিয়ে দেওয়া হবে।” তবে মন্ত্রণালয় বা ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যম কেউই ভাইরাল ছবিটির কোনো উল্লেখ করেনি।

সবমিলিয়ে, এআই দ্বারা তৈরি ওই ছবিকে ব্যবহার করে শহিদুল আলমের আটক হওয়ার দাবি করা সম্পূর্ণ বিভ্রান্তিকর বলে প্রমাণিত হয়েছে।