Home সারাদেশ পীরগাছার আশ্রায়ন প্রকল্পে এখন নিঃশব্দ ঘর, কেউ থাকছেনা

পীরগাছার আশ্রায়ন প্রকল্পে এখন নিঃশব্দ ঘর, কেউ থাকছেনা

বিজনেসটুডে২৪ প্রতিনিধি, পীরগাছা ( রংপুর ):  পীরগাছার প্রতিপাল গ্রামের আশ্রায়ন প্রকল্পের ঘরগুলো এখন ভাঙাচোরা, ঝোপঝাড়ে ঢাকা এবং মানুষের বিচরণহীন হয়ে পড়েছে। এক সময়ে পতিত হাসিনা সরকারের উপহারের ঘর হিসেবে পরিচিত এই প্রকল্পের ঘরগুলোতে আর থাকেনা কেউ। দীর্ঘদিন ধরে অভাবনীয় অব্যবস্থাপনা, রাস্তা না থাকা ও জীবিকার অনুপস্থিতি এ অঞ্চলের মানুষদের ফিরে যেতে বাধ্য করেছে।

সরেজমিনে দেখা গেছে, প্রতিটি ঘর তালাবদ্ধ। ঘরগুলোর অনেকের চারপাশ লতাপাতা ও ঝোপঝাড়ে ঢাকা। ঘরগুলোর বারান্দায় খড় ও লাকড়ির স্তুপ দেখা যায়। বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন এবং টিউবওয়েল নেই। নদীর পাড়ে অবস্থিত প্রকল্পটি নদী পুনঃখননের ফলে মারাত্মক ঝুঁকির মুখে পড়েছে।

জানা গেছে, ২০২১-২০২২ অর্থবছরে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের আশ্রায়ন প্রকল্প-২ এর আওতায় তাম্বুলপুর ইউনিয়নের প্রতিপাল গ্রামে বুড়াইল নদীর পাড়ে ভুমিহীন ও গৃহহীন পরিবারের জন্য ২৮টি ঘর নির্মাণ করা হয়েছিল। প্রতিটি ঘরের জন্য বরাদ্দ ছিল ১ লাখ ৭১ হাজার টাকা। মূলত পীরগাছা রেলওয়ে স্টেশন এলাকার অস্থায়ী বাসিন্দাদের এই ঘরগুলো বরাদ্দ দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু বরাদ্দ পাওয়ার পর বছরের মধ্যেই তারা সেখান থেকে চলে গেছেন।

স্থানীয়দের অভিযোগ, প্রকল্পে স্থানীয় ভুমিহীনদের বরাদ্দ না দিয়ে বাইরে থেকে আসা মানুষদের ঘর দেওয়া হয়েছে। যেসব ঘরে যেতে রাস্তা নেই, সেসব ঘরে কেউ থাকার আগ্রহ দেখাননি।

পীরগাছা রেলওয়ে স্টেশনের আশেপাশে দেখা কিছু বাসিন্দা জানান, সেখানে জীবিকার কোনো ব্যবস্থা নেই। অনেকে ভ্যান-রিক্সা চালিয়ে বা ক্ষুদ্র ব্যবসা করে জীবিকা নির্বাহ করেন। তবে রাস্তার অনুপস্থিতি এবং নিম্নমানের নির্মাণের কারণে তারা সেখানে থাকতে পারেননি।

রেলস্টেশনের ভ্রাম্যমান কলা বিক্রেতা প্রকাশ চন্দ্র মোহন্ত বলেন, তার তিন সন্তান স্টেশনের পাশের স্কুলে পড়েন। আশ্রায়ন প্রকল্পের ঘর স্কুল থেকে অনেক দূরে, তাই প্রতিদিন যাতায়াতের খরচ সামলাতে না পেরে তিনি সেখানে থাকেননি।

এই বিষয়ে তাম্বুলপুর ইউপি চেয়ারম্যান বজলুর রশিদ মুকুল জানান, নদীর পাড় বেঁধে প্রকল্পের ঘরে যাওয়ার রাস্তা তৈরির পরিকল্পনা করা হয়েছে। যদি ঘরে কেউ না থাকে, তবে নতুনভাবে ভুমিহীনদের মধ্যে ঘর বরাদ্দ দেওয়ার ব্যবস্থা করা হবে।

পীরগাছা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ মো. রাসেল বলেন, “রাস্তা তৈরি, জীবিকার ব্যবস্থা ও অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করার পর ঘরগুলো যদি ফাঁকা থাকে, তখন সেগুলো নতুনভাবে বরাদ্দ দেওয়া হবে।”