Home Second Lead আল-আরাফাহ ব্যাংকের ৫৪৭ বরখাস্তকৃত কর্মীর প্রতিবাদ ঘিরে সহিংসতা

আল-আরাফাহ ব্যাংকের ৫৪৭ বরখাস্তকৃত কর্মীর প্রতিবাদ ঘিরে সহিংসতা

বিজনেসটুডে২৪ প্রতিনিধি, ঢাকা: ঢাকার দৈনিক বাংলা মোড়ে আল-আরাফাহ ইসলামী ব্যাংকের বরখাস্ত কর্মীদের সঙ্গে নিরাপত্তাকর্মীদের সংঘর্ষে মানবসম্পদ বিভাগের প্রধানসহ অন্তত ২০ জন আহত হয়েছেন। বৃহস্পতিবার বিকেল সোয়া ৪টার দিকে এই সহিংসতা ঘটে। ঘটনাস্থলে একাধিক পুলিশ সদস্য উপস্থিত হয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।

আহতদের মধ্যে গুরুতর অবস্থায় নিরাপত্তারক্ষী শাহীনুর ও মানবসম্পদ (এইচআর) প্রধান আমীর হোসেনকে যথাক্রমে ঢাকা মেডিকেল কলেজ ও স্কয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এছাড়া ব্যাংকের তিনজন উপব্যবস্থাপনা পরিচালকের (ডিএমডি) উপর হামলার চেষ্টা হলে পুলিশ তাদের উদ্ধার করে।

আহত অন্যান্য নিরাপত্তাকর্মীদের মধ্যে রয়েছেন লিটন, ইলিয়াস, ফাহিম, রকি হোসেন, তোফায়েল, নূর আলম, আরিফ, জাকির হোসেন, সাগর, লুৎফর, ফারুক ও সোহেল। অপরদিকে বরখাস্ত কর্মীদের পক্ষে আহত হয়েছেন নুরুল আকিব, আরিফা খাতুন, মুক্তা আক্তার, নাঈমুদ্দিন ও রেজাউল করিম। তারা ঢাকা মেডিকেলে চিকিৎসা নিয়েছেন।

৫৪৭ জন বরখাস্ত, ক্ষোভে বিক্ষোভ

বরখাস্ত হওয়া কর্মীদের পক্ষের নেতা জুবায়ের বিন রশিদ জানিয়েছেন, ২০ জুলাই ব্যাংক কর্তৃপক্ষ সারা দেশে একযোগে ৫৪৭ জন কর্মীকে বরখাস্ত করে। এরপর ২২ জুলাই থেকে রাজধানীর প্রধান কার্যালয়ের সামনে চাকরি পুনর্বহালের দাবিতে টানা অবস্থান কর্মসূচি চলছে। জুবায়েরের দাবি, তাদের শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে ব্যাংকের পক্ষ থেকেই হামলা চালানো হয়।

পল্টন থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মনিরুজ্জামান বলেন, দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে, তবে এখন পর্যন্ত কাউকে গ্রেপ্তার করা হয়নি।

নিয়োগ অনিয়ম তদন্তে ব্যাকড্রপ

আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর বাংলাদেশ ব্যাংকসহ বিভিন্ন নিয়ন্ত্রক সংস্থা আল-আরাফাহ ইসলামী ব্যাংকের নিয়োগ প্রক্রিয়া পর্যালোচনা শুরু করে। তাতে একাধিক অনিয়ম ধরা পড়ে। এরপর নিয়ন্ত্রক সংস্থার নির্দেশে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ এক হাজার ৪১৪ জন কর্মীর মূল্যায়ন পরীক্ষা নেয়। ব্যাংক কর্মকর্তারা জানান, এদের মধ্যে ৫৪৭ জন উত্তীর্ণ না হওয়ায় তাদের চাকরিচ্যুত করা হয়।

তবে বরখাস্ত কর্মীদের দাবি, তাদের অনেকেই যোগ্যতা থাকা সত্ত্বেও রাজনৈতিক বিবেচনায় বাদ দেওয়া হয়েছে।

অবরোধ ও উত্তেজনা

ব্যাংকের কর্মকর্তাদের ভাষ্য, ২৮ জুলাই সকাল থেকে বরখাস্ত কর্মীরা প্রধান কার্যালয়ের ফটকে জড়ো হয়ে মানববন্ধন শুরু করেন এবং আগ্রাসী আচরণ করতে থাকেন। এরপর টানা আটদিন অফিস ফটকে অবরোধ চলতে থাকে, যা ব্যাংকের স্বাভাবিক কার্যক্রমে বিঘ্ন সৃষ্টি করে।

বৃহস্পতিবারের সহিংসতা পরিস্থিতিকে আরও উত্তপ্ত করে তুলেছে। সংশ্লিষ্ট মহলের ধারণা, এই ঘটনায় আইনি পদক্ষেপ ও রাজনৈতিক প্রতিক্রিয়া আরও প্রকট হতে পারে।